❋ খাদ্যদ্রব্যে মারাত্মক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ প্রয়ােগে জনস্বাস্থ্যের বিপর্যয় রােধে করণীয় সম্পর্কে তােমার অভিমত ব্যক্ত করে বন্ধুকে একখানা পত্র লেখ।
ডেমরা, ঢাকা।
২৫ জুলাই ২০২১
সুপ্রিয় তারেক
শুরুতে আমার শুভেচ্ছা ও ভালােবাসা নিও। গতকাল তােমার পত্র পেয়েছি। দীর্ঘদিন তােমাকে পত্র না দেওয়ায় তুমি অভিমান প্রকাশ করেছ। আসলে আমি পড়াশুনার পাশাপাশি গবেষণা সহকারী হিসেবে কাজ করায় ব্যস্ত ছিলাম।
আমার এক বন্ধুর বাবা বাংলাদেশে খাদ্যদ্রব্যে ভেজাল’ শীর্ষক একটি গবেষণা পরিচালনা করেছেন। আমি ওনার সাথেই মাঠ পর্যায়ে কাজ করে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করেছি। গবেষণায় আমরা দেখতে পাই যে, বাংলাদেশে বেশিরভাগ খাদ্যদ্রব্যে ছােটো-বড়াে ব্যবসায়ীরা ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশাচ্ছে। অসাধু ব্যবসায়ী ও দোকানদাররা শাকসবজি, ফলমূল, মাছ-মাংস দুধ প্রভৃতি খাদ্যদ্রব্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশাচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ফলমূলে তারা কার্বাইড ও তুতের মতাে ক্ষতিকর পদার্থ ব্যবহার করে। শাকসবজি ও মাছ-মাংস তাজা রাখতে তারা প্রাণঘাতী ফরমালিন ব্যবহার করে। কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ফলের রং আকর্ষণীয় করে তুলতে রং প্রে করে থাকে। এছাড়া শিশুখাদ্য তথা গুঁড়াে দুধে তারা ক্ষতিকর মেলামিন’ নামক রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার করে। বাজারে ইদানীং ফরমালিন শনাক্তকারী কিট পাওয়া যাচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত দফায় দফায় অভিযান চালাচ্ছে। ফরমালিন, কার্বাইড ও অন্যান্য ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মিশ্রণকারীদের জেল-জরিমানা করা হচ্ছে। কিন্তু অসাধু ব্যবসায়ীরা তাতেও দমেনি। আমরা ক্রেতা সাধারণ ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় এসব ভেজাল খাদ্য কিনে প্রতারিত হচ্ছি এবং এগুলাে খেয়ে নিজেকে ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছি। এ অবস্থার আশু নিরসন না হলে জাতির বিশাল ক্ষতি হবে। আর তা থেকে রক্ষা পেতে জনগণকে সচেতন হতে হবে। সরকারি ও বেসরকারিভাবে নজরদারি করতে হবে। বাজারে বিষাক্ত দ্রব্য শনাক্তকারী যন্ত্র স্থাপন করতে হবে। যারা এ ধরনের গর্হিত কাজ করে তাদেরকে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে। ইতােমধ্যে যারা বিষাক্ত খাদ্য গ্রহণ করে রােগে ভুগছেন, তাদের দ্রুত উন্নত চিকিৎসা দিতে হবে। পচনশীল দ্রব্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। যারা খাদ্যে ভেজাল মেশায় তাদের সমাজ থেকে বয়কট করতে হবে। খাদ্যে ভেজালের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এছাড়া ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ যেন হিতকর কাজ ছাড়া অন্য কোনাে কাজের জন্য কেউ সংগ্রহ করতে না পারে, সেদিকে কর্তৃপক্ষকে জোর নজরদারি রাখতে হবে।
তুমি এ ব্যাপারে সতর্ক থেকো আর অন্যদেরকেও সতর্ক হতে বলাে। আজ আর নয় ।
[ পত্র লেখা শেষে খাম এঁকে খামের ওপরে ঠিকানা লিখতে হয়। ]
Leave a comment