কবির মনােভাব: কবি মৃদুল দাশগুপ্তের ‘ক্রন্দনরতা জননীর পাশে’ কবিতাটি সামাজিক অবক্ষয়ের জ্বলন্ত স্বরূপ।

দায়বদ্ধতা ও মূল্যবােধ: সমাজে ঘটে যাওয়া অজস্র ঘটনার প্রবাহকে নিজের মতাে করে কবিতায় রূপ দেন কবি। কিন্তু তা শুধু ঘটনাকে তুলে ধরার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না, সঙ্গে যুক্ত হয় কবির নিজস্ব প্রতিক্রিয়াও। সেই প্রতিক্রিয়ায় ক্রোধ আর ঘৃণাও প্রায়ই মিশে যায়। নিহত ভাইয়ের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে তাঁর মধ্যে জন্ম নেয়। ক্রোধ। মানুষের প্রতি ভালােবাসা, দায়বদ্ধতা আর মূল্যবােধই তাঁর এই ক্রোধের উৎস।

প্রতিবাদী সত্তা : নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর যখন জঙ্গলে পাওয়া যায়, তখন প্রতিবাদী কবিতার মাধ্যমেই নিজের বিবেককে জাগিয়ে রাখেন। কবি। যে অনুভূতি থেকে নজরুল লিখেছিলেন, “রক্ত ঝরাতে পারি না তাে একা/তাই লিখে যাই এ রক্ত লেখা”, কবি সেই একই প্রেরণা থেকেই লিখে চলেন প্রতিবাদী কবিতা, যার মধ্যে মজুত থাকে বিক্ষোভের বারুদ, সামান্য আগুনের ছোঁয়াতেই যা থেকে নিশ্চিতভাবে ঘটে যাবে প্রতিবাদের বিস্ফোরণ।

কর্তব্যবােধ : এই মৃত্যু, এই নারকীয় অত্যাচার কবির দেশমাতাকে করে তােলে ‘ক্রন্দনরতা’। কবির বিশ্বাস- “সমস্ত কবিতাই জীবন ও জীবনযাপনের”, তাই জীবন লাঞ্ছিত এবং রক্তাক্ত হলে দেশজননীর পাশে দাঁড়ানােই কবির ধর্ম।