‘জমিদার দর্পণ’ কোন নাটকের অনুকরণে লেখা? এ নাটকের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
উত্তর: মীর মশাররফ হোসেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে ‘বিষাদ সিন্ধু’ উপন্যাসের রচয়িতা হিসেবে অমরত্ব লাভ করলেও সাহিত্য ক্ষেত্রে তার আরো কিছু বিশিষ্ট অবদান রয়েছে। এগুলোর মধ্যে তার লেখা নাটক ও প্রহসনগুলোও অন্যতম। তবে তার নাটকগুলোর মধ্যে জমিদার দর্পণ নাটকটিই সর্বাধিক পরিচিত। এটি ১৮৭৩ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয়। এর তেরো বছর আগে দীনবন্ধু মিত্রের ‘নীলদর্পণ’ নাটক প্রকাশিত হয়েছিল। নামকরণের সাদৃশ্য থাকলেও বিষয়বস্তু ও ঘটনা সংস্থাপনের দিক থেকে নীলদর্পণের সাথে এর যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। জমিদারি সেরাস্তার একজন কর্মচারী রূপে মীর সাহেব জমিদার সমাজকে খুব কাছে থেকে প্রত্যক্ষ করেছিলেন। তৎকালীন জমিদার শাসিত সমাজের একটি করুণ চিত্র এতে দক্ষতার সাথে অঙ্কন করা হয়েছে। জমিদার দর্পণ এর মূল কাহিনিটি এরকম: মেরাজ আলী একজন উচ্ছৃঙ্খল প্রকৃতির জমিদার। স্বেচ্ছাচারিতা তার স্বভাবের বৈশিষ্ট্য। প্রজা আবু মোল্লার স্ত্রী নুরস্নেহারকে লাভ করাই তার ইচ্ছা। সে নূরন্নেহারকে বলপূর্বক তার বৈঠকখানায় নিয়ে আসে। নূরন্নেহার তার সমস্ত শক্তি প্রয়োগ করে তার নারীধর্ম রক্ষা করতে পারলেও তার জীবন রক্ষা করতে পারে না। জমিদারের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হলো বটে। কিন্তু উৎকোচের দ্বারা সাক্ষীকে বশ করে জমিদার মুক্তি পেল। আর নূরন্নেহারের স্বামী আবু মোল্লা উন্মাদ হয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে গেল। জমিদার সমাজের উচ্ছৃঙ্খলতার এক বিশ্বস্ত চিত্র অঙ্কিত হয়েছে এ নাটকটিতে। সত্যি এটি দর্পণ। এতে চোখ রাখলে উচ্ছৃঙ্খল জমিদারদের একটি সঠিক চিত্র যেন চোখের সামনে ভেসে উঠে।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ উপরের লেখায় কোন ভুল থাকে তাহলে দয়া করে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানাবেন আমরা সেটা ঠিক করে দেওয়ার চেষ্টা করবো, ধন্যবাদ।
Leave a comment