জ্ঞানতাপস ভাষাচার্য ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন শিক্ষাবিদ, গবেষক, ভাষাবিদ, সাহিত্যিক, অভিধান প্রণেতা। তিনি ১৮৮৫ সালের ১০ জুলাই চব্বিশ পরগনার বারাসতের নিকট পিয়ারা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি এ উপমহাদেশের মধ্যে বাংলা, সংস্কৃত ও ভাষাতত্ত্ব গবেষণা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। ১৯০৪ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব বিভাগ খোলা হয়; ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ছিলেন তখন সেই বিভাগের ছাত্র। তিনি বৌদ্ধতান্ত্রিক কাহ্নপাদ ও সরহপাদের মরমিয়া সাধনগীতি সম্বন্ধে গবেষণা করে ডি. লিট ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া তিনি ধ্বনিবিজ্ঞানে ডিপ্লোমা ডিগ্রিও লাভ করেন।
ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ প্রথমে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা ও সংস্কৃত বিভাগের অধ্যক্ষ হন। ভাষা বিষয়ে রচিত বিভিন্ন প্রবন্ধাবলিতে তার ভাষা জ্ঞান সম্পর্কে জানা যায়। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের Journal of the Department of Letters এ ১৯২০ সালে Outline of a Historical Grammar of the Bengali Language নামে বাংলা ভাষার ঐতিহাসিক ব্যাকরণ বিষয়ে তার প্রবন্ধ প্রকাশ করেন। ভাষা ও সাহিত্য সম্পর্কিত তাঁর গ্রন্থাবলি হলো ‘ভাষা ও সাহিত্য’ (১৯৩১), বাঙ্গালা ব্যাকরণ (১৯৩৫), বাঙ্গালা ভাষার ইতিবৃত্ত (১৯৬৫)। বাংলা সাহিত্যের কথা, বিদ্যাপতি শতক, পদ্মাবতী, রুবাইয়াতে-ই, ওমর খৈয়াম, দিওয়ান-ই-হাফিজ, শিকওয়াহ ও জওয়াব-ই-শিকওয়াহ, কুরআন প্রভৃতি বহু পুস্তক বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছে ও ইংরেজিতে Buddhist Mystic Songs, Traditional Culture in E. Pakistan, Pearls from the Holy Prophet তার রচিত পুস্তক। ঢাকা সংস্কৃত পরিষদে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে বিদ্যাবানসম্মতি উপাধি দেয়।
সুতরাং বলা যায়, বহুভাষাবিদ ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে বিশেষ অবদান রেখেছেন। সেদিক থেকে তার এ অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment