যে ধরনের রচনাতে জীবন ও সমাজের বাস্তবচিত্র এবং চরিত্রের আঁতের কথা যুক্তি ও মনস্তত্ত্ব সহকারে রূপায়িত হয়, ঘটনা চরিত্র যুক্তি ও কার্যকারণ সূত্রে গ্রথিত হয় সেই রচনাকে উপন্যাস হিসাবে অভিহিত করা হয়।
উপন্যাস জীবন ও সমাজের দর্পন। এখানে ঘটনা ও চরিত্রের বিশ্বাস যােগ্যতাই বড় কথা। যদিও অতিপ্রাকৃতি বা ঐতিহাসিক ঘটনা উপন্যাস জগতে অচ্ছুত নয়। তবে এগুলিকে অবশ্যই চরিত্র বৈশিষ্ট্যের অংশ হয়ে উপন্যাসের অন্তর্গত হতে হবে।
বৈশিষ্ট্য: নিম্নলিখিত বৈশিষ্ট্যগুলি থাকলে একটি লেখাকে উপন্যাস বলা যাবে-
-
যে লেখা মানব সমাজ ও জীবনের কথা বলে।
-
যা বাস্তব সম্মত রূপেই প্রকাশ পায়।
-
মাঝে মাঝে রােমান্স, রূপ কথা, স্বপ্ন বা কল্পরাজ্যের সন্ধান দিয়ে থাকে।
-
গদ্যে লিখিত হলেও অনেক ক্ষেত্রেই কাব্যিক সুর ধ্বনিত হয়।
-
প্রাত্যহিক সমাজ ও বাস্তব সত্য ও তথ্যের অনুসরণ যে রচনা।
-
নাচারালিজম, রিয়ালিজম, চৈতন্য প্রবাহ রীতি পেরিয়ে নানা আঙ্গিকে নতুন নতুন দিক উন্মােচিত করে চলেছে।
প্রবন্ধ ও উপন্যাসের মধ্যে পার্থক্য:
-
প্রবন্ধ শিল্পের স্বাভাবিক মাধ্যম গদ্য। উপন্যাস মানব সমাজ ও জীবনের কড়চা।
-
আয়তনের স্বল্পতাই প্রবন্ধের অন্যতম শর্ত। কিন্তু উপন্যাসের আয়তন ব্যাপক।
-
গদ্যে লিখিত হলেও উপন্যাসে অনেক ক্ষেত্রে কাব্যিক সুর ধ্বনিত হয়। কিন্তু প্রবন্ধে গদ্যে কাব্যিক সুর থাকে না।
-
উপন্যাস বাস্তব তা প্রাধান্য পায় কিন্তু প্রবন্ধে থাকে যুক্তির প্রাধান্য।
-
বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে পাঠককে মূল সিদ্ধান্তে উপনীত হতে সাহায্যে করে প্রবন্ধ, কিন্তু উপন্যাস বিতর্কিত বিষয় সম্পর্কে পাঠককে অবহিত করার এবং সিদ্ধান্ত নেবার ভাব থাকে পাঠকের হাতে।
Leave a comment