ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট: বের্টোল্ট ব্রেখট তার ‘পড়তে জানে এমন এক মজুরের প্রশ্ন’ কবিতায় বিভিন্ন ঐতিহাসিক প্রসঙ্গের সঙ্গে জুলিয়াস সিজারের দ্বারা গল জাতির পরাজয়ের ঘটনাও উল্লেখ করেছেন। পশ্চিম ইউরােপের ফ্রান্স খ্রিস্টপূর্ব প্রথম এবং দ্বিতীয় শতকে রােমান শাসনাধীনে ছিল। ৫৮ থেকে ৫১ খ্রিস্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত এই প্রাচীন ভূখণ্ডে পরিপূর্ণভাবে অধিকার কায়েম করেন জুলিয়াস সিজার। পরবর্তী প্রায় পাঁচশাে বছর গলের উপরে রােমান আধিপত্য বজায় ছিল।

কথামুখ : এই ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটের ইঙ্গিত দিয়ে ব্রেখট বলতে চেয়েছেন যে, গ-বিজয়ে সিজারের নাম ইতিহাসে যতই বিখ্যাত হয়ে থাকুক, সেই যুদ্ধজয় সিজারের একার পক্ষে কিছুতেই সম্ভব ছিল না।

অবদানের কথা : “নিদেন একটা রাঁধুনি তাে ছিল” -কথাটির মমার্থ হল যে যুদ্ধজয়ে সিজার আসলে একা ছিলেন না। তার সেনাবাহিনীর অবদানের কথা ছেড়ে দিলেও সেনাবাহিনীর বেঁচে থাকার ন্যূনতম রসদ জোগানের দায়িত্বে থাকা রাজার বাবুর্চির কথাও কিছুতেই বিস্মৃত হওয়া সম্ভব নয়।

অবদানের অস্বীকৃতি : কিন্তু প্রথাগত ইতিহাসে সাধারণ সৈনিকদের বা সাধারণ মানুষদের এই অবদানকে স্বীকার করা হয় না। রাজারাজড়া বা ক্ষমতাবানদের শ্রেষ্ঠত্বকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। আর চিরকালই উপেক্ষার অন্ধকারে থেকে যায় তাঁদের এই শ্রেষ্ঠত্বের নেপথ্য থাকা নায়করা। সেই উপেক্ষা আর বঞ্চনার প্রতিবাদই যেন শােনা যায় প্রশ্নোষ্ধৃত পঙ্ক্তিতে।