প্রশ্নঃ জন লককে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রথম প্রবক্তা বলা হয় কেন?

অথবা, লককে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রবক্তা বলা হয় কেন?

ভূমিকাঃ মন্টেস্কুকে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রবক্তা বলা হলেও ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রবক্তা হচ্ছেন আধুনিক সংসদীয় গণতন্ত্রের জনক জন লক। পরবর্তী সময়ে তার পথ ধরে ফরাসি দার্শনিক মন্টেস্কু সেটিকেই সংবর্ধন ও সম্প্রসারণের মাধ্যমে ক্ষমতার স্বতন্ত্রীকরণ নীতি গঠন করেছেন। তাই জন লকই হচ্ছে ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির প্রথম প্রবক্তা৷ 

ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতি সম্পর্কে লকের অভিমতঃ নিচের ক্ষমতার বিভাজন সম্পর্কে লকের অভিমত ব্যক্ত করা হলো-

ব্যক্তি স্বাধীনতাকামীঃ জন লক ছিলেন ব্যক্তি স্বাধীনতাকামী। তিনি ব্যক্তি স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করার জন্য তার মতবাদ ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের ধারণা উল্লেখ করেন।

সরকারের তিন ধরনের কাজ ও যোগ্যতাঃ লক বলেন যে, সরকারের তিন রকম কাজ সম্পাদন করার জন্য তিন ধরনের যোগ্যতা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু একই মানুষের ভেতর তিন ধরনের যোগ্যতা পাওয়া যায় না। তাই তিনি তিন ধরনের লোক দিয়ে তিন ধরনের কাজ করাতে চেয়েছিলেন।

তিন বিভাগের কাজের প্রকৃতি ভাগঃ তিনি বলেন, নির্বাহী বিভাগের কাজের প্রকৃতি এমন যে, তা সার্বক্ষণিক তৎপরতার দাবি রাখে। কিন্তু আইন প্রণয়নের জন্য সার্বক্ষণিক তৎপরতার কোনো প্রয়োজন নেই। রাষ্ট্র তার পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় আইন প্রণয়ন ও আইন বলবৎকরণের ক্ষমতা লাভ করে।  তাহলে যে ‘মানব চরিত্রের স্বাভাবিক দুর্বলতার’ কারণে এই ক্ষমতা রাষ্ট্র তার নিজ স্বার্থ রক্ষার কাজে ব্যবহার করার প্রবণতা অনুভব করবে এতে ব্যক্তি স্বাধীনতা সুনিশ্চিত হবে কিনা সে ব্যাপারেও সন্দেহের অবকাশ থাকে। এসব কারণে তিনি ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণের নীতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেছেন।

পরিশেষঃ উপর্যুক্ত কারণে লক তিনটি বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বিভাগের কথা বলেছেন যা আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের ভিত্তি। লক যদিও এই নীতির বিস্তারিত আলোচনা করেনি তারপরেও তিনি যেহেতু তিন বিভাগের কাজ বণ্টন ও পৃথকের কথা বলেছেন। তাই ক্ষমতা স্বতন্ত্রীকরণ নীতির তাকে প্রথম প্রবক্তা বলা হয়।