লেখচিত্র এক ধরনের তথ্য পরিবেশনের কৌশল। শিক্ষামূলক ও মনোবৈজ্ঞানিক তথ্য পরিবেশনের জন্য সংগৃহীত তথ্য সমূহকে গ্রাফ বা লেখচিত্রের মাধ্যমে উপস্থাপিত করা যায়। এই তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে লেখচিত্রের দুই রকম প্রকার দেখা যায় যথা—
- তথ্য পরিবেশক লেখচিত্র,
- তাৎপর্য নির্ণায়ক লেখচিত্র।
আয়তলেখ বা হিস্টোগ্রাম ও পরিসংখ্যা বহুভুজ হল তথ্য পরিবেশক লেখচিত্র।
পরিসংখ্যা বহুভুজ এক ধরনের রৈখিক লেখচিত্র। এখানে ছক কাগজে প্রাপ্ত বিন্দু গুলো পর্যায়ক্রমে রেখার দ্বারা যুক্ত করা হয়। পরিসংখ্যা বহুভুজ আঁকার সময় X অক্ষে শ্রেণির মধ্যবিন্দুকে এবং পরিসংখ্যাকে Y অক্ষে স্থাপন করা হয়।
প্রথম ধাপ: অনুভূমিক অক্ষের এবং উল্লম্ব অক্ষে ধরে উভয়ের ছেদ বিন্দুকে চিহ্নিত করা হয়।
দ্বিতীয় ধাপ : X অক্ষের উপর শ্রেণিসমূহ এবং মধ্যবিন্দু স্থাপন করা হয়। Y অক্ষে প্রাপ্ত পরিসংখ্যাসমূহ স্থাপন করা হয়।
তৃতীয় ধাপ : পরিসংখ্যা বহুভুজ এর দৈর্ঘ্য ও উচ্চতার মধ্যে সমতা রাখার জন্য X ও Y অক্ষের অনুপাত 4:3 রাখা হয় অর্থাৎ X অক্ষে কতগুলো বর্গ একক ঘর নেওয়া হবে তার 3/4 বা 75% ঘর হবে Y অক্ষে।
চতুর্থ ধাপ : মধ্যবিন্দু অঙ্কন করা হয়ে গেলে সমগ্র বণ্টনের নিম্ন স্কোরের দিকে এবং উচ্চ স্কোরের দিকে অতিরিক্ত দুটি শ্রেণি ধরে তাদেরও মধ্যবিন্দু নির্ণয় করা হয়।
পঞ্চম ধাপ : প্রতিটি মধ্য বিন্দুর সাপেক্ষে কাগজে পরিসংখ্যান সমূহকে বিন্দু দ্বারা স্থান নির্বাচন করতে হয়। শেষে প্রাপ্ত বিন্দুগুলোকে সরলরেখার সাহায্যে যুক্ত করা হয়।
ষষ্ঠ ধাপ : সরলরেখায় যুক্ত রেখার প্রান্তদ্বয় X অক্ষে পূর্বে যে অতিরিক্ত শ্রেণির মধ্যবিন্দু অঙ্কন করা হয়েছিল তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। এইভাবে প্রাপ্ত আবদ্ধ ক্ষেত্রটি হল পরিসংখ্যা বহুভুজ। এই বহুভুজের ক্ষেত্রফল দ্বারা মোট প্রাপ্ত তথ্যের পরিমাণ বোঝানো হয়।
আয়তলেখ বা হিস্টোগ্রাম হল অনুভূমিক সরলরেখার উপর অঙ্কিত অবিচ্ছিন্ন স্তম্ভ চিত্র যার প্রতিটির ক্ষেত্রফল সেই শ্রেণি পরিসংখ্যান সঙ্গে সমানুপাতিক।
প্রথম ধাপ: X অক্ষ বরাবর শ্রেণি সমূহ এবং Y অক্ষ বরাবর পরিসংখ্যা স্থাপন করা হয়। ছক কাগজে কিংবা সাদা কাগজে অঙ্কন করা হয়।
দ্বিতীয় ধাপ: X অক্ষে শ্রেণি সীমানাসমূহের উপস্থাপন অবিচ্ছিন্নভাবে হয়।
তৃতীয় ধাপ: প্রতিটি শ্রেণিতে X অক্ষের নিম্নসীমা থেকে Y অক্ষ বরাবর প্রাপ্ত পরিসংখ্যাকে স্কেল অনুযায়ী স্থাপন করতে হয়। এরপর কিভাবে সেই শ্রেণির উচ্চসীমা উপর একই উচ্চতায় পরিসংখ্যা কি দুস্থাপন করে, নিম্নসীমা ও উর্ধ্বসীমা জুড়ে দিয়ে আয়তক্ষেত্র অঙ্কন করা হয়।
এইভাবে অবিচ্ছিন্ন স্তম্ভ লেখচিত্র ও আয়তলেখ অঙ্কনের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যগুলির মধ্যে তুলনা করা সম্ভব, বিশ্লেষণ করা সম্ভব। সামগ্রিক তথ্যের পরিমাণ এই চিত্রে প্রকাশ করা সম্ভব। যেমন শিক্ষার্থীদের পারদর্শিতার তুলনামূলক বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে লেখচিত্রের কার্যকর ভূমিকা দেখা যায়।
Leave a comment