অথবা, খাদ্য সংগ্রহ সমাজ বলতে কী বুঝ?
ভূমিকাঃ প্রাগৈতিহাসিক যুগের আদিম অবস্থা থেকে শুরু করে বর্তমান সমাজ নানা বিবর্তনের ফলস্বরূপ আবির্ভূত হয়েছে। সমাজ যে বিবর্তিত ধারায় পরিবর্তিত হয়ে এই অবস্থায় এসে উপনীত হয়েছে তাতে কোন সন্দেহ নেই। এমন কি সমাজবিজ্ঞানীদের মধ্যেও এই বিষয়টি নিয়ে তেমন কোনো মতভেদ দেখা যায় না। সমাজবিজ্ঞানীরা বিবর্তনের ধারায় সমাজ বিকাশের ইতিহাস বর্ণনা করলেও স্তরায়নের ব্যাপারে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। নিম্নে বিবর্তনকে সমাজবিজ্ঞানী ও নৃবিজ্ঞানীদের বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে উপস্থাপন করা হলো-
অন্যদিকে সমাজ বিজ্ঞানী Morgan মনে করেন, প্রত্যেক সমাজকে তিনটি স্তরের মধ্য দিয়ে অতিক্রম করে বর্তমান পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। পর্যায় তিনটি হলো:(১) Savagery (বন্যদশা), (২) Barbarism (বর্বরদশা), (৩) Civiliation (সভ্যদশা)।
খাদ্য সংগ্রহ সমাজের সংজ্ঞাঃ প্রকৃতির অমোঘ নিয়মে মানুষের জীবনযাত্রা ছিল আদিম মানুষের রীতি। জীবিকার প্রয়োজনে মানুষের বিচরণ ছিল প্রকৃতির বিভিন্ন সামগ্রীর ওপর। তাই এখানে খাদ্য সংগ্রহ ছিল বিচিত্র প্রকৃতির।
মানবসমাজের প্রথমিক পর্যায়ে যখন উৎপাদন কৌশল আবিষ্কৃত হয়নি তখন মানুষ মূলত জীবনধারণের জন্য খাদ্য সংগ্রহে নিয়োজিত ছিল। এ পর্যায়ে মানুষ অতি প্রকৃতি নির্ভর ছিল বলে তাদের জীবিকার উৎসও ছিল প্রকৃতির ওপর। তাই খাদ্য সংগ্রহ সমাজ মূলত সেই সমাজকে নির্দেশ করে যে, সমাজের মানুষ ছিল আদি পর্যায়ের এবং খাদ্য উৎপাদন কৌশল জনিত না ফলে জীবিকার জন্য পশু, মৎস্য এবং ফলমূল আহরণ করতে হতো। মূলত খাদ্য সংগ্রহ সমাজ ছিল আদিম সমাজ। খাদ্য সংগ্রহমূলক সমাজে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন, বনজঙ্গল থেকে ফলমূল সংগ্রহ, বন্য পশু শিকার এবং খাল-বিল নদী- নালা থেকে মৎস্য শিকারের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এ সময়ে মানুষের অর্থনৈতিক জীবন ছিল অনিশ্চিত।
পরিশেষঃ পরিশেষে বলা যায় যে, খাদ্য সংগ্রহ পর্যায়টি ছিল সমাজ বিকাশের প্রাথমিক স্তর। তৎকালীন সময় ছিল খুবই প্রতিকূল। অর্থাৎ মানুষ বসবাসের অনুপযোগী। এই প্রতিকূল অবস্থার সাথে যুদ্ধ করে মানুষ বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। তাই মানবসভ্যতা বিকাশে এই স্তরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বলা হয়ে থাকে আজকের সুসভ্য সমাজ শিকার ও সংগ্রহ সমাজের গতিশীলতাস্বরূপ আবির্ভূত হয়েছে।
Leave a comment