অথবা, জ্ঞানবিদ্যা কাকে বলে।
অথবা, জ্ঞান কী?
ভূমিকাঃ আধুনিক দর্শন জ্ঞানতাত্ত্বিক দর্শন। যথার্থভাবে দর্শন আলােচনা করতে হলে জ্ঞানবিদ্যার আলােচনা প্রয়ােজন। জ্ঞানবিদ্যার আলােচনাই দর্শন আলােচনার মূল। কাজেই জ্ঞানবিদ্যাকে দর্শনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশরূপে দেখা হয়।
শব্দগত অর্থে জ্ঞানবিদ্যাঃ জ্ঞানবিদ্যার ইংরেজি প্রতিশব্দ Epistemology কথাটি এসেছে গ্রিক Episteme ও Logos শব্দ দুটি থেকে। গ্রিক ভাষায় Episteme অর্থ জ্ঞান এবং Logos অর্থ বিজ্ঞান। সুতরাং Epistemology কথাটির অর্থ দাঁড়ায় জ্ঞানসম্পর্কিত বিজ্ঞান বা জ্ঞানবিদ্যা।
সাধারণ অর্থেঃ সাধারণ অর্থে জ্ঞানের বিদ্যাকে জ্ঞানবিদ্যা বলে।
ব্যাপক অর্থে জ্ঞানবিদ্যাঃ ব্যাপক অর্থে জ্ঞানবিদ্যা হলাে দর্শনের যে শাখায় জ্ঞানের উৎস, সীমা, স্বরূপ, বৈধতা ও সম্ভাবনা নিয়ে আলােচনা করা হয়।
জ্ঞানবিদ্যার আলােচনার উদ্দেশ্য হচ্ছে জগৎ ও জীবন সম্পর্কে একটা সামগ্রিক জ্ঞান অর্জন। কেননা জ্ঞানের স্বরূপ সম্পর্কে অবহিত না হলে তত্ত্বালােচনা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সে কারণেই তত্ত্বালােনার আগে জ্ঞানবিদ্যার আলােচনা প্রয়ােজন। সুতরাং জ্ঞানবিদ্যা দর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শাখা।
দর্শনের যে শাখা জ্ঞানের উৎপত্তি, স্বরূপ, শর্ত, বৈধতা, সম্ভাবনা, সীমা প্রভৃতি নিয়ে আলােচনা করে তাকে জ্ঞানবিদ্যা বলা হয়। দর্শন শাস্ত্রে জ্ঞানবিদ্যার আলােচনা অপরিহার্য। কারণ জ্ঞানের উৎপত্তি কিভাবে হয় এবং যথার্থ জ্ঞানের শর্ত কি এগুলাে আগে না জেনে তত্ত্বালােচনা করার কোন সার্থকতা নেই। জ্ঞানবিদ্যা সম্পর্কিত আগের এ সকল প্রশ্নের আলােচনা ব্যতীত যথার্থ জ্ঞান পাওয়া জটিল কাজ।
এ প্রসঙ্গে দার্শনিক কেয়ার্ড বলেন, “আগে থেকে যদি জ্ঞান অর্জনের প্রণালীর বিচার না করি তাহলে আমরা কি বলতে পারি যে কোন একটি বিশেষ ক্ষেত্রে আমরা নিষিদ্ধ স্থানে প্রবেশ করছি না।
আবার ব্রিটিশ দার্শনিক জন লক এবং জার্মান দার্শনিক কান্ট জ্ঞানবিদ্যার ওপর অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছেন।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায়, জ্ঞানতত্ত্ব বা ধীবিদ্যাদর্শনের একটি প্রধান অঙ্গ। তাই দর্শনের ইতিহাসে জ্ঞানবিদ্যার গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
Leave a comment