মৃত্যুঞ্জয়ের সঙ্গে নিখিলের সাক্ষাৎকার: মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কে বাঁচায়, কে বাঁচে ছোটগল্পে অনাহারে মৃত্যু দেখার পর মৃত্যুঞ্জয় যখন সাময়িক অসুস্থ অবস্থায় অফিসে নিজের চেয়ারে বসেছিল, তখনই সেই ঘরে তার সহকর্মী-বন্ধু নিখিল প্রবেশ করে।

মৃত্যুঞ্জয়ের আর্তনাদ : মৃত্যুঞ্জয়ের সংকটাপন্ন চোখ-মুখ এবং দেহভঙ্গি দেখে কৌতুহলী নিখিল তাকে কী হয়েছে প্রশ্ন করলে অন্যমনস্কভাবে, আর্তনাদের সে বলে ওঠে, “মরে গেল। না খেয়ে মরে গেল”।

নিখিলের উপলব্ধি : আরও কিছু আনুষঙ্গিক প্রশ্ন করে নিখিল বুঝতে পারে যে, ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর ব্যাপারটা মৃত্যুঞ্জয় কিছুতেই মন থেকে মেনে নিতে পারছে না। তার মাথার মধ্যে ঘুরছে নানা কথা, নানা প্রশ্ন। ফুটপাথে অনাহার-মৃত্যুর কদর্যতা, ক্ষুধার কষ্ট ও মৃত্যুর কষ্টের মধ্যে কোন্টা বেশি যন্ত্রণাদায়ক সেই ভাবনা তার মনকে আলােড়িত করছে।

মৃত্যুঞ্জয়ের প্রতিক্রিয়া : ছলছল চোখে মৃত্যুঞ্জয় জানায় যে, সে বেঁচে থাকা সত্ত্বেও একজন মানুষ যে না খেতে পেয়ে মারা গেলে অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত সে কীভাবে করবে। এতদিন ধরে সব জেনেশুনেও নিতান্ত স্বার্থপরের মতাে সে চারবেলা পেটপুরে খেয়ে এসেছে। কাজের লােকের অভাবে ত্রাণকার্য যেখানে ঠিকমতাে চালিত হচ্ছে না, সেখানে এতদিন ধরে সে নির্লজ্জের মতাে তার অফুরন্ত অবসর কাটানাের কথা ভেবেছে। 

শেষের কথা : নিখিলকে এসব কথা বলে মৃত্যুঞ্জয় আসলে দুর্ভিক্ষপীড়িত মানুষগুলির প্রতি নিজের উদাসীনতাকেই ধিক্কার জানিয়েছে।