কার্জনের শিক্ষানীতি-সংক্রান্ত প্রস্তাবে তৎকালীন শিক্ষা পরিস্থিতির পর্যালােচনা করে বলা হয়েছিল—“পাঁচটি গ্রামের মধ্যে চারটি গ্রামে কোনাে স্কুল নেই। প্রতি চারজন ছেলের মধ্যে তিনজন কোনাে প্রকার শিক্ষা না পেয়েই বড়াে হচ্ছে এবং প্রতি চল্লিশ জন বালিকার মধ্যে একজন করে বালিকা বিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযােগ লাভ করছে।

ভারতীয় শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কারে লর্ড কার্জন অনেকগুলি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। এগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল一

  • 1902 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন নিয়ােগ,

  • 1904 খ্রিস্টাব্দে ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয় আইন প্রণয়ন এবং

  • 1904 খ্রিস্টাব্দে শিক্ষানীতির ওপর সরকারি সিদ্ধান্ত গ্রহণ।

শিক্ষা সংস্কারক হিসেবে লর্ড কার্জন যে শিক্ষানীতির প্রচলন করেছিলেন, তার উল্লেখযােগ্য দিক হল—

  • তিনি শিক্ষার গুণগত উৎকর্ষের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেছিলেন।

  • প্রাথমিক শিক্ষার সম্প্রসারণ ও মানােন্নয়নের জন্য বিশেষভাবে উদ্যোগ নিয়েছিলেন।

  • শিক্ষাক্ষেত্রে যথেষ্ট পরিমাণে সরকারি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করেছিলেন।

  • মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার ক্ষেত্রে বহুমুখী পাঠক্রমের ব্যবস্থা করেছিলেন।

  • প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন।

  • কলেজীয় শিক্ষার মানােন্নয়নে সচেষ্ট হয়েছিলেন।

  • বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শিক্ষা ও গবেষণার সুযােগ সৃষ্টি করেছিলেন।

  • কার্জন শিক্ষা-আধিকারিকদের পদ সৃষ্টি করে শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি সুসংগঠিত রূপদানের চেষ্টা করেছিলেন।

  • সর্বোপরি, সাধারণ মানুষের যে শিক্ষার দরকার রয়েছে, এই বিষয়টি সর্বপ্রথম তিনি উপলদ্ধি করেছিলেন।

ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে কার্জনের আন্তরিক উন্নয়ন প্রচেষ্টা আজ সর্বজনস্বীকৃতি লাভ করেছে।