সমাজতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির অস্তিত্ব অপ্রয়োজনীয় প্রতিপন্ন হয়। এ ধরনের রাজনীতিক ব্যবস্থায় সমাজের সকল অংশের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা থাকে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর পরিবর্তে বিভিন্ন গণ-সংগঠন থাকে। সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার এই সমস্ত গণ-সংগঠন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর মত দাবি আদায়ের জন্য সরকারের উপর চাপসৃষ্টি করে না বা প্রাধান্য প্রতিষ্ঠার জন্য পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামিল হয় না। অর্থাৎ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর ভূমিকা সম্পর্কে আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক। এই অপ্রাসঙ্গিকতা সম্পর্কে ইতিমধ্যে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। যাইহোক চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কার্যাবলী বলতে মূলত উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কার্যাবলীকে বোঝায়। প্রকৃত প্রস্তাবে উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাতেই চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহের অস্তিত্বকে অপরিহার্য মনে করা হয়। এবং এই ধরনের রাজনীতিক ব্যবস্থাতেই চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির গুরুত্ব ও তাৎপর্য বেশী। বস্তুত উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির ভূমিকা বহু ও বিভিন্ন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর বহুবিধ কার্যাবলীর মধ্যে নিম্নলিখিতগুলি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

(১) সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে সংযোগ সাধন:

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরকারের সঙ্গে জনসাধারণের সংযোগ সাধনের গুরুদায়িত্ব পালন করে। এই সমস্ত গোষ্ঠীর মাধ্যমে জনগণের অভাব-অভিযোগ ও দাবি দাওয়া সরকারের গোচরে আসে। তারফলে সরকার অভাব-অভিযোগ নিরসনে এবং দাবি-দাওয়া পুরণে উদ্যোগী হয়। অর্থাৎ সরকার জনকল্যাণমূলক ভূমিকা পালন করে। আবার গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন বিষয় ও সমস্যাদি সম্পর্কে সরকারের অভিমত ও চিন্তাভাবনা এই সমস্ত গোষ্ঠীর মাধ্যমে জনগণের কাছে পৌঁছে যায়। এইভাবে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি সরকার ও জনসাধারণের মধ্যে সংযোগ সাধনের ব্যবস্থা করে।

(২) প্রশাসনিক ত্রুটি-বিচ্যুতির অবসান:

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি সরকারের কাজকর্মের উপর সদা সজাগ দৃষ্টি রাখে। সরকারের সিদ্ধান্ত ও কাজকর্মের মধ্যে কোন রকম ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে তা গোষ্ঠীগুলির নজরে আসে। গোষ্ঠীগুলি তখন সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে ব্যাপকভাবে প্রচারকার্য পরিচালনা করে। দেশবাসী সরকারের ত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে সম্যকভাবে অবহিত হওয়ার সুযোগ পায়। তারফলে সরকারকে সতর্ক হতে হয়। আমলাতান্ত্রিক পর্যায়ে ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলি দূর করার ব্যাপারে সরকারকে সর্বতোভাবে উদ্যোগী হতে হয়। এইভাবে সরকারী কাজকর্মের দুর্বলতা দূরীভূত হয় এবং ত্রুটিমুক্ত দক্ষ শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ উন্মুক্ত হয়।

(৩) সংবাদ ও তথ্যাদি সরবরাহ:

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ গোষ্ঠীস্বার্থের অনুকূলে ব্যাপক জনসমর্থন অর্জন এবং সরকারকে প্রভাবিত করার ব্যাপারে সব দিক থেকে সচেষ্ট হয়। এই উদ্দেশ্যে গোষ্ঠীগুলি নিজেদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তথ্যাদি ও সংবাদসমূহ সংগ্রহ ও সরবরাহ করে। আলাপ-আলোচনা, সভা-সমিতি, পুস্তক-পুস্তিকা, বিজ্ঞাপন প্রভৃতির মাধ্যমে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি প্রাসঙ্গিক ও প্রয়োজনীয় বহু ও বিভিন্ন তথ্য ও সংবাদ জনসাধারণের মধ্যে এবং সরকারী স্তরে সরবরাহ করে। সরকারের উপর কার্যকর প্রভাব কায়েম করার জন্য গোষ্ঠীগুলি উচ্চপদস্থ আমলা, আইনসভার সদস্য, প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তি এবং জনসাধারণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সংবাদ ও তথ্যাদি সরবরাহ করে।

(৪) রাজনীতিক সামাজিকীকরণ:

বর্তমানে উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বহু ও বিভিন্ন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। এই গোষ্ঠীগুলি সাধারণত কোন না কোন রাজনীতিক দলের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত থাকে। বস্তুত যে-কোন একটি রাজনীতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় চাপসৃষ্টিকারী প্রতিটি গোষ্ঠী পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে। এই চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি গোষ্ঠীর সদস্যদের নির্দিষ্ট রাজনীতিক মতাদর্শে অনুপ্রাণিত ও দীক্ষিত করে। এই উদ্দেশ্য গোষ্ঠীগুলি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানারকম উপায়-পদ্ধতি অবলম্বন করে। শুধু তাই নয়, জনসাধারণের মধ্যেও এই গোষ্ঠীগুলি সংশ্লিষ্ট রাজনীতিক মতাদর্শের অনুকূলে প্রয়োজনীয় প্রচারকার্য পরিচালনা করে। তারফলে জনসাধারণের মধ্যেও বিশেষ ধরনের রাজনীতিক মূল্যবোধ সঞ্চারিত হওয়ার সুযোগ ও সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়। এই সমগ্র প্রক্রিয়াটিকে সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বলা হয় রাজনীতিক সামাজিকীকরণ।

(৫) বিভিন্ন স্বার্থের গ্রন্থীভবন ও সংহতি সাধন:

উদারনীতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় বহু ও বিভিন্ন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর অস্তিত্ব পরিলক্ষিত হয়। এই গোষ্ঠীগুলি সমাজের বিভিন্ন অংশের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করে। বিভিন্ন জীবিকার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তিবর্গের এই গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে অভিব্যক্তি লাভ করে। এই সমস্ত স্বার্থের মধ্যে পরস্পর-বিরোধী স্বার্থও আছে। সমাজের সামগ্রিক সংহতির স্বার্থে এই সমস্ত স্বার্থের মধ্যে সংহতি সাধন আবশ্যক। অন্যথায় সমাজের ঐক্য ও সংহতি বিপন্ন হবে। এই অবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী সমাজের বিভিন্ন অংশের স্বার্থকে গ্রন্থিত করে এবং পরস্পর-বিরোধী স্বার্থের মধ্যে সংহতি সাধনের গুরুদায়িত্ব পালন করে।

(৬) বিদ্যমান রাজনীতিক ব্যবস্থা প্রসঙ্গে ভূমিকা:

উদারনীতিক গণতান্ত্রিক রাজনীতিক ব্যবস্থায় চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি কতকগুলি ক্ষেত্রে বহুলাংশে রাজনীতিক দলের মতই ভূমিকা গ্রহণ করে থাকে। বিদ্যমান রাজনীতিক ব্যবস্থার প্রতি প্রতিটি চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি ও মনোভাব থাকে। তদনুসারে প্রতিটি গোষ্ঠী হয় বিদ্যমান রাজনীতিক ব্যবস্থার সংরক্ষণের স্বার্থে উদ্যোগী ভূমিকা গ্রহণ করে, নয়ত বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তনের জন্য আন্দোলনের সামিল হয়। অর্থাৎ চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বিদ্যমান রাজনীতিক ব্যবস্থার সংরক্ষণ বা পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও সক্রিয় ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। সাম্রাজ্যবাদী ও ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে সমকালীন ভারতবর্ষের চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ ভারতের স্বাধীনতার জন্য জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সামিল হয়েছিল। আবার স্বদেশের স্বাধীনতা সংরক্ষণের জন্য সকল দেশের চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সক্রিয়ভাবে উদ্যোগী হয়।

(৭) সরকারী সিদ্ধান্ত ও আইনের ক্ষেত্রে ভূমিকা:

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি সরকারী সিদ্ধান্ত, নীতি ও আইন সম্পর্কে সদা সতর্ক থাকে। কারণ এই সমস্ত গোষ্ঠীর মুখ্য লক্ষ্য হল সরকারী সিদ্ধান্ত ও আইনকে গোষ্ঠীস্বার্থের অনুকূলে আনার জন্য সাধ্যমত সরকারকে প্রভাবিত করা। সরকারের কোন সিদ্ধান্ত বা আইন চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর স্বার্থের প্রতিকূল হলে সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠী তা পরিবর্তনের জন্য সবরকম উপায়-পদ্ধতি অবলম্বন করে। আবার সরকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, নীতি নির্ধারণ বা আইন প্রণয়নের প্রাক্কালে সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী বিভিন্নভাবে সরকারের উপর প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে। এই সবের উদ্দেশ্য হল গোষ্ঠীস্বার্থের অনুকূলে সরকারী নীতি, সিদ্ধান্ত ও আইন প্রণয়নকে প্রভাবিত করা। এই উদ্দেশ্যে গোষ্ঠীগুলি বিভিন্ন উপায়-পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে। এ ক্ষেত্রে গোষ্ঠীগুলি সাধারণত যে সমস্ত পদ্ধতি অবলম্বন করে সেগুলি হল সভা-সমিতি, বিক্ষোভ সমাবেশ, ধর্মঘট, সরকারের কর্তাব্যক্তি ও পদস্থ আমলাদের কাছে সরাসরি বক্তব্য পেশ, আইনসভার সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ প্রভৃতি। এই সমস্ত চাপের ফলশ্রুতি হিসাবে সরকারকে অনেক সময় বিতর্কিত আইন, সিদ্ধান্ত ও নীতি পরিবর্তন করতে হয় এবং অনেক সময় অভিপ্রেত আইন প্রণয়ন ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়। অর্থাৎ ক্ষেত্রবিশেষে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি সরকারী নীতি, সিদ্ধান্ত ও আইনের উৎস হিসাবে ভূমিকা পালন করে থাকে।

(৮) নির্বাচনী রাজনীতিতে ভূমিকা:

চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীসমূহ সরাসরি নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করে না। তবে নির্বাচনী রাজনীতিতে গোষ্ঠীগুলির কোন ভূমিকা থাকে না, তা কিন্তু নয়। সকল দেশেই চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি কোন-না-কোন রাজনীতিক দলের পৃষ্ঠপোষকতায় সংগঠিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। এই কারণে নির্বাচনের প্রাক্কালে সাধারণত প্রতিটি চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী তার পৃষ্ঠপোষক রাজনীতিক দলটির স্বার্থের অনুকূলে ভূমিকা পালন করে। দলের হয়ে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী জনসাধারণের কাছে অর্থ সংগ্রহ করে, রাজনীতিক প্রচারকার্য পরিচালনায় অংশগ্রহণ করে, দলের সমর্থনে গোষ্ঠীর সদস্যদের নির্বাচনের সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন কাজকর্মে নিযুক্ত করে। ক্ষেত্রবিশেষে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কোন কোন নেতা রাজনীতিক দলের মনোনীত প্রার্থী হিসাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সামিল হন।

(৯) দলীয় সদস্যদের অন্যতম উৎস:

সকল দেশেই রাজনীতিক দলগুলির সঙ্গে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর যোগাযোগ থাকে। গোষ্ঠীগত কাজকর্মে অংশগ্রহণের সূত্রে গোষ্ঠীর নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে রাজনীতিক দলের প্রত্যক্ষ যোগাযোগ স্থাপিত হয়। এইভাবে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীর কারো কারো মধ্যে রাজনীতিক জীবন সম্পর্কে আকর্ষণের সৃষ্টি হয়। কালক্রমে গোষ্ঠীর এই সমস্ত সদস্য সংশ্লিষ্ট রাজনীতিক দলের কাজকর্মে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন ও দলের সদস্যপদ লাভ করেন। এইভাবে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি থেকে রাজনীতিক দলের সদস্য সংগৃহীত হয়। এই সমস্ত সদস্যের অনেকেই কালক্রমে বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ হিসাবে প্রতিষ্ঠা অর্জন করেন।

(১০) সরকারের গণতান্ত্রিক চরিত্র সংরক্ষণ:

সাম্প্রতিককালের প্রশাসনিক কার্যকলাপ এবং আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া-পদ্ধতি অতিমাত্রায় জটিল প্রকৃতির। গণতান্ত্রিক ধ্যান-ধারণার বিকাশ ও বিস্তারের ফলে প্রশাসন ও আইন প্রণয়ন বিশেষভাবে দায়িত্বশীল কাজে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে জনসাধারণের সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া ও অভিমত অনুধাবন করে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষকে যাবতীয় সরকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে এবং আইন প্রণয়নের ব্যবস্থা করতে হয়। জনমতকে উপেক্ষা করে সরকারী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে বা আইন প্রণয়ন করলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ব্যর্থ হতে বাধ্য। এ ক্ষেত্রে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির ইতিবাচক ভূমিকা বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির মাধ্যমে শাসন-বিভাগ ও আইন-বিভাগের কর্তাব্যক্তিরা বিশেষ কোন বিষয়ে জনমতের গতি-প্রকৃতি অনুধাবন করতে পারে। এবং তদনুসারে সরকার পরিচালিত হয়। এইভাবে সরকারের গণতান্ত্রিক চেহারা চরিত্র বজায় থাকে।

(১১) অব্যাহত জনসংযোগের ব্যবস্থা:

সাধারণত নির্বাচনী রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কোন রাজনীতিক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে জনসাধারণের সঙ্গে রাজনীতিক দলগুলির সংযোগ সাধিত হয়। অন্যান্য সময়ে জনগণের সঙ্গে রাজনীতিক দলগুলির যোগাযোগ দুর্বল হয়ে পড়ে। কিন্তু জনসংযোগের ক্ষেত্রে চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলির কার্যধারা সব সময়ে অব্যাহত থাকে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠী হল একটি সংগঠিত ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে রাজনীতিক জীবনধারার সঙ্গে জনসাধারণের সংযোগ অব্যাহত থাকে। চাপসৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি সরকারের কাজকর্ম সম্পর্কে জনগণকে অবহিত করে। গোষ্ঠীগুলি সরকারের জনস্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত ও কার্যকলাপ সম্পর্কে সমালোচনা করে এবং নিজের বক্তব্য তুলে ধরে। আবার ক্ষেত্রবিশেষে গোষ্ঠীগুলি সরকারী সিদ্ধান্ত ও নীতির অনুকূলে জনগণের কাছে অভিমত ব্যক্ত করে।