অথবা, জরিপ পদ্ধতির উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা কর।
ভূমিকাঃ সামাজিক ঘটনাবলি বিশ্লেষণ ও ব্যাখ্যার জন্য গবেষকরা এই পদ্ধতিটি বেশ গুরুত্বের সাথে ব্যবহার করে থাকেন। বৃহত্তর গবেষণার ক্ষেত্রে জরিপ পদ্ধতির কোনাে বিকল্প নেই। এই পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহের জন্য প্রশ্নপত্র কৌশল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। উন্নয়নশীল দেশগুলােতে জরিপ পদ্ধতির প্রয়ােগের জন্য বিভিন রকমের প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়। জাতীয় পর্যায়ের সমস্যা নির্ণয় ও সমাধানের জন্য জরিপ প্রত্যেক দেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
সামাজিক জরিপের উদ্দেশ্যঃ প্রত্যেক গবেষণাই সব ধরনের পদ্ধতি ব্যবহার করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে গবেষণা ধরনের ওপর নির্ভর করে কোনাে পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে। সাধারণত উদ্দেশ্যের ওপর ভিত্তি করে গবেষণা পদ্ধতি নির্ধারিত হয়ে থাকে। তাই প্রত্যেক পদ্ধতির মত জরিপ পদ্ধতিরও কিছু উদ্দেশ্যে রয়েছে। নিম্নে তা তুলে ধরা হলাে-
(১) সামাজিক তথ্যাবলির কারণ উদঘাটন করা
(২) সামাজিক উপাদান সম্পর্কে তথ্যাবলি বর্ণনা করা।
(৩) বহুবিধ সামাজিক চলকের প্রকৃত সম্পর্ক ব্যাখ্যা করা।
(৪) ব্যাপক পরিধিতে সংশ্লিষ্ট তথ্যাবলি সংগ্রহ ও সরবরাহ করা।
(৫) প্রকল্প ও তত্ত্ব গঠনে এবং যাচাইয়ে সহায়তা প্রদান।
সামাজিক জরিপের উপযােগিতা/গুরুত্বঃ নিম্নে সংক্ষিপ্তভাবে উপযােগিতাগুলাে তুলে ধরা হলাে-
(১) ব্যাপক পরিসরে কাজের উপযােগীঃ যেকোনাে অর্থনৈতিক, সামাজিক, বাজার বিভাগ, সমষ্টিগত জনমত, রাজনৈতিক, গণযােগাযােগ ও সাংবাদিকতা, চিকিৎসাগত ইত্যাদি ক্ষেত্রে সামাজিক জরিপ পদ্ধতি প্রয়ােগ সম্ভবপর।
(২) সমস্যার গভীরে প্রবেশঃ যেকোনাে সমস্যা গভীর ও সার্বিকভাবে জানতে, নির্ণয়ে ও তার সমাধান নির্বাচনে সহায়তা প্রদান সামাজিক জরিপ পদ্ধতির অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
(৩) সামাজিক পরিবর্তনের দিকনির্দেশনাঃ সামাজিক পরিবর্তনের ধারা ও বিশৃঙ্খলার মাত্রা এবং এর কারণসমূহ খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে অবদান রাখে।
(৪) অনুকূল পরিবেশ সষ্টিঃ সামাজিক জরিপ পরীক্ষণমূলক গবেষণার জন্য অনুকূল অবস্থা সৃষ্টি করে। কেননা পরিক্ষণমূলক গবেষণার জন্য যদি অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টি করা না যায়। তাহলে ভাল ফলাফল লাভ করা সম্ভব না।
(৫) তুলনামূলক অনুসন্ধানেঃ কিছু কিছু গবেষণা পরিচালনা করতে তুলনার প্রয়ােজন হয়। অর্থাৎ গবেষণাকৃত বিষয়ের সাথে অন্য ক্ষেত্রের তুলনার প্রয়ােজন পড়ে। এক্ষেত্রে সামাজিক জরিপ পদ্ধতি তুলনামূলক অনুসন্ধানে যথেষ্ট সহায়ক।
(৬) নমুনাজাত ভ্রান্তি দূরীকরণঃ নমুনাজাত ভ্রান্তি পরিমাপ ও অনুমানজাত ভ্রান্তি যথাসম্ভব কমিয়ে আনা যায় বলে প্রাপ্ত তথ্যাবলি পরবর্তী গবেষণার জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ।
(৭) নমনীয়তাঃ সামাজিক জরিপ গবেষণায় নমনীয়তা নীতি বিদ্যমান থাকে। কেননা নমনীয়তা নীতির ওপর অনেকাংশে গবেষণার সফলতা নির্ধারিত হয়ে থাকে।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, জরিপ পদ্ধতি সামাজিক গবেষণার একটি মৌলিক পদ্ধতি। সামাজিক, অর্থনৈতিক, চিকিৎসাগত, বাজার ও বিপণন, সমষ্টিগত, জনমত, রাজনৈতিক ইত্যাদি ক্ষেত্রে জরিপ পদ্ধতি সফল ভূমিকা পালন করছে। আর একারণেই Hans Raz-এর ভাষায় বলা যায় যে, ‘Social survey is one of the important methods of social investigation is so for as the scope of investigation is confined to particular area.
Leave a comment