উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় ‘হাত বাড়াও’ শীর্ষক রচনায় যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষে বিপন্ন যে মানুষ দু-পায়ে উঠে দাঁড়ানাের চেষ্টা করছে তাকে সাহায্য করার কথাই বলেছেন।

সাহায্যের স্বরূপ : তীক্ষ্ণ সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণে লেখক বুঝেছিলেন যে, যুদ্ধ আর দুর্ভিক্ষে মানুষের যে বিপন্নতা তা প্রকৃতপক্ষে মানুষেরই সৃষ্টি। বাংলাদেশের নানা প্রান্ত ঘুরে এরকমই অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন লেখক। ফরিদপুর যাওয়ার পথে রাজবাড়ির বাজারে বসে দু-পায়ে হাঁটতে অক্ষম একটি বারাে-তেরাে বছরের মাজা পড়ে যাওয়া কিশােরকে দেখে লেখকের মনে হয়, তার জ্বলন্ত দুটি চোখ যেন শাস্তি চায়। সেই সমস্ত মানুষের যারা শহরে গ্রামেগঞ্জে জীবনের গলায় মৃত্যুর ফাস পরাচ্ছে, মাথা উচু করে জনগণকে বাঁচতে দিচ্ছে না। বাংলার সবুজ মাঠের সােনালি ফসলে, চাষির গােলাভরা ধানে শান্তি আসবে। কারখানায় বন্ধনমুক্ত মানুষের আন্দোলিত হাতের দ্বারা শান্তি আসবে। শােষণমুক্তির সংগ্রামে পাশে দাঁড়ানাের মধ্য দিয়েই এই ‘সাহায্য’ সম্ভব হতে পারে।

সাহায্যের কারণ: লেখকের মতে, মনুষ্যত্বের প্রতিষ্ঠার জন্য এই সাহায্যের প্রয়ােজন। শহরে কিংবা গ্রামে যারা মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে, মাথা উঁচু করে বাঁচতে দিচ্ছে না—তাদের অন্যায়ের অবসান ঘটানাের জন্যই এই সাহায্যের প্রয়ােজন। যুদ্ধ আর অনাহারে মৃত্যু বন্ধ করার জন্য, সুখ এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্যই এই সাহায্যের প্রয়ােজন বলে লেখক মন্তব্য করেছেন।