প্রশ্নঃ ডেকার্টকে আধুনিক দর্শনের জনক বলা হয় কেন?

অথবা, ডেকার্ট কী আধুনিক দর্শনের জনক? ব্যাখ্যা কর।

অথবা, ডেকার্টকে কেন আধুনিক দর্শনের অগ্রপথিক বলা হয়?

ভূমিকাঃ জ্ঞানবিদ্যা দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা। প্রাচীন ও মধ্যযুগের দার্শনিকদের চিন্তা-ভাবনায় জ্ঞানবিদ্যা বিশেষ স্থান দখল করে আছে। কেননা, দর্শনের কাজ হলাে যুক্তির মাধ্যমে সত্যকে জানা। কিন্তু এ সত্যকে জানার জন্য অন্যতম হলাে জ্ঞান। আধুনিককালে এই জ্ঞানবিদ্যার ওপর ভর করেই দর্শনের অগ্রগতি সাধিত হয়েছে।

আধুনিক দর্শনের জনকঃ ফরাসি দার্শনিক রেনে ডেকার্টকে আধুনিক দর্শনের জনক বলা হয়। জনক শব্দটি ইংরেজি প্রতিশব্দ ‘Father’। এটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার হয়। কোনাে বিষয়ের জনক বলতে যা বােঝায়, তাতে মােট দু’টি দিক অনুসরণ করা হয়।

প্রথমতঃ কোনাে বিষয়ের প্রথম উদ্যোক্তা। অর্থাৎ যে বিষয়টি পূর্বে আলােচিত হয়নি এমন কোনাে বিষয়কে প্রাথমিকভাবে সূচনা করা।

দ্বিতীয়তঃ কোনাে বিষয়কে সুদৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত করা।

ডেকার্টকে আধুনিক দর্শনের জনক বলার ক্ষেত্রে নিম্নোক্ত কারণগুলাে উল্লেখযােগ্যঃ

(১) প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা দার্শনিক সমস্যাগুলাের সব দিকই ডেকার্টের দর্শনে আলােচিত হয়।

(২) আধুনিক দর্শনের মূল বৈশিষ্ট্যসমূহের প্রায় সবই ডেকার্টের দর্শনে আলােচিত হয়।

(৩) ডেকার্টের পরবর্তী আধুনিক দর্শনে যে সমস্যাবলি নিয়ে আলােচনা করা হয়েছে, আমরা তাতে ডেকার্টের প্রভাব দেখতে পাই।

(৪) ডেকার্টের দর্শন ছিল মৌলিকতা। তিনি দার্শনিক আলােচনার ক্ষেত্রে যে সংশয় পদ্ধতির অনুমােদন করেছিলেন। দর্শনের ইতিহাস তা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করেছে।

পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, ডেকার্ট মধ্যযুগের দর্শনের প্রতিবাদ করে নতুন ওযুক্তির আলােকে একটি মৌলিক দার্শনিক মতবাদ দেন। ডেকার্টের দর্শনের ওপর ভিত্তি করেই দর্শনের ক্রমবিকাশ আধুনিক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা পায়। তাই অন্য কেউ নয়, কেবল মাত্র ডেকার্টকে আধুনিক দর্শনের জনক বলা হয়।