রচনা বাংলা দ্বিতীয় পত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ে রচনা লেখার প্রয়োজন হয় তেমনি একটি বিষয় হলো ঘুড়ি। আমি আমার শিক্ষার্থীদের জন্য ঘুড়ি – রচনা যথাযথভাবে লেখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা পরীক্ষায় ঘুড়ি – রচনা লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।
ঘুড়ি হল একপ্রকার খেলনা যা মানুষ শখ করে আকাশে উড়াই। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুড়ি উড়ানো হয় তবে বাংলাদেশ এবং ভারতে এর প্রচলন সবচেয়ে বেশি রয়েছে। প্রিয় শিক্ষার্থী তোমরা এই ঘুড়ি রচনা পড়ে আর যে রচনা লিখতে পারবে সেগুলো আমি নিচে তুলে ধরলাম –
ঘুড়ি – রচনা
আমার প্রিয় শখ
ঘুড়ি নিয়ে কিছু কথা
একটি ঘুড়ির আত্মকথা রচনা
ভূমিকা
ঘুড়ি একপ্রকার খেলনা যা মানুষ শখ করে আকাশে উড়াই। এই পৃথিবীতে এক এক মানুষের শখ একেক রকম। কেউ ছবি আঁকে, কেউ গান করে, কেউ অভিনয় করে, কেউবা ঘুড়ি উড়াই। বিশেষ করে মানুষ অবসর সময়গুলোকে বিনোদন মুখী করার জন্য রংবেরঙের ঘুড়ি আকাশে উড়াই। বাংলাদেশে ও বিভিন্ন সময় ঘুড়ি উড়ানো হয় তবে বিশেষ করে পৌষ মাসের শেষের দিন পৌষ সংক্রান্তিতে পুরান ঢাকায় ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব পালন করা হয়।
এছাড়াও ভারতের পশ্চিমবঙ্গেও ঘুড়ি উড়ানো হয় বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে। এছাড়াও এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশেই ঘুড়ি উড়ানো হয়ে থাকে। কবি কবি আবুল হোসেন তার ঘুড়ি কবিতায় লিখেছেন-
- ঘুড়িরা উড়েছে বন মাথায়।
- হলুদে সবুজে মন মাতায়।
- গোধূলির ঝিকিমিকি আলোয়
- লাল – সাদা আর নীল কালোয়
- ঘুড়িরা উড়িছে হালকা বায়।
ঘুড়ি কি বা কাকে বলে
ঘুড়ি এক প্রকার খেলনা যা অত্যন্ত হালকা এবং সাধারণত কাগজ, সুতা, বাঁশের কঞ্চি বা বাঁশের তৈরি কাঠি এবং সিল্কের কাপড় বা অন্যান্য কোন পাতলা ধাতব জিনিস দিয়ে তৈরি করা বিভিন্ন আকৃতির খেলনা যা আকাশে উড়ানো হয়। ঘুড়ি আকাশে উড়ানোর জন্য এর একটি লেজ তৈরি করা হয় যাতে করে ঘুড়ি আকাশে উড়ার সময় তার ভারসাম্য রক্ষা করতে পারে।
ঘুড়ির নামকরণ
বাংলাদেশ সহ এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে ঘুড়ি উড়ানো হয়ে থাকে কারণ ঘুড়ি উড়ানো হলো মানুষের এক প্রকার শখ যা মানুষ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে করে থাকে। তবে বাংলাদেশে ঘুড়ি গুলোকে বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়ে থাকে যেমন –
আরো পড়ুনঃ ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস – (রচনা) – সম্পর্কে কিছু কথা
বাংলা ঘুড়ি, মাছরাঙা, ঈগল, ডলফিন, অক্টোপাস, ব্যাঙ, সাপ, আগুন পাখি, চিল, ঈগল, মাছরাঙা, বক্স, ড্রাগন, জেমিনি, ফিনিক্স, কামরাঙ্গা, মৌচাক, পেঁচা, চরকি, ব্রিজ ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে পালতোলা জাহাজ জাতীয় পতাকা। বিভিন্ন গ্রামের মানুষ আবার ঘুড়িকে ঢাউস নামেও অভিহিত করে থাকে।
ঘুড়ির ইতিহাস
ঘুড়ি তৈরির ইতিহাস পর্যালোচনা করলে জানা যায় যে, চীন দেশে প্রায়ই ২০৮০০ বছর পূর্বে সর্বপ্রথম ঘড়ির উৎপত্তি ঘটে। পরবর্তীতে এই ঘুড়ি এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন – বাংলাদেশ, চীন, জাপান, ভারত, কোরিয়া এবং এশিয়ার আরো অন্যান্য দেশে ঘুড়ি উড়ানোর প্রচলন শুরু হয়। এছাড়াও প্রায় ১৬00 বছর পূর্বে ইউরোপে ঘুড়ি খেলনাটি ছড়িয়ে পড়ে।
ঘুড়ি তৈরির উপাদান
ঘুড়ি তৈরির প্রথম দিকে এটি কাগজ দিয়ে তৈরি করা হতো। পরবর্তীতে এটি কাগজের পাশাপাশি হালকা জাতীয় সিল্কের কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয়। ঘুড়ি তৈরি করতে সাধারণত কাগজ, পাতলা কাপড় বা পলিথিনের সাথে অন্যান্য উপাদান হিসেবে বাঁশের কঞ্চি বা কাঠি অথবা অন্যান্য নমনীয় কিন্তু শক্ত কাঠ এবং এগুলো আঠা দিয়ে ভালোভাবে লাগিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও ঘুড়ি তৈরি করে আকাশে ওড়ানোর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল শক্ত সুতা বা পাতলা দড়ি।
তবে আধুনিক কালের ঘুড়িগুলোতে প্রচলন রয়েছে সিন্থেটিকস জাতীয় পদার্থের। ২০১১ সালে ব্রিস্টল ঘুড়ি নামক একটি উৎসব অনুষ্ঠিত হয় এবং এই উৎসবে সবচেয়ে বড় ঘুড়িটি আকাশে অবস্থান করে প্রায় ২০ মিনিট। এটি ভূমির জায়গা দখল করে রেখেছিল ১০.৯৭১ বর্গফুট।
ঘুড়ি তৈরির কাগজ
ঘুড়ি তৈরি করা হয় সাধারণত পাতলা কাগজ দিয়ে কারণ পাতলা বা হালকা হলে আকাশে ঘুড়ি উড়ানো সহজ হয় কারণ ঘুড়ি বাতাসে উড়ে। তবে বর্তমানে ঘুড়ি তৈরিতে সাদা কাগজের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের রঙিন কাগজ ব্যবহার করা হয় যেন ঘুড়ি গুলো দেখতে আকর্ষণীয় ও সুন্দর দেখা যায়।
ঘুড়ির প্রকারভেদ
বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ঘুড়ি উড়ানো হয়ে থাকে। তবে বাংলাদেশ সাধারণত দুই প্রকারের ঘুড়ি দেখা যায়। যথা –
সুতাওয়ালা ঘুড়ি ও
সুতাবিহীন ঘুড়ি
সুতাওয়ালা ঘুড়ি
যেসব ঘুড়ি সুতা দিয়ে তৈরি সেগুলো হল – গুড্ডি, চং, ঢাউস, চোঙা ইত্যাদি।
সুতাবিহীন ঘুড়ি
সুতাবিহীন যেসব ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায় এগুলোর মধ্যে রয়েছে – উড়োজাহাজ, রকেট, ফানুস, বেলুন, হাউস ইত্যাদি।
তবে আকাশে বিভিন্ন প্রকার ঘুড়ি উড়তে দেখা গেলেও গুড্ডি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। গুড্ডি নামের এই ঘুড়িটি সাধারণত বর্গাকার আকৃতির বানানো হয়ে থাকে এবং কিছু কিছু রম্বস আকৃতির এবং কোনটা চতুর্ভুজ আকৃতি করা হয়ে থাকে। আবার এক ধরনের ঘুড়ি রয়েছে যেগুলো সাপের মতো লম্বা একে বলা হয় সাপুড়ি বা সাপা। এর একটি লম্বা লেজ থাকে যা দেখতে পুরোই সাপের মত। আবার মাছ বা প্রজাপতির মত ও ঘুড়ি বানানো হয়।
আর ঢাউস হল বিশাল আকৃতির ঘুড়ি যা অনেক শব্দ করে এবং এর শব্দ শুনলে বোঝা যায় এই ঘুড়ির নাম ঢাউস। আবার কিছু ঘুড়ি আকাশে উড়তে দেখা যায় অনেকটা চিল পাখির মত একে আবার চিলে নামেও অভিহিত করা হয়। আর যে ঘুড়িগুলো আকারে বেশ কিছুটা বড় তাকে বলা হয় উড়োজাহাজ ঘুড়ি, আবার অনেক সময় অতি ক্ষুদ্র আকাশ জান আকারেও আকাশের অনেক উপরে ঘুড়ি উড়তে দেখা যায় আর এই ঘুড়ি উড়ানোর জন্য প্রয়োজন হয় অনেক শক্ত সুতা বা ডোরের।
আরো পড়ুনঃ কৃষি কাজে বিজ্ঞান – রচনা সম্পর্কে জানুন
আবার কোন এক ধরনের ঢাউস ঘুড়ি আছে যার নাম হল ঢোপ। এটি ত্রিমাত্রিক আকাশ জান যা জেড বিমানের মত উড়ে। আবার চং ঘুড়ি দেখতে অনেকটা ট্রাপিজিয়ামের মতো। আর এই ঘুড়ির দুইপাশের বাহু দুটি পরস্পর সমান্তরাল এবং ওপরের বাহু নিচের বাহু অপেক্ষা বড় থাকে নয় ৯ থেকে ১৮ সেন্টিমিটার। আবার আকাশে মানুষের মতো ঘুড়ি উড়তে দেখা যায় আর এই ঘুড়িকে বলা হয় চং ঘুড়ি।
কারণ এই ঘুড়ি ওড়ানো হয় রাতে এবং এর দুপাশে দুটো মশাল জালিয়ে দেওয়া হয় আর সে আলোতে এটাকে দেখা যায় হেলে দুলে হাত-পা নেড়ে আকাশে উঠতে আর ফানুস হলো একটি ঘুড়ি । ঘুড়ি বলতে বোঝানো হয় বিশাল আকারের একটি বেলুন।
ঘুড়ি কিভাবে বানানো হয়
ঘুড়ি তৈরিতে সাধারণত জ্যামিতিক জ্ঞানের প্রয়োজন আছে এবং নকশা তৈরি ও বিভিন্ন উপাদান যেমন – লাটাই, পটি, ক্ষীর ইত্যাদির ক্ষেত্রে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন হয় কারণ ঘুড়ির পরিমাপ যদি তৈরির সময় আকার ও ওজনের পরিমাপ ঠিক না থাকে তাহলে ঘুড়ি কিছুদূর ওপরে ওঠার পরে শুধু ঘুরতে থাকবে। সুতাবিহীন ঘুড়ির মধ্যে ফানুস হল অন্যতম। ফানুসের নিচের দিকে থাকে একটা প্রশস্ত মুখ যা তার দেহের আয়তলের তুলনায় অনেক সরু আর ফানুস ঘুড়ির মুখটা খোলা থাকে।
আরো পড়ুনঃ মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার – অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন
এবং একটি খিল বৃত্তাকারে বাঁকিয়ে গোল করে ফানুষের মুখটা বানানো হয় আর এই ঘুড়ির সমস্ত দেহ পাতলা কাগজ দিয়ে তৈরি করা হয়। তবে ফানুষের নিচে লোহার একটা শিক ঝোলানো থাকে শিকটির মাঝখানে তুলা বা ন্যাকড়া জড়িয়ে তেল দিয়ে ভিজিয়ে দেওয়া হয় যখন ফানুসটিকে ঝুলন্ত অবস্থায় রাখা হয় যার কারণে এই ফানুসটি ওড়ানো সময় মশালের মতো শিখা জ্বলতে থাকে এবং উপরের দিকে উঠতে থাকে। আর ফানুস ঘুড়ি আকাশে বেশ কয়েক মাইল পর্যন্ত উঠতে পারে।
ঘুড়িতে মাঞ্জা
অনেক সময় ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা করা হয় আর এ ক্ষেত্রে একটি ঘুড়ির সুতা দিয়ে অন্য ঘুড়ির সুতা কাটার প্রতিযোগিতা করা হয়। তাই এই ক্ষেত্রে ঘুড়িতে বিভিন্ন ধরনের উপাদান যেমন – এরারোট, লতাপাতার রস, বার্লি, সাবু, বিভিন্ন ধরনের রং, কাচের গুড়া ইত্যাদি আঠা দিয়ে মিশিয়ে রোদে শুকানো হয় আর একে বলা হয় মাঞ্জা। আর এভাবেই হাত-পাঞ্জাবা কড়া মাঞ্জা তৈরি করা হয়।
ঘুড়ি কিভাবে উড়ায়
ঘুড়ি হলো একটি খেলনা যা বাতাসে ওড়ানো হয়। আর ঘুড়ি বাতাসে উড়ে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির টানে অর্থাৎ শক্তি নিচের দিকে টেনে আনে বা ঘুড়ির সামনের গতিকে বায়ু প্রতিরোধ করে কারণ বাতাসে রয়েছে মাধ্যাকর্ষণ বল, ঘড়ির স্ট্রিং এর বল এবং বাতাসের বল যার কারণে বাতাসের জোরে ঘুড়িটি পেছনের দিকে এবং উপরের দিকে চালিত হতে থাকে। আর এভাবেই ঘুড়ি বাতাসে উড়ে বেড়ায়। আর যখন ঘুড়ি বাতাসে উড়ে তখন পত পত শব্দ হয়। কবির ভাষায় বলতে হয় –
- ঘুড়িরা উড়েছে হালকা বায়,
- একটু পড়িলে টান সুতায়
- আকাশে ঘুরিরা হোঁচট খায়।
- সামলে তখন রাখা যে দায়।
ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব
পৃথিবীর অনেক দেশেই ঘুড়ি উড়ানো হয় তবে বসন্ত ঋতুতে অনুষ্ঠিত হয় ঘুড়ি উৎসব এবং এই সময় ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতাও করা হয়। তবে বাংলাদেশে বর্ষাকালের শেষে এবং শীতকালে সবচেয়ে বেশি ঘুড়ি উড়ানো হয়। বাংলাদেশে পৌষ মাসের শেষে অর্থাৎ পৌষ সংক্রান্তিতে এবং ভারতে বিশ্বকর্মা পুজোর দিনে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করা হয়। প্রাচীন সেই মুঘল আমল থেকে ঢাকার অভিজাত শ্রেণীর লোকজনদের বিনোদনের একটি অন্যতম উপায় ছিল ঘুড়ি উড়ানো।
আরো পড়ুনঃ কৃষি উদ্যোক্তা – রচনা (২০ পয়েন্ট) সম্পর্কে জেনে নিন
তবে কোন কোন তথ্যমতে ১৭৪০ এর দশকে নায়েব ইন নিজাম নওআজিস মোহাম্মাদ খানের আমলেও ঘুড়ি উড়ানোর উৎসব একটি ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছিল এবং তখন থেকেই ঘুড়ি তৈরি শুরু হয় বাণিজ্যিক ভাবে এবং ঘুড়ি উড়ানো হয় উন্মুক্ত ময়দান, বাড়ির ছাদ এবং বিভিন্ন খোলা জায়গায়। বর্তমানকালেও ঢাকার বিভিন্ন দোকানে ঘুড়ি বিক্রয় করতে দেখা যায়। বাংলাদেশের বিভিন্ন গ্রাম অঞ্চলেও বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় প্রতিযোগিতামূলক ঘুড়ি উড়ানো হয়ে থাকে।
ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা
বিভিন্ন সময়ে ঘুড়ি উড়ানোর প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন – ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান সহ প্রভৃতি অঞ্চল গুলোতে ঘুড়ি উড়ানোর বিশেষ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। আর এইসব উৎসবে প্রতিযোগিতায় বিভিন্ন লোকজন তাদের মাঞ্জা দেওয়া সুতা দিয়ে ঘুড়ি উড়িয়ে একজন আরেকজনের ঘুড়ি কে টানে অথবা ছেড়ে ঢিল পদ্ধতিতে কাটার চেষ্টা করেন। ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতার বিষয় হচ্ছে কার
আরো পড়ুনঃ অনুচ্ছেদ – সেরা ৫০ টি – অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন
ঘুড়ি কত উপরে উঠানো যায় কিংবা ঘুড়ির অলংকরণ কত চমৎকার করা যেতে পারে। তবে ঘুড়ি উড়ানোর সবচেয়ে আকর্ষণীয় প্রতিযোগিতা হচ্ছে এই প্রতিযোগিতায় যে শেষ পর্যন্ত তার ঘুড়ি নিয়ে টিকে থাকে সে হয় চ্যাম্পিয়ন অর্থাৎ যার ঘুড়ি অন্য ঘুড়ির সুতা কেটে আকাশে উড়তে থাকে সে হয় বিজয়ী। তাইতো কবি বলেছেন-
- লাল পরী টা বলল ডেকে
- নীল ঘুড়িটা ওরে
- বলনা রে ভাই দূর আকাশে
- মেঘেরা কেন উড়ে
ঘুড়ির জন্য কোন উপকরণ ভালো
ঘুড়ি হল একপ্রকার খেলনা যা মানুষ শখ করে উড়িয়ে থাকে। তবে আবার এই খেলনা নিয়ে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে নানান ধরনের প্রতিযোগিতা ও হয়ে থাকে। ঘুড়ি তৈরির ক্ষেত্রে অনেক উপকরণ দরকার হয় যেমন – কাগজ, বাঁশের কঞ্চি বা কাঠি, আঠা এবং ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য সবচেয়ে উপকারী উপাদানটি হলো সুনতা বা পাতলা দড়ি। তবে রিপস্টপ নাইলন নামের এক প্রকারের ভালো সুতা পাওয়া যায় আর এই উপাদানটি ভালো মানের ঘড়ির জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত হয়ে থাকে। আধুনিক রিপস্টপ নাইলন প্রায় ঘুড়িতেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
ঘুড়ি ওয়েব কি
ঘুড়ি বা কাইট হলো একটি ট্রেডিং প্ল্যাটফর্ম এবং মসৃণ বিনিয়োগ যা আধুনিক সময়ের মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য নির্মিত। আর ঘুড়ির চমৎকার ব্যবহারযোগ্যতার সাথে উপস্থাপিত গ্রাউন্ড ব্রেকিং, উদ্ভাবন এবং স্টক মার্কেটে বিনিয়োগের জন্য ঘুড়ি ওয়েব ব্যবহার করা হয়।
ঘুড়ির ইনপুট আউটপুট শক্তি কত
ঘুড়ি উড়ানোর জন্য সাধারণত বাতাসের গতি ব্যবহার করা হয়। তবে ঘুড়ি কতটা উপরে উঠবে এবং কিভাবে উড়বে তা নির্ভর করে কিভাবে ঘুড়িটিকে তৈরি করা হয়েছে অর্থাৎ ঘুড়ির ইনপুট কেমন। যদি ঘুড়িকে পাতলা কাগজ দিয়ে তৈরি করে সম্ভাব্য শক্তিতে রূপান্তরিত করা হয় তাহলে ঘুড়ি অনেক দ্রুত এবং অনেক উপরে উঠবে। আর ঘুড়ি যত উপরে উঠবে বা উড়বে এটা হল ঘুড়ির আউটপুট শক্তি।
ঘুড়ি এবং বর্তমান অবস্থা
বর্তমান তথ্যপ্রযুক্তির যুগ আর এই যুগে মানুষ এত বেশি ডিভাইসের ওপর নির্ভরশীল যে মানুষ তার ঐতিহ্যকে প্রায় ভুলেই গেছে। মানুষ এখন ঘুড়ি উড়ানোর কথা, সন্ধ্যাবেলা চাঁদ দেখার কথা সবকিছুই ভুলে গেছে। মানুষ হয়ে উঠেছে যন্ত্র চালিত মানব। কিন্তু মানুষের উচিত প্রাকৃতিক ঐতিহ্যকে ধরে রাখা, মনটাকে আবার ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া সেই গ্রামের খোলা মাঠে যেখানে হাওয়ায় ওড়ানো হতো ঘুড়ি আর এতেই মিলবে মানুষের মনের শান্তি।
উপসংহার
ঘুড়ি শুধু বাংলাদেশের মানুষের নয়, এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশ যেমন – বাংলাদেশ,ভারত, চীন, জাপান, কোরিয়া এমনকি ইউরোপ মহাদেশের বিভিন্ন দেশে ও ঘুড়ি উড়ানোর প্রচলন ছিল। কিন্তু বর্তমানে এই ঐতিহ্যগুলো অনেকটাই শেষ হতে চলেছে কিন্তু ঘুড়ি তৈরী হয় মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য যার মধ্যে রয়েছে মনের প্রশান্তি। তাই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে ঘুড়ি সম্পর্কে জানানো উচিত। তাদের কাছে বলা উচিত ঘুড়ি কিভাবে বাতাসে টালমাটাল অবস্থায় উড়ে বেড়ায় এবং ঘুড়ির চাল যে সহজ নয় সেটাও তাদের বুঝতে দেওয়া উচিত।
আরো পড়ুনঃ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস – রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন
- ভারী যে কঠিন ঘুড়ির চাল,
- সাধ্যি কি চিল পাই নাগাল!
- প্যাঁচ লেগে ঘুড়ি কেটে পালায়
- আকাশের কোথা কোন কোনায়।
- ঘুড়িরা পড়েছে হাতেতে কার
- খবর রেখেছে কেউ কি তার?
Leave a comment