জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন এ সম্পর্কে আমাদের জানা উচিত। কারণ আমরা যদি জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন এ সম্পর্কে সঠিকভাবে না জানি তাহলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মকেও জানাতে পারব না। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন এ সম্পর্কে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি।
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জাতীয় চার ৪ নেতাকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আর জেলখানায় হত্যা করা হয় বলে এই দিবসকে জেল হত্যা দিবস বলা হয়। নিচে জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
জেল হত্যা দিবস কবে
১৯৭৫ সালে তিন ৩ নভেম্বর আওয়ামী লীগের চার নেতাকে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে ভোর চারটা থেকে চারটা ত্রিশ মিনিটের মধ্যে হত্যা করা হয়। আর এই জাতীয় চার নেতাকে জেলে হত্যা করা হয় বলে একে জেল হত্যা দিবস বলা হয়। আর এই হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছিল ভোর চারটা থেকে চারটা তিরিশ মিনিট এর মধ্যে। এই চার নেতা ছিলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কান্ডারী। আর এই জাতীয় চার নেতা হলেন –
- সৈয়দ নজরুল ইসলাম
- মোহাম্মদ মনসুর আলী
- তাজ উদ্দিন আহমেদ
- আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়। হত্যাকাণ্ডের ৪৮ তম বছর পার হলেও আজও বাঙালি জাতি সেই দিনটিকে জাতীয় চার নেতার স্মরণে গভীর ভাবে স্মরণ করে। জাতীয় এই চার নেতাকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢুকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার সপরিবারে হত্যার পর জাতীয় চার নেতাকে কারাগারে হত্যা করা বাঙালি জাতির জন্য একটি কলঙ্কিত অধ্যায়।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত – রচনা (৬ – ১২ সকল শ্রণীর জন্য)
আর এই হত্যা ছিল অন্যতম বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড আর এই হত্যাকাণ্ডে বাঙালির জন্য কলঙ্কিত একটি কালো অধ্যায়। সারা বাংলা দেশের লোকসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী ও অন্যান্য রাজনৈতিক দল এই শোকাবহ দিনটিকে পালন করে থাকে। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এই চার নেতার মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ ও এস এম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়।
প্রতিবছর ১৯৭৫ সালের তিন ৩ নভেম্বর ঘটে যাওয়া এই হত্যাকাণ্ডকে স্মরণে ঢাকা বনানী কবরস্থানে গিয়ে গভীরভাবে তাদের স্মরণ করা হয়। আর এই এ এইচ এম কামরুজ্জামানের কবর রাজশাহীতে হওয়ার কারণে রাজশাহীতে ও তাঁকে স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
জাতীয় এই চার নেতাকে/জেল হত্যার পরিকল্পনা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সবচেয়ে ঘৃণিত ব্যক্তি ছিলেন তৎকালীন স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি খন্দকার মোস্তাক আহমেদ এবং এর সাথে ছিল আরো দুইজন এরা হলো ক্যাপ্টেন সৈয়দ ফারুক রহমান, কর্নেল খন্দকার আব্দুর রশিদ। আর এই দুইজন ছিল বহিষ্কৃত আর্মি অফিসার। আর তাদের ঘৃণিত হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো তাদের বিশ্বাসঘাতকতা। এরা তিনজন মিলে ১৯৭৫ সালের তিন ৩ নভেম্বর জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পরিকল্পনা করে। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
বহিস্কৃত কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান এর সবচেয়ে আস্থাভাজন রিসালদার মসলে উদ্দিনকে দলের প্রধান করে ঘাতক দল আগে থেকে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল গঠন করেছিল। রিসালদার মসলে উদ্দিন নেতৃত্ব দিয়ে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করে। এছাড়া ও রিসালদার সালেহ উদ্দিন ১৯৭৫ সালে ১৫ই আগস্ট মনির বাসভবনে ঘাতক দল যে হত্যাযজ্ঞ চালায় তারও নেতৃত্ব দিয়েছিল।
“বাংলাদেশ অ্যা লিগ্যাসি অব ব্লাড” গ্রন্থে প্রখ্যাত সাংবাদিক এন্টোমি মাসকারেন হাম হত্যা কাণ্ডের বিষয়ে বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তিনি তার গ্রন্থে উল্লেখ করেন ১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পরে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়। আর এই হত্যাযোগ্য চালানোর জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি ঘাতক দল গঠন করা হয়। আর তারা এই দলটি এমনভাবে গঠন করেছিল যে হত্যাকাণ্ড চালানোর পরে কোন অভ্যুত্থান ঘটলে যেন তা আপনা আপনি কার্যকর করতে পারে।
জেল হত্যা / জাতীয় চার নেতাকে হত্যা
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে এই কেন্দ্রীয় চার নেতা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। এই মহান চার নেতাকে ১৯৫ সালের তিন ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্র কারাগারে নৃশংস । আমারভাবে হত্যা করা হয়।দেশ স্বাধীন হওয়ার পর দেশকে নেতৃত্ব শুন্য করার উদ্দেশ্যেই প্রথমে অর্থাৎ ১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হয় এবং পরে মাত্র ২ মাস ১৭ দিন পর অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।
১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর রাত দেড়টা থেকে দুইটার মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে একটি আর্মির পিকআপ এসে থামে আর এই গাড়িতে ছিল কয়েকজন আর্মি অফিসার। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ঢাকা ছিল অস্থির নগরী আর সে সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যেও বিরাজ করছিল অভ্যুত্থান। যখন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয় তখন আমিনুর রহমান ছিলেন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার।
আরো পড়ুনঃ স্বদেশপ্রেম – রচনা (৫-১২ শ্রেণী ) সম্পর্কে জেনে নিন
মহা পরিদর্শক টেলিফোন করে রাত দেড়টার দিকে তাৎক্ষণিকভাবে আমিনুর রহমানকে আসতে বলেন। আমিনুর রহমান কারাগারে মূল ফটকের সামনে যান এবং তিনি গিয়ে দেখেন পিকআপে অস্ত্রসহ কয়েকজন সেরা সদস্য। সেনা সদস্যরা কারাগারের মূল ফটোকে সামনে একটি কাগজ দিলেন কারাগারের মহা পরিচালকের হাতে। আমিনুর রহমান কাগজে কি লেখা ছিল তা জানাতে পারেননি। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের মূল ফটকের ঠিক বামদিকে ছিল আমিনুর রহমানের কক্ষ এবং এই কক্ষেই ছিল টেলিফোন।
সেনা সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হওয়ার পর পরেই আমিনুর রহমানের কক্ষের টেলিফোন বেজে উঠে। যখন আমিনুর রহমান টেলিফোনটি রিসিভ করেন তখন অপর প্রান্ত থেকে কণ্ঠস্বর শোনা যায় আইজি সাহেবের সাথে প্রেসিডেন্ট কথা বলবেন। তখন আমিনুর রহমান আইজি সাহেবকে গিয়ে খবর দিলেন এবং প্রেসিডেন্ট আইজি সাহেব কে বললেন আর্মি অফিসাররা যা করতে বলে তোমরা তা করো। ঘাতকরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আসে রাত আনুমানিক দেড় থেকে দুইটার দিকে –
আর কথা বলতে বলতে রাত প্রায় তিনটা বেজে যায়। ঘাতকেরা আমিনুর রহমানকে জাতীয় চার নেতাকে এক রুমে নিয়ে আসার জন্য আদেশ করে এবং কারা কর্তৃপক্ষ চারজনের নাম একটি কাগজে লিখে দেন। আর এই চারজন ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী মহান নেতা তাজউদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, এইচ এম কামরুজ্জামান এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী। সেই সময় কারাগারে চারজনকে দুই রুমে রাখা হয়েছিল।
এবং এক রুমে ছিলেন এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও ক্যাপ্টেন মনসুর আলী ও অপর রুমে ছিলেন সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও তাজউদ্দিন আহমেদ। যখন ৪ নেতাকে এক কক্ষে আসার কথা বলা হলো তখন তাদের এক রুমে আনতে দেরি হয়েছিল বলে সেনা সদস্যরা আমিনুর রহমানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছিল। কিন্তু চার নেতাকে এক রুমে নিয়ে আসতে দেরি হওয়ার কারণ হলো তাজউদ্দিন সাহেব তখন কোরআন পড়ছিলেন এবং ক্যাপ্টেন মনসুর আলী তার পরিহিত কাপড় বদলে নেন।
সৈয়দ মনসুর আলী বসে ছিলেন সর্ব দক্ষিণে। আনিসুর রহমান সৈয়দ মুনসুর আলীর মাথাটা উঁচু করতে গেলে সৈয়দ মনসুর আলী কে গুলি করে হত্যা করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হল এই চার নেতার পরিবার সেই দিন তাদের হত্যার কথা জানতে পারেনি। এমনকি তাজউদ্দিনের পরিবার সেদিন ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে সারাদিন ধরে খোঁজখবর নেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে। ৪ নভেম্বর অর্থাৎ হত্যার পরদিন তাজউদ্দিনের এক প্রতিবেশী এসে জানান যে,
আরো পড়ুনঃ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস সমূহ সম্পর্কে জেনে নিন
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আগের দিন ভোরে অর্থাৎ তিন তারিখে গুলির শব্দ শুনেছেন। এর পরর দিন অর্থাৎ ৪ নভেম্বর খবর আসে তাজ উদ্দিন সহ জাতীয় ৪ নেতা কে হত্যা করা হয়েছে। জাতীয় চার নেতাকে অনিবার্য কারণবশত এ জাতীয় চার নেতাকে নৃসংসভাবে হত্যা করা হয়। বাঙালি জাতির মনে আজও প্রশ্ন জাগে কেন এই চার নেতাকে হত্যা করা হয়! তবে ধারণা করা হয় জাতীয় চার নেতার হত্যাকারী সেনা কর্মকর্তা মনে করেছিল
জাতীয় চার নেতাকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে পাল্টা অভ্যুত্থান যদি হয় তাহলে সেটা কখনোই রাজনৈতিক সমর্থন পাবে না।কারণ সেনা কর্মকর্তারা জানতো খন্দকার মোস্তাক বেশি দিন ক্ষমতায় টিকবে না। আবার সেনা সদস্যদের অফিসারদের মধ্যেও একটি দ্বন্দ্ব চলছিল। আর জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হলে তখন নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কেউ থাকবে না বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেওয়ার মতো কোনো যোগ্য নেতৃত্ব থাকবে না।
তাই পরিকল্পনা করে এই চার ৪ নেতাকে হত্যা করা হয়। আর ঘাতক দলের প্রতি নির্দেশ ছিল যে অভ্যুত্থান ঘটার সাথে সাথেই যেন কোন নির্দেশের অপেক্ষা না করে জাতীয় চার ৩ নেতাকে হত্যা করা হয়। আর এভাবেই মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী জাতীয় চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আর বাংলাদেশের ইতিহাসে এটি জেল হত্যা দিবস নামে পরিচিত।
জেল হত্যা দিবস কবে পালিত হয়
জেল হত্যা দিবস কবে পালিত হয় এ নিয়ে আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে আর আমরা এই নিয়ে অনেক বার গুগলে সার্চ করার চেষ্টা করি এবং জানতে চাই জেল হত্যা দিবস কবে। আর আমরা যারা জানতে চাই জেল হত্যা দিবস কবে! আমি তাদের জন্য বলছি, জেল হত্যা দিবস হল তিন ৩ নভেম্বর। ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী মহান ৪ নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
ঘাতক দল এই চার নেতাকে হত্যা করার জন্য পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে এবং ১৯৭৫ সালের তিন ৩ নভেম্বর ভোর চারটা থেকে সাড়ে চারটার মধ্যে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এই জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়।আর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বা জেলখানায় তাদের হত্যা করা হয় বলে এই দিনটিকে জেল হত্যা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং বাংলাদেশ এই দিনটিকে তার শহীদের স্মরণে পালন করে থাকে। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন
১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তার ধানমন্ডির ৩২ নং বাসায় নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। খন্দকার মোস্তাক আহমেদ ছিলেন তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী এবং তিনি নিজেকে রাষ্ট্রপতির পদে অধিষ্ঠিত করেন এবং সামরিক শাসন জারি করেছিলেন। খন্দকার মোস্তাক ক্ষমতা দখলের পরে মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী চার নেতাকে ২২ শে আগস্ট গ্রেফতার করে এবং পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
খন্দকার মোস্তাক বুঝতে পেরেছিলেন যে, বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় করা হয়েছে তিনিও একই অবস্থার মুখোমুখি হতে পারেন। তাই ২২ শে আগস্ট জাতীয় চার নেতাকে জেলখানায় বন্দি করা হয় এবং বন্দী করার দুই মাস ১৫ দিন পর অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর তাদের হত্যা করা হয়। মোস্তাক বুঝতে পেরেছিলেন জাতীয় এই চার নেতা ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দানকারী কোন নেতা নেই আর এই চার নেতার যে কেউ একজন যে কোন সময়
আরো পড়ুনঃ ভাষা আন্দোলন রচনা – সম্পর্কে জানুন
অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতায় আসতে পারে তাই তাদের বন্দি করা এবং হত্যা করার কোন বিকল্প নেই। জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পরিকল্পনা তাৎক্ষণিক করা হয় এবং পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট ঘাতক দল গঠন করা হয় এবং তাৎক্ষণিকভাবে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর খন্দকার মোস্তাক চাননি যে আরেকটা ক্ষমতাশীল দল এদেশে থাক এবং এই চার জন ছিলেন সম্ভাব্য নেতা। আর যদি আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে তাহলে
জেলে থাকা এই চারজন প্রধান নেতা হবেন। আবার তখন সেনা সদস্যদের মধ্যেও ক্ষমতার দ্বন্দ চলছিল যার কারণে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়। সেনা কর্মকর্তারা ভালো করে জানতেন যে, অভ্যুত্থান হলে আওয়ামী লীগ সমর্থন পাবে এবং তারা সরকার গঠন করতে পারবে। তাই এই চার নেতাকে ১৯৭৫ সালের ২২ আগস্ট জেলে বন্দী করা হয় এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর জেলখানাতে তাদের হত্যা করা হয়।
জাতীয় চার নেতা কত তারিখে গ্রেফতার হন
আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে আমাদের এই জাতীয় চার নেতা কত তারিখে গ্রেফতার হন! আমরা সবাই জানি আমাদের জাতীয় এই চার নেতা ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে অর্থাৎ জেলখানায় নৃশংসভাবে খুন হন অর্থাৎ তাদেরকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। কিন্তু আমরা অনেকেই জানিনা এই চার নেতাকে কত তারিখে জেলখানায় পাঠানো হয়েছিল। তাই যারা জানতে চান এই জাতীয় চার মহান নেতা কে কবে জেলখানায় পাঠানো হয়েছিল আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নং বাসা অর্থাৎ নিজ বাসায় স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। এরপর খন্দকার মোস্তাক অর্থাৎ তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন এবং তিনি মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার ক্ষেত্রেও এমন অবস্থা হতে পারে তাই তিনি চাননি যে আর একটি ক্ষমতাশীল দল এই দেশে থাক। তাই তিনি তৎকালীন জাতীয় চার নেতা অর্থাৎ
সৈয়দ নজরুল ইসলাম,মোহাম্মদ মনসুর আলী,তাজ উদ্দিন আহমেদ,আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান তাদেরকে ১৯৭৫ সালের ২২ শে আগস্ট পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের হত্যা করা হয়। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
জেল হত্যা চার নেতার নাম
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী চার নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় বলে এই দিবসটিকে জেল হত্যা দিবস নামে অভিহিত করা হয়। ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বা জেলখানায় যে চার জন নেতাকে হত্যা করা হয় তারা হলেন –
সৈয়দ নজরুল ইসলাম
মোহাম্মদ মনসুর আলী
তাজ উদ্দিন আহমেদ
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান
জাতীয় চার নেতার নাম ও পদবী
সৈয়দ নজরুল ইসলাম – সাবেক উপরাষ্ট্রপতি
মোহাম্মদ মনসুর আলী – ক্যাপ্টেন
তাজ উদ্দিন আহমেদ – বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান – সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মুক্তিযুদ্ধে জাতীয় চার নেতার ভূমিকা
সৈয়দ নজরুল ইসলাম – সৈয়দ নজরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম সরকার। এছাড়াও তিনি ছিলেন মুজিবনগর সরকারের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি।
মোহাম্মদ মনসুর আলী – মোহাম্মদ মনসুর আলী ছিলেন মুজিবনগর সরকারের অর্থমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল প্রতিষ্ঠার পর।
তাজ উদ্দিন আহমেদ – তাজউদ্দীন আহমেদ ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী। এছাড়াও তিনি একজন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, সংসদ সদস্য এবং সাবেক অর্থমন্ত্রী ছিলেন।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান – ১৯৭৫ সালে তিনি নির্বাচিত হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডেন্ট হিসেবে। তিনি ছিলেন একজন সংসদ সদস্য এবং ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় তিনি বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের কৃষি, ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন এবং তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়াও এ এইচ এম কামরুজ্জামান ও মনসুর আলী বঙ্গবন্ধুর এক নিষ্ঠ সহযোগী ছিলেন। তারা দুজন পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং তারা দুজনে গেরিলা যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রেও নিতি নির্ধারণ ও কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব পালনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
জেল হত্যা দিবসের মামলা
১৯৭৫ সালে ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করার পরের দিন অর্থাৎ ১৯৭৫ সালের ৪ নভেম্বর ঢাকার লালবাগ থানায় যান তৎকালীন কারা বিভাগের উপ-পরিচালক এবং তিনি বাদী হয়ে মহান চার নেতাকে হত্যার জন্য মামলা দায়ের করেন। তিনি এ মামলার এজাহারে বলেন যে, ৪-৫ জন ঘাতক ঢাকা কারাগারে ঢুকে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করে এবং তার নেতৃত্ব দেন রিসালদার মোসলেম উদ্দিন।
ঘাতক দল গুলো গুলি করেই শুধু ক্ষান্ত হননি তারা বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করেন। যদিও মামলা হয়েছিল ঘটনার পরে দিন অর্থাৎ চার ৪ নভেম্বর কিন্তু মামলা দীর্ঘ ২১ বছর থেমেছিল। এরপর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গেলে বিচারকার্য শুরু হয় এবং এই বিচার কার্য চলে টানা আট ৮ বছর এবং এরপর বিচারকার্য শেষ হয় ২০০৪ সালের ৩ জানুয়ারি। এবং ২০০৪ সালের ২0 এ অক্টোবর অর্থাৎ নয় ৯ মাস পর রায় ঘোষণা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের উৎসব – রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
মামলার এই রায়ে তিন সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয় যদিও তারা পলাতক রয়েছে এবং যাবজ্জীবন দেওয়া হয় ১২ জন সাবেক সেনা সদস্যকে এবং খালাস প্রদান করা হয় ৬ জনকে। এরপরে ২০০৮ সালের ২৮শে আগস্ট জেল হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৬ জন আসামিকে খালাস প্রদান করে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ।
তবে খালাস প্রাপ্ত ছয় ৬ জনের মধ্যে আবার তিনজন বঙ্গবন্ধুর খুনের সাথে জড়িত থাকার কারণে ২০১০ সালে তাদের ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষ যারা খালাস পেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির জন্য আপিল করেছে। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
জাতীয় চার নেতার সমাধি কোথায়
অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে যে জাতীয় চার নেতার সমাধি কোথায় এবং তাদেরকে কোথায় দাফন করা হয়েছে। যারা জানতে চান যে চারজন মহান নেতা জেলে ঘাতকদের হাতে নৃশংস ভাবে খুন হন তাদের সমাধি কোথায়! আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী এই চার নেতার মধ্যে সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দিন আহমেদ ও এস এম ক্যাপ্টেন মনসুর আলীকে ঢাকার বনানী কবরস্থানে দাফন করা হয় এবং এ এইচ এম কামরুজ্জামানকে রাজশাহীতে দাফন করা হয়।
-
জাতীয় চার নেতা কত তারিখে গ্রেফতার হন,জাতীয় চার নেতা হত্যা দিবস,জেল হত্যা চার নেতার নাম,জাতীয় চার নেতার নাম ও ছবি,জাতীয় চার নেতার নাম ও পদবী,জাতীয় চার নেতা কে কে,জেল হত্যা দিবস কবে পালিত হয়,জাতীয় চার নেতার সমাধি কোথায়। তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
জাতীয় চার নেতা কে কে
যারা জানতে চান জাতীয় চার নেতাকে কে কে তাহলে তারা জেনে নিন বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী চার নেতা যাদেরকে ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে হত্যা করা হয় তারা হলেন –
- সৈয়দ নজরুল ইসলাম
- মোহাম্মদ মনসুর আলী
- তাজ উদ্দিন আহমেদ
- আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
জেল হত্যা চার নেতার নাম
- সৈয়দ নজরুল ইসলাম
- মোহাম্মদ মনসুর আলী
- তাজ উদ্দিন আহমেদ
- আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
- তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিল
মহান জাতীয় চার নেতা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন এবং তারা মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আর যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলেন তারা চাননি যে আওয়ামী লীগের কোন নেতা সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করুক এবং তারা পরবর্তীতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হোক। তাই মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নং বাসা অর্থাৎ নিজ বাসায় স্বপরিবারে হত্যা করা হয়।
আরো পড়ুনঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ – ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা ২০২৩
এরপর খন্দকার মোস্তাক অর্থাৎ তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন এবং তিনি মনে করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে তার ক্ষেত্রেও এমন অবস্থা হতে পারে তাই তিনি চাননি যে আর একটি ক্ষমতাশীল দল এই দেশে থাক। তাই তিনি তৎকালীন জাতীয় চার নেতা অর্থাৎসৈয়দ নজরুল ইসলাম,মোহাম্মদ মনসুর আলী,তাজ উদ্দিন আহমেদ,আবুল হাসনাত মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।
তাদেরকে ১৯৭৫ সালের ২২ শে আগস্ট পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠান এবং ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তাদের হত্যা করা হয়। বাংলার শত্রু এবং ঘাতক দল এই জাতীয় চার নেতাকে কারাগারে পাঠান ১৯৭৫ সালের ২২ শে আগস্ট এবং সেখানেই তাদের হত্যা করা হয়।
জাতীয় চার নেতার ছবি
আপনারা যারা জাতীয় চার নেতার ছবি দেখতে গুগলে সার্চ করেন তাদের জন্য আমি জাতীয় চার নেতার ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আপনারা এই ছবি দেখতে চেয়েছেন। নিচে জাতীয় চার নেতার ছবি দেওয়া হল –
শেষ কথা
১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী মোহন ৪ নেতাকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয় যা বাংলার ইতিহাসে একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। বাংলার ঘাতক দালালেরা বাংলাকে মেধাশূন্য করার উদ্দেশ্যে এই হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। আমি তিন নভেম্বর জেল হত্যা দিব সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আমার এই তথ্যগুলো আপনাদের অনেক উপকারে আসবে।
তবে আমি সমস্ত তথ্যগুলো গুগলের সাহায্য নিয়ে তৈরি করেছি। যদি কোন ভুল ভ্রান্তি হয়ে থাকে তাহলে সবাই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।তাই জেল হত্যা দিবস – জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন সঠিক ভাবে জানুন।
Leave a comment