ঘুর রাজ্যের উত্থান:

গজনির সুলতান মামুদ সতেরোবার ভারত আক্রমণ করলেও পাঞ্জাব ও মুলতান ছাড়া কোনো ভারতীয় অঞ্চলে গজনির শাসন কায়েম করেননি। সুলতান মামুদের মৃত্যুর পর তাঁর দুর্বল বংশধরদের আমলে গজনি তার পূর্বগৌরব দ্রুত হারিয়ে ফেলে এবং মধ্য-এশিয়ার রাজনীতিতে দুটি নতুন রাজ্যের উদ্ভব ঘটে। এগুলি হল ‘ঘুর’ ও ‘খারিজম’ রাজ্য। ঘুর রাজ্য গড়ে উঠেছিল আফগানিস্তানের উত্তর-পশ্চিমে গজনি ও হীরাটের মধ্যবর্তী পার্বত্য অঞ্চলে। খারিজম রাজ্য ছিল ইরানকে কেন্দ্র করে। দশম শতকে ইরানীয় তাজিক বংশ ঘুর রাজ্যে স্বাধীনভাবে শাসন পরিচালনা করত। এই বংশ ইতিহাসে ‘সাসাবনী বংশ” নামে বেশি পরিচিত। সুলতান মামুদ ১০০৯-১০ খ্রিস্টাব্দে ঘুরের শাসক মহম্মদ-বিন্-সুরিকে পরাজিত করে ঘুর রাজ্যটি গজনির অন্তর্ভুক্ত করে নেন। অতঃপর ঘুরিরা গজনির সামন্ত হিসেবে শাসনকার্য চালাতে থাকেন। কিন্তু ঘুর রাজ্যের স্বাধীনতাস্পৃহা সদা জাগরুক ছিল। মামুদের মৃত্যুর পর গজনি কিছুটা দুর্বল হয়ে গেলে ঘুরিরাও স্বাধীনতা লাভের জন্য উন্মুখ হয়ে ওঠেন। গজনির সুলতান বাহরাম-এর আমলে ঘুরের সৈফুদ্দিন ঘুরি গজনি আক্রমণ করে জয়লাভ করেন। অবশ্য তা ছিল ক্ষণস্থায়ী। এবং পরিণামে বাহরাম সৈফুদ্দিনকে বন্দি ও হত্যা করেন। কিন্তু আলাউদ্দিন হুসেন-এর আমলে ঘুর রাজ্য যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে ওঠে। আলাউদ্দিন গজনি আক্রমণ করে ওই সুসজ্জিত নগরীকে আগুনে ভস্মীভূত করেন এবং ‘জাহানসোজ’ বা ‘পৃথিবী-দহনকারী’ উপাধি ধারণ করেন। আলাউদ্দিনের সময় থেকেই ঘুর রাজ্যের উত্থান সূচিত হয়। তিনি বামিয়ান, তুর্কিস্তান, জিরুন, বাস্ত, গর্জিস্তান, হীরাট প্রভৃতি অঞ্চল ঘুর রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত করেন। অবশ্য রাজত্বের শেষদিকে বল্খ, হীরাট ও তুর্কিস্তান তাঁর হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিল। আলাউদ্দিনের পুত্র সৈফুদ্দিনের মৃত্যুর পর ঘুর রাজ্যের শাসক হন তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র গিয়াসউদ্দিন। গিয়াসউদ্দিন গজনিসহ কয়েকটি হৃত অঞ্চল পুনরুদ্ধার করেন। রাজ্যবিস্তারের সূত্রে খারিজম রাজ্যের সাথে ঘুর রাজ্যের সংঘাত দেখা দেয়। খারিজম সাম্রাজ্যের উত্থানের ফলে মধ্য-এশিয়ায় ঘুরিদের রাজ্যলিপ্সা ধাক্কা খায়। খোরাসানের ওপর কর্তৃত্বের প্রশ্নে এই দুই শক্তির দ্বন্দ্ব প্রবল আকার ধারণ করে। শেষ পর্যন্ত শক্তিশালী খারিজম শাহ্-র হাতে ঘুরিরা পরাজিত হয়। উত্তর-পশ্চিমে কেবল হীরাট ও বল্খ ঘুরিদের দখলে থাকে। এমতাবস্থায় মধ্য-এশিয়ার পরিবর্তে ভারতবর্ষের দিকে ঘুরিদের সাম্রাজ্যবাদী দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হয়।

মহম্মদ ঘুরির ভারত অভিযান :

ঘুর রাজ্যের শাসক গিয়াসউদ্দিন গজনি পুনর্দখল করার পর তাঁর ভাই শিহাবউদ্দিন ওরফে মুইজউদ্দিন মহম্মদকে স্বাধীনভাবে তা শাসন করার দায়িত্ব দেন (১১৭৩ খ্রিঃ)। অবশ্য শিহাবউদ্দিন নিজমুদ্রায় জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার নাম উল্লেখ করে নিজেকে অধীনস্থ শাসক হিসেবে বর্ণনা করে এক অনবদ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। তাই অধ্যাপক মহম্মদ হাবিব মন্তব্য করেছেন যে, প্রাচ্যের রাজবংশগুলির মধ্যে একমাত্র সামানিদবংশ ভ্রাতৃকলহ ও দ্বন্দ্ব থেকে মুক্ত ছিল এবং এটিই ছিল তাদের সাফল্য ও অগ্রগতির প্রধান কারণ। যাই হোক্, শিহাবউদ্দিনই ভারত-ইতিহাসে ‘মহম্মদ ঘুরি’ নামে সমধিক পরিচিত এবং তাঁর নেতৃত্বেই শুরু হয়েছিল ভারতের বিরুদ্ধে তুর্কি-আফগানদের সফল ও সুদূরপ্রসারী অভিযান। ব্যক্তিগতভাবে মহম্মদ ঘুরি ছিলেন উচ্চাকাঙ্ক্ষী ও কর্মোদ্যোগী। সামরিক গৌরব অর্জনের সাথে সাথে একটা সুবৃহৎ সাম্রাজ্যের অধীশ্বর হওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর প্রবল। প্রতিদ্বন্দ্বী খারিজম সাম্রাজ্যের সাথে সংঘর্ষ এড়িয়ে নিজ উদ্দেশ্যসিদ্ধির জন্য তিনি হিন্দুকুশ পর্বত অতিক্রম করে ভারত ভূখণ্ড দখলের কর্মসূচি নেন। তা ছাড়া আফগান সীমান্তে পাঞ্জাব ও লাহোরে তখনও চলছিল ঘুরিদের অন্যতম শত্রু গজনিবংশীয়দের শাসন। সুলতান মামুদের বংশধর খসরু শাহ (বা খসরু মালিক) তখন পাঞ্জাবে অধিষ্ঠিত ছিলেন। তাই মহম্মদ ঘুরি প্রথমেই পাঞ্জাব দখল করে শত্রু সাম্রাজ্যের অবসান ঘটাতে উৎসাহ বোধ করেন। এই রাজনৈতিক প্রয়োজনীয়তার সাথে যুক্ত হয়েছিল আর্থিক ও ধর্মীয় প্রেরণা। ভারতবর্ষের ধনসম্পদ সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট অবহিত ছিলেন। ভারত আক্রমণ করে সেইসব সম্পদ সংগ্রহ করে নিজ সামরিক শক্তিকে দৃঢ় করার পরিকল্পনাও তাঁর ছিল। অধিকাংশ ঐতিহাসিক মনে করেন, মহম্মদ ঘুরির ভারত আক্রমণের পশ্চাতে ইসলামধর্মের প্রসার এবং পৌত্তলিকতার অবসান ঘটানোর একটা গোপন ইচ্ছাও সক্রিয় ছিল। তবে সেটা ছিল একান্তই ইচ্ছা, মূল লক্ষ্য নয়।

খারিজম শাহি রাজ্যের শক্ত প্রতিরোধ যেমন মহম্মদ ঘুরিকে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হওয়ার ব্যাপারে নিস্পৃহ করেছিল, তেমনি দ্বাদশ শতকে উত্তর ভারতের রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতা তথা শক্তিশালী কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের অভাবজনিত শূন্যতা তাঁকে ভারত-আক্রমণে উৎসাহিত করেছিল। সুলতান মামুদের আক্রমণ থেকে ভারতীয় রাজন্যবর্গ কোনো শিক্ষাই নেননি। মামুদের মৃত্যুসংবাদে তাঁরা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন এবং পুনরায় লিপ্ত হয়েছিলেন আত্মকলহে। মামুদের পরেও উত্তর-পশ্চিম সীমান্তপথ ধরে যে বহিঃশত্রুর আক্রমণ ঘটতে পারে, এই দূরদৃষ্টি তাঁদের ছিল না। উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত অঞ্চলে সুলতান মামুদের দুর্বল বংশধরদের রাজত্ব উত্তর ভারতের রাজন্যবর্গের কাছে ভীতি নয়, ভরসার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তাঁরা পাঞ্জাব-লাহোরের গজনিবংশীয়দের শাসনকে বিব্রত না করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতিকে যথার্থ বিবেচনা করেছিলেন। এতে অতিরিক্ত সুবিধা পেয়েছিলেন মহম্মদ ঘুরি। মুলতান এবং সিন্ধু-অঞ্চলও গজনির মামুদ দখল করেছিলেন। কিন্তু তাঁর মৃত্যুর পরে পরেই এগুলি গজনির কর্তৃত্ব থেকে স্বাধীন হয়ে যায়। মহম্মদ ঘুরির আক্রমণের প্রাক্কালে মুলতান এবং সিন্ধুতে যথাক্রমে ‘কার্মার্থীয়’ এবং ‘সুমার’ নামক স্থানীয় উপজাতিগোষ্ঠীর কর্তৃত্ব কায়েম ছিল।

সীমান্তবর্তী সিন্ধু, পাঞ্জাব এবং মুলতান ক্ষমতাসীন দুর্বল মুসলমান শাসনব্যবস্থা যেমন মহম্মদ ঘুরির ভারত-অভিযানকে সম্ভাবনাময় করেছিল, তেমনি উত্তর ভারতের রাজপুত শক্তিগুলির গোষ্ঠীদ্বন্দ্বও তাঁর সাফল্যের সহায়ক হয়েছিল। সুলতান মামুদ কনৌজ পর্যন্ত অগ্রসর হলেও গাঙ্গেয় সমভূমির পূর্বদিকে তাঁর ধ্বংসলীলা ও লুণ্ঠন ততটা বিধ্বংসী ছিল না। তাই মামুদের অভিযানের অল্পকালের মধ্যেই কনৌজ তার গৌরব পুনরুদ্ধার করে এবং বিভিন্ন রাজপুতগোষ্ঠী মর্যাদার প্রতীক ‘কনৌজ’ দখলের প্রতিযোগিতায় আবার মত্ত হয়ে ওঠে। দিল্লি-আজমিরে চৌহানবংশ, মালবে পরমারবংশ, গুজরাটের নিকট কাথিয়াবাড়ে শোলাঙ্কিবংশ, কনৌজে গাহড়বালবংশ, বুন্দেলখণ্ডের চান্দেলবংশ ইত্যাদি প্রত্যেকেই নিজ নিজ সীমানাবৃদ্ধির ইঁদুরদৌড়ে লিপ্ত থেকে নিজেদেরই অন্তঃসারশূন্য করতে থাকে। তৃতীয় পৃথ্বীরাজের নৃেতৃত্বে চৌহানরা এই সময় বেশ শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। শোলাঙ্কিরাও এই সময় চিতোর মালব প্রভৃতি দখল করে নিলে চৌহানদের সাথে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। শোলাঙ্কিরা এই সংঘর্ষের ফলে দুর্বল হয়ে পড়ে। সেই সুযোগে পরমাররা মালব পুনরুদ্ধার করে নেয়। পৃথ্বীরাজ পাঞ্জাব আক্রমণ করে ‘ভাতিন্দা’ দখল করতে সক্ষম হন। চান্দেল্লরাজ্য আক্রমণ করে তিনি ‘মাহবা’ দখল করেন। কিন্তু পৃথ্বীরাজের সামরিক অগ্রগতি অন্যান্য রাজপুত রাজাদের ঈর্ষান্বিত করে তোলে। সামাজিক কারণেও অন্যান্য রাজপুত রাজাদের সাথে পৃথ্বীরাজের সুসম্পর্ক ছিল না। চারণ কবি চাঁদ বরদাই রচিত ‘পৃথ্বীরাজরসো’ থেকে এই চৌহান রাজার রোমাঞ্চকর বিবাহ-কাহিনি এবং সামাজিক বিরোধের কাহিনি জানা যায়। কথিত আছে, পৃথ্বীরাজ কনৌজের রাজকন্যা সংযুক্তা কে তাঁর পিতার অমতে জোরপূর্বক, অবশ্য সংযুক্তার ইচ্ছানুযায়ী বিবাহ করার জন্য কনৌজরাজ জয়চাঁদ প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হন এবং পৃথ্বীরাজের বিরুদ্ধে আক্রমণকারী মহম্মদ ঘুরিকে সাহায্য করেন। এইভাবে ব্যক্তিগত ক্রোধে ও প্রতিশোধস্পৃহা চরিতার্থ করতে গিয়ে জয়চাঁদ দেশদ্রোহিতা করেন। একইভাবে চেদি, কলচুরি বা গুহিলবংশীয় রাজপুতরাও ক্রমাগত সংঘর্ষে লিপ্ত থেকে মহম্মদ ঘুরির ভারত-বিজয়ের পথ প্রশস্ত করে দেয়।

উত্তর-পূর্ব ভারতে পাল ও সেনবংশের নেতৃত্বে শক্তিশালী রাজতন্ত্রের যে সম্ভাবনা দশম-একাদশ শতকে অনুভূত হচ্ছিল, দ্বাদশ শতকে তা-ও বিলীন হয়ে যায়। রামপালের নেতৃত্বে পতনোন্মুখ পালসাম্রাজ্য নবজীবন লাভ করলেও, দ্বাদশ শতকে তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে পালসাম্রাজ্য আবার বিচ্ছিন্নতার অন্ধকারে ঢাকা পড়ে যায়। মহম্মদ ঘুরির আক্রমণের সময় উত্তর ভারতের ক্ষুদ্রাংশে পালবংশ অগৌরব ও অবহেলার মাঝে টিকেছিল মাত্র। সেনবংশীয় রাজারা বাংলাদেশে পাল সাম্রাজ্যের ধ্বংসস্তূপের ওপর নতুন সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করলেও, বিজয়সেন (১০৯৭-১১৫৯ খ্রিঃ) বা বল্লালসেন (১১৫৯-‘৭০ খ্রিঃ)-এর আমলে রাজনৈতিক কর্তৃত্ব লক্ষ্মণসেন (১১৭০-১২০৬ খ্রিঃ)-এর আমলে শিথিল হয়ে পড়েছিল। এই সুযোগে মাথা চাড়া দিয়েছিল সামন্ততান্ত্রিক প্রবণতা। এইরূপ রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে মহম্মদ ঘুরি ভারত-আক্রমণ করে খুব সহজেই সাফল্য অর্জন করেন।

১১৭৫ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরি গোমাল গিরিপথের মধ্যে দিয়ে সিন্ধু-উপত্যকায় উপস্থিত হন এবং কার্মার্থীয় শাসককে পরাজিত করে ‘মুলতান’ দখল করেন। পরের বছরেই তিনি উচ্-সহ সিন্ধু দখল করেন। ১১৭৮ খ্রিস্টাব্দে মহম্মদ ঘুরি রাজপুতানার মরুভূমি অতিক্রম করে গুজরাট দখলের চেষ্টা করেন। কিন্তু মাউন্ট আবুর নিকট ‘অনহিলবারের যুদ্ধে’ গুজরাটরাজ ভীমদেবের হাতে পরাজিত ও বিধ্বস্ত হয়ে স্বরাজ্যে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন। এই পরাজয়ের পরে ঘুরি উপলব্ধি করেন যে, পাঞ্জাবে একটি সুদৃঢ় ঘাঁটি না-থাকলে ভারতের বিরুদ্ধে সাফল্য অর্জন সহজ হবে না। তাই তিনি প্রথমে পাঞ্জাবের গজনিবংশীয় শাসক খসরু মালিকের বিরুদ্ধে অভিযান পাঠান। ১১৭৯ খ্রিস্টাব্দে পেশোয়ার তাঁর দখলে আসে। ১১৮৫ খ্রিস্টাব্দে আবার পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ঘুরি শিয়ালকোট পর্যন্ত অগ্রসর হন। খসরু মালিক এবং খোকর উপজাতির দৃঢ় প্রতিরোধের মুখে মহম্মদ ঘুরি আপাতত আর অগ্রসর হওয়া থেকে বিরত থাকেন। অতঃপর মহম্মদ ঘুরি খসরু মালিকের শত্রু জম্মুর রাজা চক্রদেবের সাথে হাত মিলিয়ে পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে অগ্রসর হন (১১৮৬ খ্রিঃ)। কিন্তু সোজাপথে লাহোর দখল করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি চাতুরির আশ্রয় নেন এবং মিত্রতার অজুহাতে খসরু মালিককে আমন্ত্রণ জানিয়ে আচমকা বন্দি করেন এবং লাহোর অধিকার করেন। অতঃপর ঘুরি দিল্লি ও গাঙ্গেয় দোয়াব অভিমুখে অগ্রসর হবার সিদ্ধান্ত নিলে চৌহানরাজ পৃথ্বীরাজের সাথে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে পড়ে।