বেতার গণশিক্ষার একটি শ্রুতিধর্মী মাধ্যম বিশেষ করে নিরক্ষর ব্যক্তির কাছে এই মাধ্যমটি সংবাদপত্রের চেয়ে অধিক গ্রহণযোগ্য। গণশিক্ষার ক্ষেত্রে এর উল্লেখযােগ্য বৈশিষ্ট্যগুলি হল一

(১) সর্বজনগ্রাহ্য অনুষ্ঠান প্রচার: বেতারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান সহজসরল ভাষায় এমনভাবে পরিবেশন করা হয় যে, নিরক্ষর মানুষও তা বুঝতে পারে।

(২) স্বল্প খরচ: বেতারযন্ত্রের দাম তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় মানুষ, বিশেষত দরিদ্র মানুষও এটি কিনতে পারে।

(৩) বাস্তবভিত্তিক অনুষ্ঠান প্রচার: বেতারে যেসব অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়, তা বাস্তবধর্মী হওয়ায় মানুষের মনকে ছুঁয়ে যায়। মানুষ ওই ধরনের অনুষ্ঠানে আনন্দ পায়।

(৪) চিত্তবিনােদনে সহায়তা: বেতার চিত্তবিনোদনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।

(৫) সমাজসচেতনতা গড়ে তোলার সহায়ক: বেতারের মাধ্যমে এমন অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়, যা শ্রোতাদের সমাজ-সচেতন করে তােলে।

(৬) সাংস্কৃতিক বিকাশে সহায়তা: বেতারের আর-একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল শ্রোতাদের সাংস্কৃতিক বিকাশে সহায়তা করা।

(৭) সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়ে অনুষ্ঠান পরিবেশন: বেতারের মাধ্যমে সাম্প্রতিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।

(৮) পরিসেচেতনতা বৃদ্ধিতে সহায়তা: বেতারে পরিবেশসচেতনতা বৃদ্ধির বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।

(৯) অন্ধদের সহায়ক অনুষ্ঠান প্রচার: বেতারের মাধ্যমে অন্ধদের জন্য বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়।

(১০) বৈচিত্রময় অনুষ্ঠান পরিবেশন: বেতারে বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান প্রচার করা হয়। এইসব অনুষ্ঠানের মধ্যে গানবাজনা, নাটক, সংবাদ, কৃষিকথার আসর, গল্পদাদুর আসর, ইত্যাদি উল্লেখযােগ্য। এইসব অনুষ্ঠান বিভিন্ন বয়সের শ্রোতাদের আনন্দ জোগায়।

(১১) এফ এম অনুষ্ঠান: বর্তমানে বেতারে নানা অনুষ্ঠানে সমৃদ্ধ এফ-এম প্রচার-এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বৈচিত্র্যময় এফএম চ্যানেলগুলি বর্তমানে খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

(১২) শ্রুতিনির্ভর: কেবল শ্রুতিনির্ভর হওয়ায় সাধারণ কর্মজীবী মানুষ দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি বেতারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান শােনার সুযােগ পায়। দেখা গেছে, এর ফলে তাদের উৎপাদনশীলতাও বৃদ্ধি পায়।

ওপরের আলােচনা থেকে বলা যায় যে, স্বল্প খরচে বেতার একটি গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম হিসেবে কাজ করে। শুধু তাই নয়, গণশিক্ষা বিস্তারে, ছাত্রছাত্রীদের জ্ঞানভাণ্ডার সমৃদ্ধ করতে এবং চিত্তবিনােদনেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।