অথবা, খিজির কেন অন্যত্র থাকে?
উত্তরঃ ‘চিলেকোঠার সেপাই’ আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের অসাধারণ একটি উপন্যাস। এ উপন্যাসে লেখক নিপুণ হাতে সমাজ বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। চরিত্রগুলাের মনােবিশ্লেষণ করেছেন দক্ষতার সাথে। এই মনােবিশ্লেষণের সাথে জড়িয়ে রয়েছে এ উপন্যাসের খিজিরের বাল্যকাল।
খিজিরের মায়ের স্বামী ফালু মিস্ত্রী। ফালুর বসবাস ফরাসগঞ্জের একটা বড়বাড়ির ঘােড়ার আস্তাবল। বাড়ির মালিক তার দুই পুরুষের মনিব, ফালুর বাপ মনিবের ঘােড়ার গাড়ি চালাতাে, ঘােড়ার গাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার পর আস্তাবলটাই সাফ করে ফালু সেখানে বাস করে। খিজির সূত্রাপুরের ঢাল থেকে রিকশা ঠেলে লােহার পুলে উঠিয়ে দিয়ে ২/৪ আনা রােজগার করত। ফালু খিজিরের রােজগারের খবর নিত, পয়সার পরিমাণ কম হলে গালিগালাজ করত। একদিন মােলাকাত ছবি দেখে বউকে রাতে কাহিনি বলছে, এমন সময় ঘুমন্ত খিজির ফালুর কাপড় চোপড় ভরে প্রস্রাব করে দেয়। সাথে সাথে ফালু উত্তেজিত হয়ে খিজিরের মরণ কামনা করে। মাঝে মাঝে ঘুমের ভিতর সে প্রস্রাব করত। অনেক তাবিজ কবজ ঝাড়ফুক শেষে শেষ পর্যন্ত ফরিদাবাদ মাদ্রাসার মৌলবি সাহেবের পানিপড়া খেয়ে তার বিছানায় প্রস্রাব করা বন্ধ হয়। এতেও মারধাের কমে না। খিজির অনেকদিন থেকেই বাড়ি থেকে কেটে পড়ার চেষ্টা করেছে। শেষে একদিন খিজির তার মাকে নিয়ে পালিয়ে আসে। মূলত ফালু মিস্ত্রীর সাথে থাকতেই খিজিরের মা রহমতউল্লাহর ওখানে কাজের ব্যবস্থা করে নেয়। মহাজনের বাড়িতেই থাকা- খাওয়া এবং সিঁড়ির নিচে ঘুমাতাে। পরে খিজিরকে তার মা মহাজনের গ্যারেজে গাড়ি পাহারার নাম করে রাতে ওখানে শুতে দেয়।
রহমতউল্লাহহ মহাজনের বাড়ি, রিকশার গ্যারেজ, আলাউদ্দিনের গ্যারেজ, রিকশা চালানাে, স্কুটার চালানাে, রিকশা। ও স্কুটারের যন্ত্রপাতি ঠিক করা, এভাবেই চলছে খিজিরের বহুদিন।
Leave a comment