খেজুর আমাদের খুব প্রিয় ফল। ছোট থেকে বড় সবাই খেজুর পছন্দ করে।কিন্তু আমরা
সবাই  খেজুর খাওয়ার উপকারিতা –  খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানিনা।খেজুরের
পুষ্টিগুন সঠিক ভ পেতে  খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম
জেনে খাওয়া উচিত।খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানতে আমার
আর্টিকেলটি পড়ুন। 

বাংলাদেশের বাজারে প্রায় .১০০ প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়। এদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হল আজুয়া, আনবারা, সাফাওয়ী, মুসকানী, সাগী, ওয়াশালী, খালাস,
বিরহী,  চালবি, মাবরুম, শুকারী, সুগাই ,ভি আই পি, বালসি, মাশরুক, আম্বার,
ডেইরি,সুক্কারি, ওয়ান্নাহ, খুদির ইত্যাদি।খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার
নিয়ম সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হল।-

পোস্ট সূচিপত্রঃ     খেজুর খাওয়ার উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জেনে
নিন

খেজুর

খেজুর আমাদের সবার কাছে খুব পরিচিত একটি ফল। এটা খেতে মিষ্টি এবং সুস্বাদু।
খেজুরের আরবি নাম হল তুমুর। বাংলা ভাষায় খেজুর নামে অভিহিত করা হয়।
খেজুরের বৈজ্ঞানিক নাম হল “ফিনিক্স   ডাকটিলিটি ফেরা“। খেজুর
হলো মরুভূমির একটি ফল। খেজুরের গাছ তাল জাতীয় শাখাবিহীন একটি বৃক্ষ। বহু বছর ধরে
যদিও খেজুর গাছের চাষাবাদ করা হচ্ছে তবুও মূলত এটা মরুভূমির ফল।

পৃথিবীর প্রায় সব জায়গাতেই খেজুরের উৎপাদন হলেও মূলত বেশি হয় মধ্যপ্রাচ্য ও
আফ্রিকান দেশগুলোতে। এছাড়াও তুরস্ক, ইসরাইল, কাতার, নাইজেরিয়া, মরক্ক, ইয়েমেন,
চীন,  তিউনিসিয়া, মৌর তানিয়া  হল পৃথিবীর প্রধান খেজুর উৎপাদন কারি
দেশ। বাংলাদেশ, পাকিস্তান ,ভারত, ঘানা, আইভরি  কোস্ট ও আফ্রিকাতে খেজুর
গাছের মাথার কিছু অংশ কেটে  রস বের করা হয়। 

এটাই খেজুর রস নামে পরিচিত এবং খেতেও বেশ মিষ্টি। আর এই রস থেকেই তৈরি করা হয়
সুস্বাদু খেজুরের গুড়। খেজুর কে প্রধানত চার ভাগে পাকানো হয়।

  •  কাঁচা (কিমরি)
  •  পরিপক্ক  (খলাল)
  • পাকা নরম (রুতাব) এবং 
  • পাকা সূর্যের শুকানো  (তমর)

খেজুরের প্রকারভেদ

পৃথিবীতে অনেক প্রকার খেজুর পাওয়া যায়। ডক্টর আকরাম বালিলু, (যিনি কিং আব্দুল
আজিজ ইউনিভার্সিটি প্রফেসর) তিনি একটি বিশেষ টিম নিয়ে মদিনার আজুয়া খেজুর নিয়ে
গবেষণা করেছেন। গবেষণা শেষে তিনি বলেন, সারা পৃথিবীতে অন্তত ২০০০ প্রজাতির খেজুর
আছে। এর মধ্যে সৌদি আরবে আছে প্রায় ৪00 প্রজাতির খেজুর।

বাংলাদেশের বাজারে প্রায় .১০০ প্রজাতির খেজুর পাওয়া যায়। এদের মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হল আজুয়া, আনবারা, সাফাওয়ী, মুসকানী, সাগী, ওয়াশালী, খালাস,
বিরহী,  চালবি, মাবরুম, শুকারী, সুগাই ,ভি আই পি, বালসি, মাশরুক, আম্বার,
ডেইরি,সুক্কারি, ওয়ান্নাহ, খুদির ইত্যাদি। এসব খেজুরের দাম – মান ও আকার ভেদে ১০
থেকে ১৫০ রিয়েল হয়ে থাকে। বিশ্বের সবচেয়ে দামি খেজুর হল আজুয়া। 

আরো পড়ুনঃ
মধু কি – মধু খাওয়ার নিয়ম ও সময় জেনে নিন

এই খেজুরের সবচেয়ে বেশি ফলন হয় সৌদি আরবে।আজুয়া খেজুর আকারে ছোট, কালো, নরম ও
সুস্বাদু। এই খেজুরের দাম প্রতি কেজি বাংলাদেশী টাকায় ৮০০ থেকে ২৫০০ টাকা। কথিত
আছে কেউ যদি প্রতিদিন সাত (৭) টি করে আজুয়া খেজুর খায় তাহলে তার শরীরে কোন বিষ
কাজ করে না।

এছাড়াও “মেজুল” নামক এক প্রকার খেজুর রয়েছে যা খেজুরের রাজা হিসেবে পরিচিত। এই
খেজুরের দাম বাংলাদেশি টাকায় ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা। এই খেজুর চাষ হয় প্রধানত
মরক্কোতে। তবে বর্তমানে আমেরিকার সহ পৃথিবীর প্রায় অনেক দেশেই এই খেজুরের চাষ
হয়। এই খেজুর আকারে বড় এবং রং বাদামী হয়ে থাকে। 

এই খেজুরে আছে ভিটামিন, মিনারেল ও ফাইবার যা আমাদের হৃদরোগ প্রতিরোধ করে এবং হজমে
সহায়তা করে। এছাড়াও এই খেজুর হাড় ও মস্তিষ্কের জন্য বেশ উপকারী।

খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর ফ্রক্টোজ ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ সুস্বাদু ও সুপরিচিত ফল। চিনির বিকল্প হিসেবে
খেজুর ব্যবহার ব্যবহার করা হয়। এটি আমাদের রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়।
মানবদেহের শক্তির একটি ভালো উৎস হলো খেজুর। যদিও প্রত্যেকটা ফলই আমাদের শরীরে কম
বেশি উপকার সাধন করে তবে খেজুর হলো এমন একটি ফল যা মানব দেহের জন্য সবচেয়ে বেশি
উপকারী।

খেজুর খেলে আমাদের শরীরের ক্লান্তি দূর হয়। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ভিটামিন বি ও ভিটামিন বি ৬ আর এই সকল ভিটামিন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে
সাহায্য করে থাকে। প্রতি ১০০ গ্রাম খেজুরে আছে ভিটামিন সি যা থেকে ২৩০ ক্যালোরি
শক্তি উৎপাদন করতে পারে। প্রাচীনকাল থেকেই পশ্চিমা দেশ ও আফ্রিকার দেশগুলো যেমন
ইরাক, তুরস্ক ও মরক্কোতে খেজুর ব্যবহার হয়ে থাকে।

আরো পড়ুনঃ কাঁচা বাদাম নাকি ভাজা বাদাম কোনটি খাওয়া শরীরের জন্য ভালো জেনে নিন

বাংলাদেশসহ পৃথিবীর সকল ইসলামী দেশগুলোতে পবিত্র রমজান মাসে খেজুরের বিকল্প
চিন্তা করাই যায় না।খেজুর পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল। পাকা খেজুরে প্রায় ৮০
শতাংশ চিনি রয়েছে, এছাড়াও রয়েছে খনিজ, বোরন, ফ্লোরিন, ম্যাগনেসিয়াম, 
কোবাল্ট, সেলেনিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ এবং জিংক এর মত গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান।
নিচে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা বিস্তারিত আলোচনা করা হলো। –

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

খেজুরে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা পালন করে থাকে। ডায়াবেটিসের জন্য যারা চিনি খান না তারা চিনির বিকল্প
হিসেবে খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে ইনসুলিন সিক্রেট এর মাধ্যমে মানবদেহের অগ্নাশয়
কার্যকারিতা বাড়ায়। এছাড়াও খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের
রক্তে শর্করার মাত্রা স্থির রাখে। তবে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নরমাল
খেজুর খাওয়ার চেয়ে শুকনো খেজুর খাওয়া সবচেয়ে বেশি উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং আমাদের
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এটি আমাদের খাবারকে সঠিকভাবে হজম করতে সাহায্য করে থাকে,
কখনো কখনো ডাইরিয়ার জন্য খেজুর বেশ উপকারী। তবে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সবচেয়ে
কার্যকরী হল খেজুর রাতে ভিজিয়ে রেখে সকালে খেজুর সহ পানি পান করা। এই খেজুর
ভেজানো পানি সবচেয়ে বেশি উপকারী।  

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

খেজুরে বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। খেজুরে
আরো রয়েছে ভিটামিন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আঁশ। এছাড়াও রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার যা আমাদের দেহের অনেক রোগ যেমন – ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং
মেদ বা স্থূলতা নিরাময় করতে সহায়তা করে থাকে।

এছাড়া ও ফাইবার আমাদের পেটের আলসারসহ ক্যান্সারের ঝুঁকে কমাতে সহায়তা করে।
এছাড়াও খেজুর ক্যারোটিন‍্যেড, অ্যান্থাসায়ািনস, ক্যারোটিনয়েড সমৃদ্ধ খাবার যা
ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। তাই আমাদের প্রতিদিন খেজুর খাওয়া উচিত। তাই
আমাদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন।

ত্বকের বাধ্যক্য প্রতিরোধ করে

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ডি যা আমাদের
ত্বক শিথিল হওয়া থেকে রক্ষা করে থাকে। খেজুর ত্বকের আদ্রতা ধরে রাখে এবং
স্থির স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে। যার কারণে ত্বকে বলি দেখা পড়ে না। খেজুর
আমাদের শরীরের মেলানিন সংগ্রহ করতে বাধা দেয় কারণ খেজুরে আছে আন্টি এজিং
নামক উপাদান।

আর এই উপাদানের কারণে আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। খেজুর আমাদের ত্বকের
তারণ্য দীর্ঘদিন ধরে রাখে। বিশেষ করে পুরুষদের ত্বকের জন্য খেজুর সবচেয়ে বেশি
উপকারী। নিয়মিত খেজুর খেলে ত্বক ভেতর থেকে ভালো থাকে।

রক্তস্বল্পতা দূর করে

খেজুর রক্তস্বল্পতা দূর করে কারণ খেজুরে রয়েছে আয়রন যা শরীরকে সুস্থ রাখতে এবং
রক্ত উৎপাদন করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। পুষ্টি বিদ দের মতে, আমাদের
শরীরে যে আয়রন প্রয়োজন তার প্রায় ১১ ভাগই পাওয়া যায় খেজুর থেকে।  তাই
আমাদের শরীরে খেজুরের ভূমিকা অপরিসীম।

উচ্চ রক্তচাপ কমায়

খেজুরে প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে আর ম্যাগনেসিয়াম মানবদেহের উচ্চ
রক্তচাপ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।তাই আমাদের খেজুর খাওয়ার
উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন।

 হৃদ স্পন্দনের হার ঠিক রাখে

খেজুর মানবদেহের হৃদ স্পন্দনের হার ঠিক রাখে। মানব দেহের একটি অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল হৃদপিণ্ড আর এই হৃদ স্পন্দন ঠিক রাখতে খেজুর
অপরিহার্য।

চোখের রেটিনা ভালো রাখে

খেজুরে থাকে জিক্সথিন এবং লিউটেন যা চোখের রেটিনা ভালো রাখতে অপরিহার্য। এছাড়াও
খেজুরে রয়েছে ভিটামিন “এ” যা চোখের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই
আমাদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন।

বন্ধ্যাত্ব দূর করে

খেজুর বন্ধ্যাত্ব দূর করতে সাহায্য করে থাকে। আফ্রিকা মহাদেশের লোকগুলো
বিশেষ করে পুরুষেরা বন্ধ্যাত্বর জন্য দীর্ঘদিন ধরে খেজুর ব্যবহার করে আসছেন।
খেজুরের ফুলের পরাগরেণু শুক্রাণু বৃদ্ধি করে এবং বন্ধ্যাত্ব দূর করে। খেজুর এবং
খেজুরের ফুলের পরাগরেণু ডিএনএর গুণগতমান বৃদ্ধি করে যার ফলে কাজের গতি বাড়ে।
শরীর দুর্বল লাগলে কয়েকটি খেজুর খেলে শরীরের শক্তি ফিরে পাওয়া যায়।

 খেজুর  এবং দুধ খাওয়ার উপকারিত

খেজুর এবং দুধ একসঙ্গে খেলে রক্তে হিমো গ্লোবিনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় কারণ খেজুর
এবং দুধ এই দুই খাদ্যের মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আইরন যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের
মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। এগুলো আমাদের রক্তে হিমোগ্লোবিনের পাশাপাশি প্রোটিনের
মাত্রা ও বাড়িয়ে দেয়। খেজুর এবং দুধ একসাথে ফুটিয়ে খেলে সবচেয়ে বেশি উপকার
পাওয়া যায়। প্রতিদিন খালি পেটে নিয়ম করে দুধ এবং খেজুর খেলে ২ সপ্তাহের মধ্যে
রক্তস্বল্পতা দূর হয়।

আরো পড়ুনঃ  বাদাম খাওয়ার উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জেনে নিন

একজন মানুষের শরীরে যে পরিমাণ আয়রন প্রয়োজন তার শতকরা ১১ ভাগই পূরণ হয় খেজুর
খাওয়ার মাধ্যমে। খেজুরে রয়েছে ভিটামিন, আয়রন ,ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম,
পটাশিয়াম, ফাইবার ও জিংক। তাই প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আমাদের সবারই কিছু
খেজুর রাখা উচিত ।এছাড়াও দুধ এবং খেজুর দিয়ে মিল্কশেক করে খাওয়া যায় যেটা
স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী।

খেজুর ভিজিয়ে খাওয়ার উপকারিতা

খেজুর আমাদের সবারই প্রিয় একটি ফল। খেজুর ফ্রকটজ এবং গ্লাইসামিক সমৃদ্ধ একটি
পুষ্টিকর ফল। খেজুর আমরা শুকনো এবং ভিজিয়ে উভয় ভাবেই খেয়ে থাকি।তবে শুকনো খেজুর
খাওয়ার চেয়ে ভিজানো খেজুর খাওয়া বেশি উপকারী। যদিও ভেজানো খেজুরের চেয়ে শুকনো
খেজুরের স্বাদ একটু অন্যরকম বেশি পাওয়া যায় তবে খেজুর ভিজিয়ে রাখলে তাতে থাকা
ফাই টিক আ্সিড এবং ট্যানিন  দূর হয় যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য
উপকারী। 

তবে পুষ্টিগুণ সঠিকভাবে পেতে খেজুর আগের রাতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। তবে কমপক্ষে ৮
থেকে ১0 ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখলে এর পুষ্টিগুণ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়। এছাড়া
যাদের অ্যালার্জি আছে তাদের জন্য শুকনো খেজুর ক্ষতিকারক। তাই তারা খেজুর ভিজিয়ে
খেতে পারেন। তাই আমাদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানা
প্রয়োজন।

 সকালে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা

সকালে খালি পেটে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা অনেক বেশি। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে
ক্যালরি। আর সারাদিন কাজ করতে প্রয়োজন হয় ক্যালরি। তাই যদি আপনি সকালে খালি
পেটে খেজুর খান তাহলে আপনি সারাদিন কাজ করা শক্তি পাবেন। এছাড়া খেজুরে রয়েছে
শতকরা ৮০ ভাগ চিনি । আর এই চিনি আপনার শরীরের অন্যতম শক্তির উৎস হিসেবে কাজ করে
থাকে।

সামনে রমজান মাস। তাই আপনারা প্রতিদিন ভোরে সাহারি হিসেবে খেজুর খেতে পারেন এতে
আপনার সারাদিন ক্লান্তি লাগবেনা। এমনকি পানির পিপাসাও কম লাগবে। খেজুরে রয়েছে
প্রচুর পরিমাণে ফাইবার আর এই ফাইবার আপনার কোষ্ঠ কাঠিন্য দূর করবে। এক্ষেত্রে
সকালে খালি পেটে দুই (২) থেকে তিনটা (৩) টা খেজুর খেয়ে এক গ্লাস কুসুম গরম পানি
পান করতে হবে।এতে অনেক উপকার পাবেন।

আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার উপকারিতা  –  আমলকির ব্যবহার  জেনে নিন

তবে এক্ষেত্রে শুকনো খেজুর খাওয়ার চেয়ে ভিজানো খেজুর খেলে বেশি উপকার পাবেন।
খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন আর আয়রন হল হিমোগ্লোবিনের অন্যতম উৎস। আপনি
যদি সকালে খেজুর খান তাহলে আপনার শরীরে আয়রনের ঘাটতি থাকবে না, এর ফলে আপনার
শরীরের রক্ত প্রচুর পরিমাণে অক্সিজেন পাবে আপনি সারাদিন পরিশ্রম করতে পারবেন।

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম যা আপনার হাড় গঠন করবে। আপনি হয়ে
উঠবেন সুঠাম দেহের অধিকারী। খেজুরে রয়েছে অধিক পরিমাণে ফাইবার আর ফাইবার কোষ্ঠ
কাঠিন্য দূর করে আপনার শরীরে ক্লোন ক্যান্সারের হাত থেকে রক্ষা করবে। তাই
প্রতিদিন নিয়ম মেনে খেজুর খান।

দিনে কয়টা করে খেজুর খাওয়া উচিত

খেজুর খাওয়ার নির্ধারিত কোন সময় বা পরিমাপ নেই। তবে অতিরিক্ত কোন কিছুই খাওয়া
ভালো না। অতিরিক্ত খেলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়। তাই পুষ্টিবিদরা মনে করেন
প্রতিদিন তিন ৩ থেকে চার ৪ টা খেজুর খেলেই তা একজন মানুষের জন্য যথেষ্ট হবে। তবে
দুই ২ টা করে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। তবে যারা ওজন বাড়াতে চান তারা
প্রতিদিন চার ৪ থেকে ছয় ৬টা খেজুর খেতে পারেন।

খেজুরের পুষ্টিগুণ

খেজুর ফ্রকটজ ও গ্লাইসোমিক সমৃদ্ধ একটি পুষ্টিকর ফল। খেজুর কে চিনির বিকল্প
হিসাবে ব্যবহার করা হয় কারণ খেজুরে রয়েছে শতকরা ৮০ ভাগ চিনি। তাই খেজুর আমাদের
রক্তের শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। প্রতি একশ (১০০) গ্রাম খেজুরেরয়েছে ৯০%
ক্যালরি, ৮০ শতাংশ চিনি, প্রোটিন ২.৪৫ গ্রাম ,প্রোটিন ১৩ মিলিগ্রাম, ক্যালসিয়াম
২.৮ বা ৩৯ গ্রাম, ফাইবার শক্তি ০.৮২ কিলোগ্রাম ,শর্করা ৭৫.০৩ গ্রাম, ফাইবার ৮
গ্রাম, স্নেহ পদার্থ ০ .৩৯ গ্রাম,

আরো পড়ুনঃ কালোজিরা খাওয়ার উপকারিতা – কালোজিরা খাওয়ার নিয়ম  জেনে নিন

ভিটামিন ( বি ২) ০.০৬৬ মিলিগ্রাম, ভিটামিন (বি ৬) ০.১৬৫ গ্রাম, ভিটামিন সি ০.৪
মিলিগ্রাম, ভিটামিন কে ২.৭ মাইক্রগ্রাম, ম্যাগনেসিয়াম ৪৩ মিলিগ্রাম, ম্যাঙ্গানিজ
০.২৬ মিলিগ্রাম, ফসফরাস ২৬ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৬৫৬ মিলিগ্রাম, সোডিয়াম ২
মিলিগ্রাম, জিঙ্ক ০.২৯ মিলিগ্রাম, পানি ২ ০.৫ ৩ গ্রাম।

 খেজুর খাওয়ার নিয়ম

খেজুর আমরা সারা বছরই খেয়ে থাকি। আমরা সাধারণত শুকনো খেজুর বেশি খেয়ে থাকি। তবে
আমাদের উচিত খেজুর খাওয়ার কিছু নিয়ম এবং সময় জেনে তারপর খেজুর খাওয়া। নিচে
খেজুর খাওয়ার কিছু নিয়ম উল্লেখ করা হলো। –

  • খেজুর সারারাত পানির সাথে ভিজিয়ে রেখে সকালে খালি পেটে খেলে বেশি উপকার পাওয়া
    যায়।
  • খেজুর দুধের সাথে ফুটিয়ে দুধসহ খেতে পারেন এতে আপনার আয়রনের চাহিদা পূরণ হবে।
    কারণ  এটি একটা  উপাদেও খাদ্য।
  • খেজুর আমাদের শরীরে ক্লান্তি দূর করে তাই আপনি যখন ব্যায়াম করবেন ঠিক তার
    আধাঘন্টা বা ৩০ মিনিট আগে কয়েকটি খেজুর খেতে পারেন। এতে আপনি সহজে ক্লান্ত
    হয়ে পড়বেন না।
  • আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেজুর খেতে পারেন। খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমানে
    ক্যালোরি আর এই ক্যালোরি আপনার সারাদিনের কাজের জন্য শক্তি যোগাবে। তাই
    আমাদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন।

খেজুর খাওয়ার অপকারিতা

আমরা জানি খেজুর ফ্রকটোস ও গ্লাইসেমিক সমৃদ্ধ একটি পুষ্টিকর ফল। কিন্তু যার
উপকারিতা আছে তার অপকারিতা ও আছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন না করলে
উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হয়। যেমন –

রক্তে চিনি বা সুগার বৃদ্ধি করে

খেজুরে রয়েছে শতকরা ৮০ভাগ চিনি। আর এই  খেজুরে থাকা প্রাকৃতিক চিনি বা
সুগার ব্লাড সুগার বৃদ্ধি করে থাকে। তাই যাদের ডায়াবেটিস আছে তারা খেজুর খাওয়ার
আগে অবশ্যই ব্লাড সুগারের মাত্রা নির্ণয় করে তারপর খেজুর খাবেন।

পটাশিয়াম এর মাত্রা বাড়িয়ে দেয়

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। আর যাদের শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি
তারা খেজুর খাওয়ার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে তারপর খেজুর খাবেন। তাই
আমাদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন।

এলার্জি বৃদ্ধি করে

খেজুর আমাদের শরীরের এলার্জি বৃদ্ধি করে থাকে। তাই যাদের শরীরে এলার্জি আছে তারা
খেজুর খাওয়ার থেকে বিরত থাকবেন। বিশেষ করে শুকনো খেজুর বেশি এলার্জি সৃষ্টি করে
থাকে।

ওজন বৃদ্ধি করে

খেজুরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি যা আমাদের ওজন বৃদ্ধি করে থাকে, তাই যারা
স্বাস্থ্য সচেতন তাদের উচিত অতিরিক্ত খেজুর না খাওয়া। তাদের অবশ্যই অতিরিক্ত
খেজুর খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।তাই আমাদের খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর
খাওয়ার নিয়ম জানা প্রয়োজন।

শেষ কথা

খেজুরে বিদ্যমান অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। খেজুরে
আরো রয়েছে ভিটামিন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম এবং আঁশ। পুষ্টিবিদরা মনে
করেন প্রতিদিন তিন ৩ থেকে চার ৪ টা খেজুর খেলেই তা একজন মানুষের জন্য যথেষ্ট হবে।
তবে দুই ২ টা করে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়। তবে যারা ওজন বাড়াতে চান তারা
প্রতিদিন চার ৪ থেকে ছয় ৬টা খেজুর খেতে পারেন।

আমি আমার আর্টিকেলে খেজুর খাওয়ার উপকারিতা – খেজুর খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে
বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আমি আশা করি আপনাদের অনেক ভালো লাগবে।