উদ্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গ: ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনায় বক্সার জেলখানায় প্রবেশ করে লেখক সুভাষ মুখােপাধ্যায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঘুরে ঘুরে তিনপ্রকার কয়েদির সন্ধান পান’—অভিজাত কয়েদি, অনভিজাত নাবালক কয়েদি, অনভিজাত সাবালক কয়েদি। তথাকথিত ভদ্র, শিক্ষিত যেসব কয়েদি খাদ্যে ভেজাল বা বিষ মিশিয়ে অথবা নােট জাল করে কিংবা ব্যাংক লুঠ করে মানুষকে প্রাণে বা ধনে-প্রাণে মেরে জেলে এসেছেন, তারাই অভিজাত কয়েদি। আর অনাথ যেসব শিশু বা কিশাের পেটের দায়ে ছিচকে চুরি বা পকেটমারি করে এখানে স্থান পেয়েছে, তারাই অনভিজাত নাবালক কয়েদি। আর চোর, ডাকাত, খুনি—ইত্যাদি অপরাধের পাকা অপরাধীরা, যারা মূলত নিরক্ষর ও অভদ্র, তারাই অনভিজাত সাবালক কয়েদি। উদ্ধৃত মন্তব্যটিতে লেখক এই তিনপ্রকার কয়েদির কথা বলেছেন।

বন্দিশিবির তৈরির বর্ণনা : ঘন জঙ্গলে ভরা বক্সা জায়গাটা ইংরেজরা ভুটানের কাছ থেকে লম্বা মেয়াদে ইজারা নিয়েছিল। সেখানে তারা তৈরি করে কেল্লা। পরে সেই কেল্লাকেই তারা জেলখানায় রূপান্তরিত করে। তখন জঙ্গলাকীর্ণ এই অঞ্চলে বাঘের ডাক শােনা যেত, বিষধর সাপেরা ঘুরে বেড়াত। আশেপাশে দোকান-বাজার হাসপাতালও ছিল না। এরকম বিপদসংকুল নির্বাম্ধবপুরীতে স্বাধীনতা সংগ্রামী ভারতীয়দের নিক্ষেপ করতেই ইংরেজরা তৈরি করেছিল এই জেলখানা। তাই এই বন্দিশিবির সাধারণ অপরাধীদের জন্য তৈরি হয়নি।