অথবা, গ্রিক সভ্যতা কী?
ভূমিকাঃ প্রাচীন গ্রিক সমাজের বিশেষত্ব দাসপ্রথা। গ্রিকদের আগে আর কোনাে সমাজই দাসত্বের বুনিয়াদের ওপর গড়ে ওঠেনি। গ্রীকদের আদি বাসস্থান গ্রিসে নয়। গ্রিকেরা বসতি স্থাপন করার আগে এখানে অন্য জাতির বাস ছিল। এদের সমাজব্যবস্থা ছিল সমাজতান্ত্রিক। গ্রীসের অভিজাতশ্রেণি দাস ও তাদের শ্রমের ওপর নির্ভর করেই টিকে ছিল। তাই অনেকে মন্তব্য করেছেন, “দাসপ্রথা ছিল গ্রীক সভ্যতার মূলভিত্তি।”
গ্রিক সভ্যতাঃ ইউরােপের বলকান উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণে ভূমধ্য সাগরের তীরে ক্ষুদ্র পার্বত্য অঞ্চলে খ্রিষ্টপূর্ব ১৬০০ নাগাদ যে সভ্যতা গড়ে ওঠেছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসে তাই গ্রিক সভ্যতা নামে পরিচিত।
গ্রিকদের আদি পরিচয়ঃ গ্রিকরা আদিকাল থেকে গ্রিসে বাস করতাে না। তারা ১৫০০ সাল নাগাদ গ্রিসে এসে বসতি স্থাপন করে। এদের আদি পুরুষগণ অর্থাৎ একিয়ান নামে পরিচিত মানুষের দল তাদের আদি বাসভূমির গণ্ডি ছেড়ে দক্ষিণে অগ্রসর হয়ে এ অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। গ্রিকরা একটি মিশ্র জাতি।
গ্রিক সভ্যতার বৈশিষ্ট্য
গ্রিক সভ্যতা অর্থনৈতিক দিক দিয়ে যেমন ছিল সমৃদ্ধ তেমনি ছিল শিক্ষা ও রাষ্ট্রীয় বিধি-ব্যবস্থায় সুসংগঠিত। শিল্প, সাহিত্য, দর্শন, ধর্ম, চিত্রশিল্প ইত্যাদি বিষয়ে গ্রিকরা এমন সমৃদ্ধির অধিকারী ছিল যা গ্রিক সভ্যতাকে মানব সভ্যতার ইতিহাসকে চির অম্লান করে রেখেছে। নিম্নে প্রাচীন গ্রিক সভ্যতার বৈশিষ্ট্য সমূহ আলোচনা করা হলো-
১. ভৌগোলিক অবস্থান
ইউরোপ মহাদেশের বলকান উপদ্বীপের দক্ষিণাংশে অবস্থিত একটি পার্বত্যময় দ্বীপ রাষ্ট্র হলো গ্রিস। গ্রিসের আয়তন মাত্র ৪৫,০০০ বর্গমাইল। এবড়ো-থেবড়ো খাড়া পর্বতমালা, খনিজ সম্পদের অপ্রতুলতা, স্বল্প আবাদযোগ্য ভূমি, শীতকালে সামান্য বৃষ্টিপাত ও ভগ্ন উপকূল রেখা গ্রিসের প্রধান ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্য। সাগরের সান্নিধ্য গ্রিসে নগরকেন্দ্রিক সভ্যতার পরিবর্তে একটি সাগরীয় সভ্যতা গড়ে উঠতে সহায়তা করেছিল।
২. নগর সভ্যতা
প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা ছিল নগর-রাষ্ট্রের সমাহার। মূলত গ্রিস নামে কোনো একক রাষ্ট্র ছিল না। নগর সভ্যতা ছিল গ্রিক সভ্যতার প্রধান বৈশিষ্ট্য। গ্রিক সভ্যতায় সর্বপ্রথম নগর গড়ে উঠে বলে একে নগর সভ্যতাও বলা হয়। গ্রিক নগররাষ্ট্রগুলোর মধ্যে এথেন্স ও স্পার্টাই ছিল বৃহত্তম রাষ্ট্র। এসব নগরের অভ্যন্তরে ছিল অভিজাতদের সুরম্য প্রাসাদ এবং এর সন্নিকটে ছিল সমাধি মন্দির। অনেক নগর-রাষ্ট্রের কেন্দ্রস্থলে চতুষ্কোণ ফাঁকা চত্বর ছিল, যা ‘এগোরা’ (Agora) নামে পরিচিত। এ স্থানে সভা সমিতি, আলোচনা ও ব্যবসা-বাণিজ্য চলত। এ ছাড়া সমুদ্রের তীরে অনেক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রকে একত্রিত করে এথেন্স নগরী গড়ে উঠে।
৩. সামাজিক সংগঠন
অভিজাত, বণিক, শ্রমিক, কৃষিজীবী, ভূমিদাস ও কৃতদাসের সমন্বয়ে গ্রিক সমাজ গঠিত হয়েছিল। গ্রিক সমাজের উচ্চতম স্তরে অভিজাতদের অবস্থান ছিল। রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও এরা ছিল সবচেয়ে সুবিধাভোগী। গ্রিক সমাজে সবচেয়ে ধনবান শ্রেণি ছিল বণিক শ্রেণি। গ্রিসের ভূমি অনুর্বর হওয়ায় বেশিরভাগ খাদ্যশস্য ও প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি মিশর ও মেসোপটোমিয় থেকে আমদানি করতে হতো। এসব বাণিজ্য বণিক শ্রেণির হাতে ছিল বলে তাঁরা গ্রিক সমাজে একাধারে ঐশ্বর্যশালী ও ধনবান হয়ে পড়ে।
8. শ্রেণিবিভক্ত সমাজ
গ্রিক সমাজব্যবস্থা বিভিন্ন শ্রেণিতে বিভক্ত ছিল। গ্রিক সমাজ অভিজাত, বণিক, শ্রমিক, কৃষক, ভূমিদাস ও ক্রীতদাসদের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছিল। অভিজাত শ্রেণি ছিল গ্রিক সমাজের সর্বোচ্চ পর্যায়। তাঁরা বিপুল ধন-সম্পদ ও ভূমির মালিক ছিলেন। রাষ্ট্রের শাসন ক্ষমতা তাদের হাতে কুক্ষিগত ছিল। কৃষিজীবী সম্প্রদায় ছিল স্বাধীন ও মুক্ত মানুষ। ব্যবসায়ী, ঠিকাদার, কারিগর, শিল্পকর্মীসহ সমস্ত পেশার লোক ছিল মেটিক শ্রেণিভুক্ত। মেটিকদের কোনো নাগরিক অধিকার ছিল না। তবে ব্যবসায় বাণিজ্যের ক্ষেত্রে মেটিকরা ব্যাপক প্রাধান্য বিস্তার করেছিল। গ্রিসের সর্বনিম্ন শ্রেণি ছিল ক্রীতদাস দাস। তাদেরকে জীবন্ত হাতিয়ার হিসেবে গণ্য করা হতো। ক্রীতদাসদের হত্যা করার সামাজিক কিংবা নাগরিক অধিকার দেয়া হতো না।
৫. কৃষি ও পশুপালন নির্ভর অর্থনীতি
গ্রিকদের অর্থনীতি ছিল প্রধানত কৃষি ও পশুপালন নির্ভর। অর্থাৎ তাদের জীবিকা, নির্বাহের প্রধান উপায় ছিল কৃষি ও পশু পালন। তা ছাড়া তারা আঙুর, জলপাই ও মদ উৎপাদনের মাধ্যমেও জীবিকা নির্বাহ করতো। তারা অশ্ব, মেষ ও ছাগল পালন করতো। গ্রিকরা ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিল্পে প্রভূত উন্নতি সাধন করেছিল। এমনকি তারা ধাতব মুদ্রার প্রচলনও করেছিল। তারা নিজেদের পোশাক নিজেরাই তৈরি করতো।
৬. দাসপ্রথা
গ্রিক সভ্যতার আর একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য ছিল দাস প্রথা। এ সময়ে খনিতে, শিল্পকারখানায় ও বড় বড় কৃষি খামারে দাসশ্রম নিয়োগ ব্যাপকভাবে শুরু হয়। এতে দাস প্রথার ব্যাপক প্রসার ঘটে। এথেন্সের দাস ব্যবসায়ীরা এশিয়া মাইনর, সিরিয়া প্রভৃতি দেশ থেকে দাস আমদানি করতো। তা ছাড়া পারস্য যুদ্ধের পর অনেক যুদ্ধবন্দিকে দাস হিসেবে নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে এথেন্স দাস নির্ভর রাষ্ট্র ও অর্থনৈতিক সমাজব্যবস্থায় পরিণত হয়।
৭. গণতান্ত্রিক রাজনীতি
গ্রিক নগর স্পার্টা ও এথেন্সের শাসন ব্যবস্থা অভিজাতদের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হলেও এথেন্সে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পরিপূর্ণতা লাভ করেছিল। তাই এথেন্সবাসীরা পুরোপুরি নাগরিক অধিকার ভোগ করতো। কিন্তু বহিরাগতরা ঐ অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল। নগর-রাষ্ট্রের আয়তন সাধারণত একশ’ বর্গমাইলের বেশি হতো না এবং নগরের লোকসংখ্যা ছিল দশ পনের হাজারের মতো।
৮. সাহিত্য
প্রাচীন গ্রিকরা ছিল ভাব কল্পনাবিলাসী জাতি। প্রত্যেক সাহিত্যেরই সাধারণ মাধ্যম হচ্ছে বীরত্বপূর্ণ গাঁথা, যা মহাকাব্যের ছন্দে লিখিত। ভ্রমণবৃত্তান্ত এবং যুদ্ধের সাহসিকতাপূর্ণ কাহিনিই সাহিত্যের প্রাথমিক উৎস। হোমার হতেই গ্রিক সাহিত্যের সূচনা। খ্রিস্টপূর্ব নবম শতাব্দীতে তাঁর বিখ্যাত মহাকাব্য ইলিয়ড (Illiad) ও ওডেসী (Odyse) রচিত হয়েছে। গ্রিক সাহিত্যের দ্বিতীয় সাহিত্য কীর্তি হলো Hesiod. এ কাব্যে দেবতা ও বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি ও জীবন আলোচনা করা হয়েছে। খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ ও ৫ম অব্দে গ্রিক সাহিত্যের প্রধান বাহন ছিল নাটক। দেবতাদের উদ্দেশ্য বিভিন্ন উৎসব অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে গ্রিক নাটকের উদ্ভব ঘটেছিল। গ্রিক নাটকের নাট্যকার ছিলেন এসকাইনান (৫২৫-৪৫৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দ): সৃজনশীল নাট্যকার ছিলেন সফোক্লিস (৪৯৬-৪০৬ খ্রিস্টপূর্ব) প্রমুখ। এ ছাড়া ইতিহাস লেখায়ও গ্রিকদের অগ্রণী ভূমিকা ছিল। গ্রিক ইতিহাসবেত্তা হেরোডোটাসকে বলা হতো ইতিহাসের জনক। আর বৈজ্ঞানিক ইতিহাসের জনক বলা হয় থুকিডাইডিসকে (৪৬০-৪০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ)।
৯. সাহিত্য ও নাট্যচর্চা
প্রাচীন গ্রিস ছিল সাহিত্য ও নাট্যচর্চার লীলাক্ষেত্র। গ্রিক কবি হোমার রচনা করেছিলেন বিখ্যাত মহাকাব্য ইলিয়ড ও ওডিসি, যা গ্রিক সাহিত্যাঙ্গনকে উজ্জ্বলতায় ভাস্বর করে দিয়েছে। এ ছাড়া ধর্মকে কেন্দ্র করে গ্রিসে বার্ষিক নাটক অনুষ্ঠিত হতো। তৎকালীন বিখ্যাত ট্যাজিক নাট্যকার ছিলেন এস্কিলাম। সফোক্লিস ও ইউরিপাইডিসের নাম প্রণিধানযোগ্য। সফোক্লিসের ‘রাজা ইডিপাস’ ছিল গ্রিসের বিশ্বখ্যাত নাটক।
১০. শিক্ষা
হেলেনীয় যুগে নগর-রাষ্ট্রের বিকাশের সাথে সাথে গ্রিসে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান ও অনুষ্ঠানের আবির্ভাব হয়। মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে এবং শিক্ষা ও সংস্কৃতির প্রসার ঘটে। গ্রিসের স্বাধীন মানুষের অনেকেই শিক্ষিত ছিল। অবস্থাপন্ন পরিবার থেকে ৭-১৬ বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেদেরকে স্কুলে লেখাপড়া ও হিসাব করতে শেখানো হতো। স্কুলে মনের ভাব স্পষ্ট ও সুন্দরভাবে প্রকাশের কায়দা-কানুন শেখানো হতো। স্কুলে ছবি আঁকা, নাচ ও সংগীত বাধ্যতামূলকভাবে শেখানো হতো। অনেকে বাঁশি ও বীণা বাজানো শিখত। স্কুলের শিক্ষার লক্ষ্য ছিল। শিক্ষার্থীদেরকে সাহসী, শক্তিশালী ও সক্রিয়রূপে গড়ে তোলা। মেয়েরা স্কুলে যেত না। কারিগর ও কৃষকদের ছেলেরা অল্প বয়সে শিক্ষা ছেড়ে বাবাকে কাজে সাহায্য করতো।
১১. শিক্ষা-সংস্কৃতি
শিক্ষা-সংস্কৃতির দিক দিয়ে গ্রিস ছিল খুবই উন্নত। এথেন্স ছিল গ্রিসের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের প্রধান পীঠস্থান। স্পার্টার শিক্ষাব্যবস্থা ছিল সামরিক বিষয়ভিত্তিক। তা ছাড়া ব্যাকরণ, সংগীত, ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কেও তারা জ্ঞানার্জন করতো। শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে তারা গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখে গেছে, যা আজো অম্লান। সেখানকার চারণকবিরা বীরত্ব কাহিনি কাব্য আকারে রচনা করে সারা দেশে তা প্রচার করতেন।
১২. লিপি আবিষ্কার
গ্রিকরা ফিনিশীয়দের কাছ থেকে লিখন পদ্ধতি আয়ত্ত্ব করেছিল। আমরা জানি যে, ফিনিশীয়রা ২২টি বর্ণমালা উদ্ভাবন করেছিল। গ্রিকরা এর সাথে আরো ৪টি বর্ণ (e, i, o, u) যোগ করে। মিলিতভাবে ২৬ বর্ণের বর্ণমালা তৈরি হয়, যা আধুনিক ইংরেজি ভাষায় গৃহীত বর্ণমালা।
১৩. ধর্মীয় সংগঠন
প্রাচীন গ্রিকরা দেব-দেবীতে বিশ্বাস করতো। তাঁরা প্রকৃতি, মাটি এর পাশাপাশি খ্যাতিমান বীরদেরও পূজা করতো। প্রত্যেকটি নগর ও অঞ্চলের নিজস্ব দেবতা ছিল। হোমারের মহাকাব্যে ইলিয়ড ও ওডেসিতে এর যথেষ্ট সাক্ষ্য রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে দেবতাদের ক্ষমতার বৈচিত্র্যও দেখা যায়। গ্রিকদের ধর্মীয় আরাধনা হিসেবে বিভিন্ন উৎসব বা অনুষ্ঠানে ফল, ফুল, শস্য ও মদ উৎসর্গ এবং প্রার্থনা অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রাচীন গ্রিসে পারিবারিক দেবতা, সাধারণ নাগরিকের দেবতা এবং রাষ্ট্রীয় দেবতার পৃথক সত্তা ছিল। নাগরিকদের দেবতা আরাধনার জন্য চমৎকার মন্দির তৈরি করা হতো। রাজনৈতিকভাবে গ্রিকরা ভিন্ন হলেও তাদের মধ্যে ধর্মীয় সংস্কৃতির ঐক্য ছিল।
১৪. ধর্মীয় বিশ্বাস
গ্রিকরা বিভিন্ন দেব-দেবীতে বিশ্বাসী ছিল। তারা মনে করতো সমগ্র জগতই দেব-দেবীতে পরিপূর্ণ এবং ধারণা করতো একেকটি দেবতা একেকটি কাজ পরিচালনা করত। তাই তারা বহু দেব-দেবীর নামে পূজা অর্চনা করত।
১৫. ধর্মীয় সংগঠন
রাজনৈতিকভাবে গ্রিকরা ভিন্ন হলেও তাদের মধ্যে ধর্মীয় ঐক্য ছিল। তারা প্রকৃতি, মাটি এবং পাশাপাশি খ্যাতিমান বীরদের পূজা করত। গ্রিকরা ধর্মীয় বিশ্বাসের ভিত্তিতে সামাজিক সংগঠন, রাষ্ট্রীয় সংগঠন ও নাগরিকদের দেবতা পূজা সংগঠন গড়ে তুলেছিল।
১৬. দর্শন
গ্রিক চিন্তাবিদরা মানুষ এবং বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের উদ্ভব ও বিকাশের বিষয়াবলি আলোচনা করতে গিয়ে সমৃদ্ধ দর্শন উপহার দেন। বিভিন্ন কার্যকারণ সূত্র, নীতি, পদ্ধতি, বাস্তবতা, প্রাকৃতিক ও নৈতিক আইন প্রভৃতি বিভিন্ন বিষয় পদ্ধতিতে দর্শনের আলোচনা করেছেন। দর্শন সম্পর্কে বিভিন্ন মতবাদের উপর যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল, গ্রিকরা সে বির্তকের আবসান ঘটিয়ে দর্শনের সভ্যতার মাধ্যমে দর্শনের প্রসার ও গুরুত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
১৭. দর্শন চর্চা
মানব সভ্যতার ইতিহাসে গ্রিক দার্শনিকগণ বিশ্ববাসীকে সমৃদ্ধশালী ও বস্তুনিষ্ঠ দর্শন চর্চায় উদ্বৃত্ত করেছেন। তাদের দার্শনিক চর্চার বিষয়বস্তু ছিল প্রাকৃতিক জগতের চরিত্র নিরূপণ করা। পরবর্তীতে অধিবিদ্যা চর্চায় প্রবণতাও দেখা যায়।
অতএব, আপনারা গ্রিক সভ্যতার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে জানতে পারলেন। কেমন লেগেছে অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।
পরিশেষঃ আলােচনার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা এ সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারি যে, দাসপ্রথার কারণে গ্রিক সভ্যতা পরিচিত। গ্রিসে যে নগররাষ্ট্রগুলাে বিকাশ লাভ করেছিল তার মূলে ছিল দাস শােষণ। সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে নগররাষ্ট্রের প্রায় সকল শ্রমমূলক কাজে দাসদের ব্যবহার করতাে। অন্যান্য সভ্যতায় বিশেষ করে হােমারীয় ছাড়া। দাসের ব্যবহার তেমন দেখা যায় না। গ্রীসের নগররাষ্ট্র মূলত দাস শােষণের ফলাফল।
Leave a comment