সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প থেকে গৃহীত লেখক-কৃত এই উক্তিটিতে ডাকাত সর্দার সৌখীর বৃদ্ধা, বিধবা মায়ের কথা বলা হয়েছে। পাঁচ বছর এক রাতে জেল থেকে বাড়ি ফিরে এসে সৌখী যখন খই-মুড়ি খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে, তখন চিন্তায় তার মার ঘুম আসতে চাইছিল না। ছেলের দেওয়া নতুন কম্বলেও যেমন তার পা দুটি গরম হচ্ছিল না, তেমনি সৌখীর নাক ডাকার একঘেয়ে শব্দও তার ঘুমের অসুবিধার কারণ হচ্ছিল। নানাপ্রকার দুর্ভাবনায় তার মাথা তখন গরম হয়ে উঠেছিল। সবচেয়ে বড়াে ভাবনা ছিল, পরদিন সকালে সে ছেলেকে কী খেতে দেবে। রাতটা তাে কোনােরকমে ব্যাবসার খইমুড়ি দিয়ে সে চালিয়ে দিয়েছে, কিন্তু পরদিন কী হবে? তার দুশ্চিন্তা রাতে হঠাৎ বাড়ি ফিরে এসে এদিনও যদি সৌখী ভাত খেতে চাইত, তবে যে কী হত! মা জানে, সৌখী আলুচচ্চড়ি খেতে খুব ভালােবাসে। কতকাল হয়তাে জেলে এসব খেতে পায়নি। ছেলেকে ভাত ও আলুচচ্চড়ি খাওয়াতে হলেও চাল, আলু ও সরষের তেল কেনা দরকার। কিন্তু অত পয়সা যে তার নেই!

সৌখীর মা কীভাবে এই সমস্যা থেকে নিজেকে মুক্ত করবে, তা বুঝতে পারে না। সৌখীর মায়ের এইসব সমস্যাপূর্ণ ভাবনার কথাই এখানে লেখক জানিয়েছেন—ভেবে যার কোনাে কুলকিনারা সে করতে পাচ্ছিল না।

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পে আমরা দেখি যে, পাঁচ বছর আগে ডাকাত-সর্দার সৌখী শেষবারের মতাে জেলে গেলে প্রথম দুবছর তার অনুচররা ঠিকমতাে তার মার হাতে প্রতি মাসে টাকা পাঠায়। কিন্তু পরবর্তীতে তারা টাকা দেওয়া সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। ফলে অভাবের তাড়নায় বাধ্য হয়ে নাতি ও পুত্রবধূকে বেয়াই এর বাড়িতে রেখে এসে একাকী দুঃখ-দারিদ্র্য দিন কাটাতে থাকে সে। জেলে যাওয়ার পাঁচ বছর পর হঠাৎই একদিন রাতে সৌখী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলে মা তাকে সে রাতে খই-মুড়ি খেতে দেয়। কিন্তু পরদিন সকালে ছেলেকে তার প্রিয় আলুচচ্চড়ি দিয়ে ভাত খাওয়ানাের পয়সা জোগাড় করতেই সে মাঝরাতে মাতাদীন পেশকারের দরজার বাইরে থেকে তাদের দামি ঘটি চুরি করে। সেই ঘটি নগদ চোদ্দো পয়সায় বিক্রি করে প্রয়ােজনীয় জিনিসগুলি কিনে আনে সৌখীর মা।

সকালে যখন সৌখী বিছানায় নিশ্চিন্তে ঘুমােচ্ছিল এবং তার মা উনুনে আলুচচ্চড়ি চাপিয়েছিল—তখনই বাসনওয়ালা এবং পেশকারসাহেব-সহ দারােগাবাবু এসে উপস্থিত হন তাদের বাড়ি। তাদের দেখেই সৌখীর মায়ের বুক কেঁপে ওঠে। তখনই সৌখীর মা মনে করে যে, ডাকাতি সমর্থ পুরুষের কাজ, গর্বের জীবিকা, তার স্বামী-পুত্রের ন্যায্য অধিকারের পেশা। ডাকাতি করে জেলে যাওয়াটা দুর্দৈব মাত্র। কিন্তু সামান্য ছিচকে চুরির দায়ে তার বাড়িতে পুলিশ আসতেই তার বুক কেঁপে উঠেছিল। লজ্জায় তার মাথা কাটা যাচ্ছিল।

সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের ডাকাত-সর্দার সৌখীর অনুচররা মাসােহারা বন্ধ করে দেওয়ায় অভাবের তাড়নায় মা সৌখীর বউ এবং শিশুপুত্রকে তার বেয়াই এর বাড়িতে রেখে এসে খই-মুড়ি বিক্রি করে দুঃখ-দারিদ্র্যে একাকী দিন কাটাতে থাকে। একদিন রাতে সৌখী জেল থেকে ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরলে মা তাকে সেরাতে খই-মুড়ি খেতে দেয়। কিন্তু পরদিন সকালে সৌখীকে তার প্রিয় আলুচচ্চড়ি দিয়ে ভাত খাওয়ানাের জন্য পয়সা জোগাড় করতেই বাধ্য হয়ে সে মাঝরাতে মাতাদীন পেশকারের বাড়ি থেকে তাদের দামি ঘটি চুরি করে। সকালে বাসনওয়ালার দোকানে তা চোদ্দো আনা পয়সায় বিক্রি করে তা দিয়ে প্রয়ােজনীয় জিনিসগুলি কিনে আনে সে। সকালে যখন সৌখী বিছানায় নিশ্চিন্তে ঘুমােচ্ছিল এবং তার মা উনুনে আলুচচ্চড়ি চাপিয়েছিল—তখনই তাদের বাড়িতে বাসনওয়ালা এবং পেশকারসাহেব-সহ দারােগাবাবু এসে হাজির হয়।

দারােগা-পুলিশ দেখে লজ্জায় সৌখীর মা তার অভিযােগ অস্বীকার করতে পর্যন্ত ভুলে যায়। একবার মাত্র সৌখীর দিকে দৃষ্টিপাত করে মাথা নীচু করে নেয় সে। কারণ ডাকাতি করা তার সমর্থ স্বামী-পুত্রের অহংকারের কাজ, সেখানে সে কিনা ছিঁচকে চুরির দায়ে ধরা পড়ল। হই-হট্টগােলে ইতিমধ্যেই ঘুম থেকে জেগে ওঠা সৌখী বুঝতে পারে যে, চরম অভাবের তাড়নায় মাত্র চোদ্দো আনা পয়সা জোগাড় করার জন্য ছেলে-অন্ত-প্রাণ তার মা শেষমেষ একটা ঘটি চুরি করে ফেলেছে।

প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক সতীনাথ ভাদুড়ীর ‘ডাকাতের মা’ ছছাটোগল্পে ডাকাত সর্দার সৌখীর মায়ের কথাই এখানে বলা হয়েছে। শীতকালে মাথা পর্যন্ত কম্বল দিয়ে মুড়ে না শুলে সৌখীর মায়ের ঘুমের অসুবিধা হয়। কিন্তু বেশ কয়েকবছর আগে এই অভ্যাসটাই তাকে অসুবিধায় ফেলেছিল। কোনাে-এক শীতের রাতে সে যখন কম্বল মুড়ে ঘুমােচ্ছিল, তখন রাতদুপুরে সৌখী ফিরে এসে দরজায় নিয়মমতাে সাংকেতিক টোকা দিলেও তার মায়ের কানে সেশব্দ পৌঁছােয় না। অনেক ডাকাডাকির পর অবশেষে সে জেগে ওঠে এবং দরজা খােলে। প্রচণ্ড রেগে গিয়ে সৌখী তখন মাকে খুব মারধাের করে এবং এই বলে শাসানি দেয় যে, অমনভাবে নাকমুখ ঢেকে সে যদি আর কোনােদিন মাকে ঘুমােতে দেখে, তবে তাকে খুন করে ফেলবে। ছেলের হাতে মার খেয়ে এবং এই শাসানি শুনে সৌখীর মা কিন্তু মােটেও দুঃখিত বা অপমানিত বােধ করেনি, বরং সে নিজের ভুল বুঝতে পারে। তাই, ঘুমের অসুবিধা হলেও’, জেলে-থাকা ছেলের নির্দেশমতাে পাঁচ বছর ধরে একদিনের জন্যও সৌখীর মা শীতে নাকমুখ ঢেকে শােয়নি। অবশ্য তার গায়ের কম্বলটা পুরােনাে হওয়ার জন্য এবং তার রক্তের জোর কমে যাওয়ার কারণেও ঠান্ডায় তার ঘুমের অসুবিধা হচ্ছিল।

ছােটোগল্প হিসেবে ‘ডাকাতের মা’ কতটা সার্থক আলােচনা করাে।

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্পের মূল চরিত্র কে—সৌখী না তার মা?

ডাকাতের মা গল্পে একটি ডাকাত পরিবারের কথা যেভাবে ফুটে উঠেছে তা আলােচনা করাে।

ডাকাতের মা গল্পে ন্যায়-অন্যায় বােধ যেভাবে আবর্তিত হয়েছে তা নিজের ভাষায় বুঝিয়ে লেখাে।

ডাকাতের মা ছােটোগল্প অবলম্বনে ডাকাত-সর্দার সৌখীর চরিত্র আলােচনা করাে।

‘ডাকাতের মা’ গল্পে সৌখীর বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে প্রবেশ করা থেকে শুরু করে ঘরে ঢােকা অবধি সময়কালের বিস্তৃত বর্ণনা দাও।

শেষবার সৌথী জেলে যাবার পর তার পরিবার কীভাবে পাঁচ বছর অতিবাহিত করেছিল তা ডাকাতের মা’ গল্প অবলম্বনে লেখাে।

ডাকাতের মা ছছাটোগল্প অবলম্বনে সৌখীর মায়ের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।

ডাকাতের মা ছোটগল্প অবলম্বনে মাতাদীন পেশকারের চরিত্র বিশ্লেষণ করাে।

‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে দারােগাবাবুর চরিত্র বর্ণনা করাে।

ডাকাতের মায়ের মাতৃত্ববােধ আলােচনা করাে।

ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে সৌখীর মার লােটা চুরির বিস্তৃত বিবরণ দাও।

ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে কীভাবে লােটা চুরির কিনারা হল তা আলােচনা করাে।

বাড়ির চৌহদ্দির মধ্যে সৌখীর প্রবেশের আগে বিছানায় শুয়ে কী কী কথা ভাবছিল সৌখীর মা-‘ডাকাতের মা’ ছােটোগল্প অবলম্বনে তা বর্ণনা করাে।

‘ডাকাতের মা’ গল্প অবলম্বনে মাদীন পেশকার এবং বাসনওয়ালার সাক্ষাৎকার নিজের ভাষায় লেখাে।

রাতবিরেতে সৌখীদের বাড়িতে ঢােকার আগে বহিরাগত ব্যক্তি দরজায় কীভাবে টোকা দিয়ে তার পরিচয় জ্ঞাপন করত তা ডাকাতের মা ছােটোগল্প অবলম্বনে লেখাে। গল্প অনুসারে ডাকাত সর্দার সৌখীর অনুচরদের পরিচয় দাও।

ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে সৌখীর জেলজীবনের পরিচয় দাও।

ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে সৌখীর দ্বিতীয় স্ত্রীর পরিচয় দাও।

“মা তখনও মেঝেতে পড়ে ডুকরে কাঁদছে।”—প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মায়ের ডুকরে কাদার কারণ আলােচনা করাে।

“মেয়েমানুষের আর কত আক্কেল হবে?” -বক্তার এ কথা ভাবার কারণ কী?

“দিনকালই পড়েছে অন্যরকম!” -বক্তার এ কথা বলার কারণ আলােচনা করাে।

“কী কপাল নিয়ে এসেছিল।” -বক্তার এরূপ উক্তির কারণ ডাকাতের মা গল্প অবলম্বনে লেখাে।

“ওরা কি ডাকাত দলের যুগ্যি;” -বক্তার এ কথা বলার কারণ বিশ্লেষণ করাে।

“এ কি কম দুঃখের কথা।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বক্তার একথা বলার কারণ আলােচনা করাে।

“কম্বলখানার বয়স ক’বছর হবে তার হিসাব করতে গিয়ে বাধা পড়ে।” -ডাকাতের মা গল্প অনুসরণে কম্বলের প্রসঙ্গটি কীভাবে এসেছে তা বিশদে আলােচনা করাে।

“প্রতি মুহূর্তে বুড়ি এই প্রশ্নের ভয়ই করছিল।” -বুড়ি কোন্ প্রশ্নের ভয় করছিল এবং কেন?