উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ: সুভাষ মুখােপাধ্যায় তাঁর ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনায় উল্লেখ করেছেন যে জেলখানার মধ্যে কয়েদিদের টাকাপয়সা বা সােনাদানা রাখা আইনবিরুদ্ধ হলেও জেলে একটু ভালােভাবে থাকার জন্য কয়েদিরা তাদের ধনসম্পদ রাখার একটা বিশেষ উপায় অবলম্বন করত।

থলি বানানাের পদ্ধতি : দিনের পর দিন অসম্ভব কষ্ট করে কয়েদিরা তাদের গলার মধ্যে একটা ছােট্ট থলি তৈরি করে নিত। দীর্ঘদিন ধরে তারা একটা ভারী সিসার বল গলার কাছের তালুতে অর্থাৎ টাকরাতে রেখে দিত তারা। সেই ভারী বলটি ধীরে ধীরে ‘মাংস ছাদা হয়ে’ বসে যেত। স্বভাবতই এর ফলে সেই জায়গাটায় দগদগে ঘা হয়ে গেলে তারা যন্ত্রণায় ছটফট করত। ঘায়ের জন্য মুখে দুর্গন্ধ হয়ে যেত। প্রায় একবছর ধরে ঘায়ের যন্ত্রণা এবং দুর্গন্ধ সহ্য করে গর্ত ভালােভাবে তৈরি হয়ে গেলে তারা বলটি বের করে নিত। তারপর একসময় ঘা শুকিয়ে গেলে গলার কাছে তৈরি হয়ে যেত একটা স্থায়ী গর্ত। তখন সেই গর্তের মধ্যে তারা সােনাদানা অনায়াসেই লুকিয়ে রেখে দিত। আর এই থলির মধ্যেই সােনা বা রত্ন রেখে বন্দিরা নিরাপদে দিনযাপন করত। লেখক এ কারণেই বলেছেন, “গলার মধ্যে থলি বানাতে কষ্ট আছে।”