‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পে সৌখীর মায়ের সবসময়ই তার ছেলেকে নিয়ে একপ্রকার উচ্চ ধারণা ছিল। যেমন সৌখীর নামে না কি চৌকিদারসাহেব কাপেন বা দারােগাসাহেব পর্যন্ত তাকে তুইতােকারি করতে ভরসা পায় না—এমনই আভিজাত্য সৌখীর।

সৌখীর মায়ের মাতৃত্বের আরও পরিচয় লক্ষ করা যায় সৌখীর ফিরে আসার সময়ে। বাড়ি ফেরার পর তার প্রথম প্রশ্ন “জেলে তাের অসুখ-বিসুখ করেছিল নাকি?-স্পষ্টই মাতৃক্নেহাতুরা এক উদ্বিগ্ন মায়ের কণ্ঠস্বর। এই স্নেহের কারণেই সামান্য আলােতেই এরপর সে লক্ষ করে সৌখীর চুলে পাক ধরেছে বা সে একটু রােগা হয়ে গেছে। সেইসময় সে কিন্তু কিছুতেই তার নাতিবউমার বেয়াইবাড়িতে থাকার খবর সৌখীকে দিতে চায় না ছেলেকে কাছছাড়া করবার ভয়ে। ছেলে ফিরে আসার পরেই সে ছেলেকে তার ব্যাবসার পুঁজি খইমুড়ি খাবার হিসেবে দেয় এবং মনে মনে হিসেব করতে থাকে কীভাবে পরের দিন ছেলেকে সে তার প্রিয় পদ ভাত আর আলুচচ্চড়ি রান্না করে খাওয়াবে। তাই তার নিজের একটি সামান্য ভুলে জেল থেকে পাঁচ বছর পরে ফিরে আসা ছেলে যখন বউ-ছেলের মুখ না দেখেই থানায় যেতে বাধ্য হয়, তখন তার মাতৃহৃদয় শােকে-দুঃখে খানখান হয়ে যায়।

ডাকাতের মা গল্পে দেখা যায়, জেলফেরত ছেলের প্রিয় পদ ভাত ও আলুচচ্চড়ি রান্না করার জন্য প্রয়ােজনীয় চাল, আলু, সরষের তেল কেনার পয়সা না থাকার দুশ্চিন্তা রাতে সৌখীর মার ঘুম কেড়ে নেয়। এমন সময় তার মনে পড়ে যে, পাড়ার পেশকারসাহেবের বাড়িতে রাজমিস্ত্রির কাজ হচ্ছে। তাদের ভেঙে-পড়া পাঁচিলটা আবার গাঁথা হচ্ছে। একথা ভেবে বুড়ি সেবাড়িতে চুরি করার উদ্দেশ্যে গিয়ে দেখে যে, পেশকার সাহেবের বাড়ির পাঁচিল দু-আড়াই হাত পর্যন্ত সবে গাঁথা হয়েছে। সেই অর্ধসমাপ্ত পাঁচিলের পাশে মাটি আর ভাঙা ইট বেছানাে থাকায় বুড়ি সহজেই সেই পাঁচিল টপকে মাতাদীন পেশকারের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। মাঝরাতের অন্ধকারে নিস্তব্ধ সেবাড়ির সামনে কী আছে—তা প্রথমে কিছুই দেখতে পায় না সে। ভালাে করে অনুধাবন করে অবশেষে সে দেখে বারান্দায় দরজার মুখে সাজিয়ে রাখা হয়েছে একটি জলভরা ঘটি এবং পেশকারসাহেবের খড়ম দুটি। জলভরা ঘটিটি নিঃশব্দে তুলে নিয়ে সে পাঁচিল টপকে বাইরে বেরিয়ে আসে। ঘটির জলটুকুও সে ফেলেনি। কারণ মাঝরাতে জলভরা লােটা হাতে দেখলেও কেউ তাকে কোনােমতেই চোর বলে সন্দেহ করবে না। সকাল হলে বাসনের দোকানে গিয়ে সেই ঘটিটা নগদ চোদ্দো আনা পয়সায় বিক্রি করে দেয়। এভাবেই সৌখীর মা লােটা চুরি করেছিল।

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পে সৌখীর মা মাতাদীন পেশকারের বাড়ির বারান্দা থেকে তাঁর লােটা চুরি করে। পরদিন ভােরে ঘুম থেকে উঠে লােটাটি দেখতে না পেয়ে হই-হট্টগােল বাঁধিয়ে দেন মাতাদীন পেশকার। লােটা চুরির ঘটনাটি পুলিশকে জানিয়ে ফেরার পথে তিনি যান বাসনের দোকানে। সেখানে বাসনওয়ালার দেখানাে কোনাে লােটাই পছন্দ হল না খুঁতখুতে মাতাদীনের। হতাশ বাসনওয়ালা এরপর তাঁকে পুরােনাে একটি লােটা দেখালে সেটি দেখেই তার সন্দেহ জাগে। লােটাটি ভালাে করে পর্যবেক্ষণ করে পেশকার মহাশয় নিশ্চিত হন যে, এই লােটাটিই তাঁর চুরি যাওয়া লােটা। উত্তেজিত পেশকারসাহের দোকানদারের টুটি চেপে ধরে জেনে নেন যে, কিছুক্ষণ আগেই সে সৌখীর মার কাছ থেকেই নগদ চোদ্দো আনা পয়সায় এই ব্যবহৃত লােটাটি কিনেছে। থানায় তিনি খবরটা দিলে দারােগাবাবু সেখানে এসে উপস্থিত হন। এরপর বাসনওয়ালা এবং পেশকারসাহেব-সহ পুলিশকে বাড়িতে ঢুকতে দেখে ভয়ে সৌখীর মা বাদ্ধ হয়ে যায়। ছিচকে চুরির দায়ে ধরা পড়ে ডাকাত সর্দারের মা লজ্জায় তাই কোনাে কথা বলতে পারে না। দারােগাসাহেব চুরির ব্যাপার জিজ্ঞাসা করলে সে ছেলের দিকে একবার তাকিয়ে মাথা নীচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। সৌখী মাকে বাঁচাতে চুরির দায় নিজের ঘাড়ে নিলে দারােগাসাহেব তাকেই চোর ভেবে থানায় নিয়ে যান।

সতীনাথ ভাদুড়ীর ডাকাতের মা ছােটোগল্পে দেখা যায়, সৌখীর মা শীতের রাতে একা একা শুয়ে ভাবছিল যে, সময়টা আর আগের মতাে নেই। সৌখীর বাবার আমলের এক ডাকাত যখন আহত অবস্থায় ধরা পড়ে, তখন সে নিজের হাতেই তার জিভটা কেটে ফেলে—যাতে তাদের দলের গােপন কথা তার মুখ দিয়ে না বেরিয়ে যায়। ছেলে সৌখীর কিন্তু তেমন অনুচর-ভাগ্য নেই। পাঁচ বছর আগে শেষবার জেলে যাওয়ার পর তার অনুচরেরা প্রথম দুবছর সৌখীর মাকে টাকা দিয়ে গেলেও তারপর আর কোনাে খোঁজও নেয়নি।

সৌখীর নিঃসন্তান প্রথম স্ত্রীর শরীর-স্বাস্থ্য ভালাে ছিল, কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীর স্বাস্থ্য ভালাে নয়- ‘সৌখীর এবারকার বউটা রােগা-রােগা।’ ছেলে হওয়ার পর তাে একেবারেই ভেঙে গেছে। তার শরীর। যার বাবার নামে চৌকিদারসাহেব কাঁপে, দারােগাসাহেবও যার বাবার সঙ্গে কখনও তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে কথা বলেন নাসেই ছেলেরই কিনা দু-বেলা অন্ন জোটে না। ছেলের মা তার রুগণ শরীরের জন্য পরিশ্রম করে ছেলের মুখে অন্ন জোগাতে অক্ষম। সৌখীর মা তাই খই ও মুড়ি ভেজে বাড়ি বাড়ি বিক্রি করে যৎসামান্য আয় করে। কিন্তু তাতে একজনের পেট চালানােই মুশকিল। তা ছাড়া জাতে গােয়ালা বলে ডাকাত সর্দারের মা তাে ঝিয়ের কাজও করতে পারে না, আর করতে চাইলেও কে তাকে বিশ্বাস করে এই কাজ দেবে? বছরখানেক পর সৌখী এলে তাদের সুদিন আসবে। তখন সৌখীকে বলে তার দলের বদলােকগুলােকে সে শায়েস্তা করবে। এসবই ভাবছিল সৌখীর মা।

“খানিক আগের ঘটনাটা আপনার কাছে অবাস্তব বলে মনে হবে।” -কোন ঘটনার কথা এখানে বলা হয়েছে?

“খাওয়া শেষ করে আপনারা তখন একটু বিশ্রাম করতে পারেন”—কোথায়, কীভাবে তারা খাওয়া শেষ করেছিলেন?

ব্যাপারটা কী এবার আপনারা হয়তাে জানতে চাইবেন- কোন্ ব্যাপার অতঃপর গল্পকথক জানতে পেরেছিলেন?

“হূ, এতাে বড়াে মুস্কিল দেখছি”—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তা কাকে মুস্কিল’ বলে অভিহিত করেছেন লেখাে।

তেলেনাপােতা আবিষ্কার গল্পে কোন্ পরিপ্রেক্ষিতে গল্পকথক যামিনীকে বিয়ে করার ব্যাপারে তার মাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন?

“আপনাকে কৌতুহলী হয়ে যামিনীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করতেই হবে” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে উদ্দিষ্ট ব্যক্তির এমনটা করার কারণ লেখাে।

“আপনাকে কৌতুহলী হয়ে যামিনীর পরিচয় জিজ্ঞাসা করতেই হবে” -যামিনী সম্পর্কে কোন কোন তথ্য গল্পকথক অবগত হয়েছিলেন?

“আপনাদের পদশব্দ শুনে সেই কঙ্কালের মধ্যেও যেন চাঞ্চল্য দেখা দেবে” -সেই কঙ্কালের মধ্যেও চাঞ্চল্য দেখা দেওয়ার কারণ প্রসঙ্গ-সহ লেখাে।

“পুকুরের ঘাটের নির্জনতা আর ভঙ্গ হবে না তারপর।” -পুকুরের ঘাটের নির্জন প্রাকৃতিক পরিবেশের বর্ণনা দাও।

“পুকুরের ঘাটের নির্জনতা আর ভঙ্গ হবে না তারপর।” -‘পুকুরের ঘাটের’ নির্জনতা ইতিপূর্বে কীভাবে ভঙ্গ হয়েছিল তা লেখাে।

“এই জনহীন ঘুমের দেশে সত্যি ওরকম মেয়ে কোথাও আছে আপনি বিশ্বাস করতে পারবেন না।”—ওরকম মেয়ে দেখে বিশ্বাস করতে না পারার কারণ কী?

“ব্যাপারটা কী এবার হয়তাে জানতে চাইবেন।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে।

তেলেনাপােতা ত্যাগ করার পর থেকে কীভাবে তেলেনাপােতা এবং যামিনীর স্মৃতি গল্পকথকের মন থেকে ক্রমশ মলিন হয়ে যায় তা তেলেনাপোতা আবিষ্কার গল্প অবলম্বনে লেখাে।

তেলেনাপােতা যাওয়াকে লেখক ‘আবিষ্কার’ বলেছেন কেন?

“মনে হবে তেলেনাপােতা বলৈ কোথায় কিছু সত্যি নেই” -এ কথা কার মনে হবে? এই মনে হওয়ার কারণ কী?

তেলেনাপােতা আবিষ্কার গল্পটির নামকরণ কতটা সার্থক আলােচনা করাে।

“আপনার আসল উদ্দেশ্য আপনি নিশ্চয় বিস্মৃত হবেন না।” -আসল উদ্দেশ্য কোনটি? সেই উদ্দেশ্য সাধনে উদ্দিষ্ট ব্যক্তি কী করলেন?

ছােটোগল্প হিসেবে ‘ডাকাতের মা’ কতটা সার্থক আলােচনা করাে।

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের মূল চরিত্র কে—সৌখী না তার মা?

ডাকাতের মা গল্পে একটি ডাকাত পরিবারের কথা যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আলােচনা করাে।

ডাকাতের মা গল্পে ন্যায়-অন্যায় বােধ যেভাবে আবর্তিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লেখাে।

ডাকাতের মা ছােটোগল্প অবলম্বনে ডাকাত-সর্দার সৌখীর চরিত্র আলােচনা করাে।

‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করা থেকে শুরু করে ঘরে ঢােকা অবধি সময়কালের বিস্তৃত বর্ণনা দাও।

শেষবার সৌথী জেলে যাবার পর তার পরিবার কীভাবে পাঁচ বছর অতিবাহিত করেছিল তা ডাকাতের মা’ গল্প অবলম্বনে লেখাে।

ডাকাতের মা ছছাটোগল্প অবলম্বনে সৌখীর মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।

ডাকাতের মা ছোটগল্প অবলম্বনে মাতাদীন পেশকারের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে দারােগাবাবুর চরিত্র বর্ণনা করাে।