অথবা, লকের সম্মতি তত্ত্বের প্রকারভেদগুলো সংক্ষেপে লিখ ৷
ভূমিকাঃ জন লকের রাষ্ট্র দর্শনে সম্মতি অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তিনি মনে করেন যে, যে কোন শাসকের বৈধতার ভিত্তি হচ্ছে শাসিতের সম্মতি। জন লকের মতে, সরকার জনগণের সম্মতির ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং সরকার অছি হিসেবে শর্তসাপেক্ষে ক্ষমতা ধারণ করে। এটাই জন লকের সম্মতি তত্ত্ব নামে পরিচিত।
জন লকের সম্মতি তত্ত্বের প্রকারভেদঃ সম্মতি তত্ত্ব জন লকের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক মতবাদ। তিনি এই তত্ত্বের মাধ্যমে জনগণের মর্যাদা প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন। তিনি সম্মতি তত্ত্বকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন। যথাঃ
(ক) প্রকাশ্য সম্মতিঃ প্রকৃতির রাজ্যের অনিশ্চয়তা থেকে মুক্তি পাবার জন্য মানুষ প্রকৃতির রাজ্যে যে অধিকার ভোগ করে সেই অধিকারকে নিশ্চিত বা নিরাপদ করার জন্য রাষ্ট্র বা সরকারের প্রয়োজন। যে সম্মতির মাধ্যমে মানুষ এই রাষ্ট্রগঠন করে তাকে বলা হয় প্রকাশ্য সম্মতি।
(খ) অপ্রকাশ্য বা মৌন সম্মতিঃ অপ্রকাশ্য বা মৌন সম্মতি হল জন লকের দ্বিতীয় ভাগের সম্মতি। এই ক্ষেত্রে জনগণের সম্মতি অপ্রকাশ্য থাকে। অপ্রকাশ্য বা মৌন সম্মতি এমন এক প্রকারের সম্মতি যেখানে সম্মতিদাতা বুঝতে পারে না তার সম্মতি প্রদানের কথা। লকের মতে মৌন সম্মতির ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র মানুষের যে কোন অধিকারকে স্পর্শ করতে পারে।
পরিশেষঃ আলোচনার সবশেষে বলা যায় যে, লকের সম্মতি তত্ত্ব অনেকটা কৃত্রিম, অপূর্ণাঙ্গ ও অসঙ্গতিপূর্ণ। তবুও লক্ষ্য করা যায়, তিনি এই তত্ত্বের মাধ্যমে বুঝাতে চেয়েছেন সরকারের ক্ষমতার মূল ভিত্তি হচ্ছে জনসমর্থন ও গণ সম্মতি। সুতরাং এই দৃষ্টিকোণ থেকে জন লকের সম্মতি তত্ত্বকে অস্বীকার করার উপায় নেই।
Leave a comment