উদ্দিষ্ট ব্যক্তি: সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের আমার বাংলাগ্রন্থের অন্তর্গত ‘কলের কলকাতা’ রচনা থেকে সংকলিত উদ্ধৃতিটিতে চেয়ারের ওপর যার বসে থাকার কথা বলা হয়েছে, তিনি হলেন স্বয়ং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু।
লেখকের নিজের চোখকে অবিশ্বাসের কারণ : স্বাধীনতা আন্দোলনে যখন কলকাতা উত্তাল, তখন স্বভাবতই কিশাের লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায়ও মনে-প্রাণে জড়িয়ে পড়েছিলেন সেই আন্দোলনে। গ্রেপ্তার হওয়া বাড়িওয়ালা এবং স্বাধীনতা-সংগ্রামী রামদুলালবাবুকে দেখতে রামদুলালবাবুর দাদার সঙ্গে প্রেসিডেন্সি জেলে যান তিনি। ট্রাম থেকে নেমে লােহার প্রকাণ্ড সিংহদরজা পেরিয়ে, মাথা-হেঁট-করে জেলখানায় ঢােকেন তারা। এই সময়েই একটা গাড়ি থেকে একদল রাজনৈতিক বন্দি সেখানে এসে নামেন।
‘বন্দেমাতরম’ শব্দে জেলখানা কেঁপে ওঠে। লেখকরা জেলে ঢুকে একটু এগিয়ে বাঁ-দিকের শেষ ঘরটায় এসে উপস্থিত হন, যেটি ছিল জেলে বন্দিদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করার ঘর। সেখানে ঢুকে লেখক দেখেন যে, লােকভরতি ঘরের মেঝেতে শতরঞ্জি পাতা রয়েছে এবং সে-ঘরে একটিই চেয়ার টেবিল রয়েছে। আর চেয়ারে উপবিষ্ট রয়েছেন স্বয়ং নেতাজি। পরাধীন দেশের দেশপ্রেমিক কিশাের সুভাষ ছিলেন স্বভাবতই অত্যন্ত আবেগপ্রবণ। তা ছাড়া, সেই সময়কার যে-কোনাে বাঙালি কিশােরের কাছেই নেতাজি ছিলেন আদর্শ পুরুষ। সমস্ত দেশপ্রেমিক বাঙালির এই আদর্শ ব্যক্তিকে হঠাৎই চোখের সামনে দেখতে পেয়ে কিশাের সুভাষ তাই নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
Leave a comment