জাতীয় সংগীত একটি দেশের অনুভূতির নাম। প্রতিটি স্বাধীন দেশেই একটি নিজস্ব জাতীয়
সংগীত রয়েছে আর বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা বিভিন্ন সময় পরীক্ষায় লিখতে আসে।
তাই আমি বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা
পরীক্ষায় বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা এর মাধ্যমে আমি যাবতীয় বিষয় তুলে ধরার
চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি এই বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা এর মাধ্যমে তোমরা
জাতীয় সংগীত সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় জানতে পারবে। নিচে বাংলাদেশের জাতীয়
সংগীত রচনা বিস্তারিত লিখা হলো-

পোস্ট সূচিপত্রঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা 

ভূমিকা

পৃথিবীর প্রত্যেকটি স্বাধীন দেশেরই একটি জাতীয় সংগীত রয়েছে তেমনি বাংলাদেশেরও
রয়েছে একটি প্রাণ শীতল করা জাতীয় সংগীত। বাংলাদেশ তথা আমাদের জাতীয় সংগীত
বাঙালির আজন্ম স্বপ্নে লালিত। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত প্রেমময় সুর ও সুরেলা
ভাষায় রচিত। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো জাত্যাভিমানের
কথা নয়, শাসকের মহত্ত্ব বন্দনা নয়, কোন রাজা বা রা জন্য বর্গের সৌর্য বীর্যের
কথা নয়  যুদ্ধের কথা নয়  কোন শাসকের শক্তি নেই 

রণকৌশল সাম্রাজ্য বিস্তার বা রাজা রাজাধিরাজ ক্ষমতা ও শ্রেষ্ঠত্ব নিয়ে নিখুঁত
বাণী নয়, আধিপত্যের জায়গান নয়, কোন সহজ সরল গভীর দার্শনিক বোধে ঋদ্ধ এ সঙ্গীত
প্রেম ও ভালোবাসার রসে ভরপুর।বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতে যে প্রেম রয়েছে তা
প্রকৃতির প্রেম। ভিন্ন অর্থে একে মাতৃত্ব প্রেম বোঝানো হয়। দেশ তথা দেশের মাটি
মাতৃত্ব স্বরূপ তাই মাতৃত্বের বন্দনা নিয়ে রচিত হয়েছে এই জাতীয় সংগীত। মানুষ
প্রকৃতি থেকেই তার বেঁচে থাকার রসদ জোগাড় করে।

আর প্রকৃতির খেয়ালে জন্ম নেই এই সংগীত। মানুষ প্রকৃতি থেকেই ক্ষুধা এবং মানসিক
ক্ষুধা সবকিছুই দূর করে তাই প্রকৃতি মাতৃস্বরূপ। প্রকৃতির বাতাসে যেন মানুষকে
বাঁচিয়ে রাখে এবং তাকে আকাশ স্বপ্নচারী করে তোলে সে আকাশ বাতাস মানবের হৃদয়
প্রাণে প্রেম সুরেলা বাঁশি বাজায় ভালোবাসার।

জাতীয় সংগীতের অর্থ কি

জাতীয় সংগীত হলো একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বীকৃত গান। প্রতিটি স্বাধীন রাষ্ট্রের
যেকোনো রাষ্ট্রীয় কার্য উপলক্ষে অথবা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ কোন অনুষ্ঠানে এই গান
গাওয়া হয় অথবা বাদ্যযন্ত্রের সুরে তা বাজানো হয়। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে একটি
জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষা ও গৌরবের প্রতিফলন ঘটে থাকে।

জাতীয় সংগীতের উৎপত্তি

বাংলাদেশ তথা আমাদের জাতীয় সংগীত হলো “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।
এখানে “সোনা” শব্দটির অর্থ হল “স্বর্ণ” আর “সোনার” শব্দটির অর্থ স্বর্ণের
অন্তর্গত যা স্বর্ণ দিয়ে তৈরি তাকে বোঝানো হয়েছে। এবং “আর” দিয়ে দখলদারিত্ব
বোঝানো হয়েছে। এবং “ভালোবাসি” কথাটি দ্বারা এখানে প্রিয় কথা বোঝানো হয়েছে।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা শব্দটির দ্বারা আসলে বাঙালি জাতির
মূল্যবোধ প্রকাশ করা হয়েছে এবং বাংলার সোনালী ফসল ক্ষেতে যে স্বর্ণের রং ধারণ
করে তাকে বোঝানো হয়েছে। মূলত এখানে বাংলার মাটির সোনার ফসলকেই এই জাতীয়
সঙ্গীতের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

জাতীয় সংগীতের ইতিহাস

আমাদের জাতীয় সংগীত “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি” মূলত ১৯০৫ সালের
বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রচিত হয়েছিল। তবে সঠিকভাবে এর রচনা-কাল বা
পান্ডুলিপি পাওয়া যায়নি। তবে সত্যেন রায়ের রচনা থেকে শুধু এ কথা জানা যায় যে
১৯০৫ সালের ৭ ই আগস্ট কলকাতার টাউন হলে প্রথম এই গানটি গাওয়া হয়েছিল। সেই বছরই
অর্থাৎ ১৯০৫ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর বাংলা ১৩১২ বঙ্গাব্দের বাই ২২ শে ভাদ্র
রবীন্দ্রনাথের স্বাক্ষরের সঞ্জীবনী পত্রিকার মাধ্যমে গানটি প্রকাশিত বা মুদ্রিত
হয়েছিল।

তবে আমাদের জাতীয় সংগীত কোন সাদামাটার চিন্তার নিভৃতে রচিত হয়নি। রবীন্দ্রনাথ
ঠাকুর ও সুরেন্দ্রনাথ ব্যানার্জীর নেতৃত্বে সারা বাংলায় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন শুরু
হয় ১৯০৫ সালে। আর এরই ধারাবাহিকতায় ১৯০৬ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের এই
জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালবাসি রচনা করেন। আর একই সময়ে আরো
একটি গান রচিত হয়েছিল আর তা হলো “, “আজই বাংলাদেশের হৃদয় হতে কখন আপনি”।

আরো পড়ুনঃ  সুন্দরবন – রচনা – সম্পর্কে জেনে নিন

বাঙালি জাতির জন্য ১৯০৫ সাল থেকে ১৯০৬ সাল ছিল অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়।১৯৪৮
সাল থেকে ১৯৫২ সালে পূর্ব বাংলার বাঙালি ও সংস্কৃতিক জাতিসত্তার বিষয়টি
বাঙ্গালীদের সামনে আসে এবং ঠিক একই সময় আমার সোনার বাংলা গানটির চর্চা বেশি হতে
থাকে। এমনকি দেশ ভাগের পূর্বকালের চেয়েও অনেক বেশি হতে থাকে। এই সময় সানজিদা
খাতুন ছিলেন প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী এবং তিনি ছিলেন প্রখ্যাত সঙ্গীত ও ছায়া নটের
প্রতিষ্ঠাতা।

 তার মতে ১৯৫৬ সালে ঢাকা পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশন বসে ছিল আর এই
গণপরিষদের অধিবেশন বসে ছিল ঢাকার কার্জন হলে এবং এখানে এটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের
আয়োজন করা হয়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন এই অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা এবং
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সানজিদা খাতুনকে এই গানটি গাওয়ার জন্য অনুরোধ
করেছিলেন এবং সানজিদা খাতুন সেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পুরো গানটি গেয়েছিলেন।

যেভাবে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত

১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে স্বাধীন বাংলার
কেন্দ্রীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয় এবং এই সংগ্রাম পরিষদ এর কেন্দ্রস্থল ঢাকার
পল্টন ময়দানে এবং সেখানে তিন ৩ মার্চ একটি জনসভার আয়োজন করা হয় এবং এখানে একটি
স্বাধীনতার ইজতেহারে এই গানটি জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৭ই
এপ্রিল মুজিব নগর স্বাধীন বাংলাদেশ সরকার গঠনের সময় শপথ অনুষ্ঠানে প্রথম এই
গানটি জাতীয় সংগীত হিসেবে গাওয়া হয়েছিল। 

এছাড়াও ১৯৭১ সালে ৩ জানুয়ারি ঢাকার পল্টন ময়দানেও গাওয়া হয়েছিল এই গানটি।
বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ঐতিহাসিক ভাসনের প্রাক্কালেও এই গানটি গাওয়া হয়েছিল এবং
স্বাধীন প্যারেড অনুষ্ঠানে ও এই গানটি গাওয়া হয়েছিল। আর এভাবেই এটি বাংলাদেশের
জাতীয় সংগীত হিসেবে পরিচিত লাভ করে।

জাতীয় সংগীত এর স্বীকৃতি

মুজিব নগরে বাংলাদেশ প্রবাসী সরকার “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি” এই
গানকে সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাংলাদেশ বেতারে
নিয়মিত এই গানটি প্রচার করা হয়। স্বাধীনতার পর সংবিধানের ৪.১ নং অনুচ্ছেদে আমার
সোনার বাংলা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত হিসেবে ঘোষিত হয়। এই গানটি সর্বমোট ২৫
লাইনের রচিত হলেও জাতীয় সংগীত হিসেবে 

আরো পড়ুনঃ  কর্ণফুলী টানেল – বঙ্গবন্ধু টানেল রচনা

প্রথম দশ ১০ লাইন কণ্ঠস্বরগীত এবং প্রথম চার ৪ লাইন যন্ত্র সংগীত হিসাবে বাজানোর
বিধান রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই আমার সোনার বাংলা
গানটি জাতীয় সংগীতের মর্যাদা পায় এবং এবং ঠিক একই সময়ে “জয় বাংলা” স্লোগানটি
ও স্বীকৃতি পায়।

জাতীয় সংগীতের জনপ্রিয়তা

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচিত হয়েছে বাংলার প্রকৃতিকে কেন্দ্র করে আর আজ বিশ্বের
দরবারে এই জাতীয় সংগীত জনপ্রিয়তার শীর্ষে স্থান করে নিয়েছে। শ্রোতাদের পছন্দ
অনুযায়ী বিবিসি bbc বাংলায় তৈরি ২০টি গানের মধ্যে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত তথা
আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি এই গানটি তালিকায় প্রথম স্থান অধিকার করে
নিয়েছে।

জাতীয় সংগীতের সুর

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতের সুর শিলাইদহের ডাক পিয়ন গগন হরকরা রচিত “আমি কোথায়
পাব তারে, আমার মানুষ মনের মানুষ যে রে” এই গানের সুরের আঙ্গিকেই রচিত হয়েছে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯০৫ সালে বাংলার প্রকৃতিকে বিশ্ববাসীর সামনে তুলে
ধরার জন্য আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি এই গানটির রচনা করেন। 

১৮৮৯ সাল থেকে ১৯০১ সাল পর্যন্ত বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জমিদারের বিভিন্ন
কাজে পূর্ব বাংলার বিভিন্ন অঞ্চল ভ্রমণ করেন এবং সেই সময় বিভিন্ন এলাকার লোক ও
সুরের সাথে তার পরিচয় ঘটে। আর এই সুরেরি অভিপ্রকাশ ঘটে আমার সোনার বাংলা এই
গানের মধ্যে।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়

১৯০৫ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর বাংলা ১৩১২ বঙ্গাব্দের ২২ শে ভাদ্র রবীন্দ্রনাথের
স্বাক্ষরের সঞ্জীবনী পত্রিকায় প্রথম আমার সোনার বাংলা এই গানটি মুদ্রিত বা
প্রকাশিত হয়েছিল যা এখন আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে পরিচিত।

জাতীয় সংগীতের মূলভাব

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত টি পরিপূর্ণ মায়ের প্রতি সন্তানের ভালোবাসার নিবেদন এবং
বাংলার প্রকৃতির সন্তান সবকিছু মিলে রচিত হয়েছে। বাংলা আমাদের অপরূপ মাতৃত্ব এবং
মায়ের প্রতি সন্তানের আবেগ মিশ্রিত ভালোবাসা সবকিছু এই সংগীতের মাধ্যমে প্রকাশিত
হয়েছে। লক্ষ লক্ষ মুক্তিযোদ্ধার মুখের বাণী ছিল “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়
ভালোবাসি” আর এই সুরকে নিয়েই বাঙালিরা আপন গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশকে শত্রু
মুক্ত করতে। আর এর মাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত
প্রাঙ্গণ এবং তুলনাহীন প্রেরণা এবং দেশপ্রেমের পরাকাষ্ঠা।

জাতীয় সঙ্গীতের বিশ্ব রেকর্ড

১৯১৪ সালের ২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত অর্থাৎ আমার সোনার বাংলা আমি
তোমায় ভালোবাসি ঢাকা বাংলাদেশ একযোগে জাতীয় প্যারেড ময়দানে ২৫৪ ও ৫৩৭ জন
জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে গ্রিনিস ওয়ার্ল্ডে রেকর্ড গড়েছিল।

জাতীয় সংগীত কে নিয়ে চলচ্চিত্র

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত কে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। বিখ্যাত চলচ্চিত্র
কার জহির রায়হান ১৯৭০ সালে এই জাতীয় সংগীত আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়
ভালোবাসি কে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। তার চলচ্চিত্রের নাম “জীবন থেকে
নেয়া” কাহিনী চিত্রে তিনি প্রথম গানের চিত্রায়ন করেছিলেন।

জাতীয় সংগীতের গুরুত্ব

বাংলাদেশ তথা বাঙালি জাতির ইতিহাসে জাতীয় সংগীতের গুরুত্ব অপরিসীম। জাতীয়
সংগীতের মাধ্যমে বাংলার প্রকৃতি সহ বাংলার আকাশ, বাতাস এমনকি মাঠে ফলীত সোনালী
ফসল সবকিছু তুলে ধরা হয়েছে। এক কথায় জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে বাংলার অপার
সৌন্দর্যকে বিশ্বের দরবারে তুলে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় সংগীতটি
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে রচিত হয়েছে বলে বাঙালির রক্তে ভেজা মর্ম কথার বাণীও
ফুটে উঠেছে এর মাধ্যমে।

আরো পড়ুনঃ ভাষা আন্দোলন রচনা – সম্পর্কে জানুন

আমাদের এই জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ফুটে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের মূলমন্ত্র ছিল শান্তি
এবং সোহাদ্য। মাতৃভূমি বাংলাকে মুক্ত করতে ধর্ষিত হয়েছে ২ লাখ নারী এবং শহিদ
হয়েছেন ৩০ লক্ষ নিরীহ মানুষ। সবকিছুই জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা
হয়েছে আর তাই পৃথিবীর সব দেশের জাতীয় সংগীত থেকে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত একটু
আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে রচিত হয়েছে।

জাতীয় সংগীত প্রথম দশ লাইন

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি এটি মূলত ২৫ লাইনে রচিত হয়েছে। কিন্তু
প্রথম দশ ১০ লাইন জাতীয় সংগীতের মর্যাদা পেয়েছে এবং প্রথম চার ৪ লাইন
যন্ত্রসঙ্গীতে বাজানোর বিধান রয়েছে। নিচে প্রথম ১০ লাইন তুলে ধরা হলো-

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।

ওমা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে,

মরি হায়, হায় রে-

ওমা, অঘ্রানে তোর ভরা খেতে আমি কি দেখেছি মধুর হাসি।

কি শোভা, কি ছায়া গো , কি স্নেহ কি মায়া গো-

কি আঁচল বিছায়েছ  বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।

মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মত,

মরি হায়, হায় রে-

মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি।

গাওয়ার জন্য জাতীয় সংগীত

বাংলাদেশের সংবিধানের ৪.১ অনুচ্ছেদে আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি জাতীয়
সংগীতের প্রথম ১০ লাইন স্বরসংগীত এবং প্রথম চার লাইন যন্ত্রসংগীত হিসাবে বাজানোর
বিধান রাখা হয়েছে। গাওয়ার জন্য জাতীয় সংগীতের প্রথম ১০ লাইন হল-

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।

ওমা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে,

মরি হায়, হায় রে-

ওমা, অঘ্রানে তোর ভরা খেতে আমি কি দেখেছি মধুর হাসি।

কি শোভা, কি ছায়া গো , কি স্নেহ কি মায়া গো-

কি আঁচল বিছায়েছ  বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।

মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মত,

মরি হায়, হায় রে-

মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি।

বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত মোট কত লাইন

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি আসলে এটি গান হিসেবে রচিত হয়েছিল এবং এই
গানটি সর্বমোট ২৫ লাইনের রচিত হয়। এরপরে বাংলাদেশের সংবিধানের ৪.১ নং অনুচ্ছেদে
প্রথম দশ ১০ লাইন জাতীয় সংগীতের মর্যাদা লাভ করে। আর এরই সূত্র ধরে বাংলাদেশের
জাতীয় সংগীত মোট দশ ১০ লাইন।

বাংলাদেশের সম্পূর্ণ জাতীয় সংগীত/২৫ লাইন

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি।

চিরদিন তোমার আকাশ, তোমার বাতাস, আমার প্রাণে বাজায় বাঁশি।

ওমা, ফাগুনে তোর আমের বনে ঘ্রানে পাগল করে,

মরি হায়, হায় রে-

ওমা, অঘ্রানে তোর ভরা খেতে আমি কি দেখেছি মধুর হাসি।

কি শোভা, কি ছায়া গো , কি স্নেহ কি মায়া গো-

কি আঁচল বিছায়েছ  বটের মূলে, নদীর কূলে কূলে।

মা, তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মত,

মরি হায়, হায় রে-

মা, তোর বদনখানি মলিন হলে, ও মা, আমি নয়ন জলে ভাসি।

তোমার এই খেলা ঘরে শিশুকাল কাটিলে রে,

তোমারি ধুলামাটি অঙ্গে মাখি ধন্য জীবন মানি।

তুই দিন ফুরালে সন্ধ্যা কালে কি দীপ জালিস ঘরে,

মরি হায়, হায়রে-

আরো পড়ুনঃবাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা সম্পর্কে জেনে নিন

তখন খেলাধুলা সকল ফেলে, ওমা, তোমার কোলে ছুটে আসি।।

ধেনু – চরা তোমার মাঠে, পাড়ে যাবার খেয়া ঘাটে,

সারাদিন পাখি ডাকা ছায়ায় ঢাকা তোমার পল্লী বাটে,

তোমার ধানে – ভরা আঙিনাতে জীবনের দিন কাটে,

মরি হায়, হায়রে-

ওমা, আমার যে ভাই, তারা সবাই ওমা তোমার রাখাল তোমার চাষী।।

ও মা, তোমার চরণেতে দিলেম এই মাথা পেতে-

দে গো তোর পায়ের ধুলা, সে যে আমার মাথায় মানিক হবে।

ওমা, গরিবের ধন যা আছে তাই দিব চরণ তলে,

মরি হায়, হায়রে-

আমি পরের ঘরে কিনব না আর, মা, তোর ভূষণ বলে গলার ফাঁসি।

উপসংহার

বিশ্বের প্রতিটি স্বাধীন দেশেরই একটি নিজস্ব জাতীয় সংগীত রয়েছে তেমনি
বাংলাদেশের ও একটি জাতীয় সংগীত রয়েছে। আর তা হলো – ” আমার সোনার বাংলা আমি
তোমায় ভালোবাসি” আর এই জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে বাংলার প্রকৃতিকে বিশ্বের সামনে
তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের জাতীয় সংগীত টি বিশ্বের যত জাতীয় সংগীত রয়েছে তার
মধ্যে আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে রচিত হয়েছে। আমরা গর্বিত আমাদের এই জাতীয় সংগীত কে
নিয়ে এবং জাতীয় সংগীতের গৌরব দীপ্ত উত্তরাধিকার হতে পেরে।