উদ্ভিজ্জ কাঁচামাল : নরম কাঠ, সাবাই ঘাস, বাঁশ, আখের ছিবড়া, ধান ও গমের খড়, পাট, তুলাে ইত্যাদি।
রাসায়নিক কাঁচামালৎ: কস্টিক সােডা, সােডা অ্যাশ, ব্লিচিং পাউডার, সােডিয়াম সালফেট, অ্যালুমিনিয়াম সালফেট, সালফিউরিক অ্যাসিড, ক্লোরিন, চুন, ক্যালশিয়াম সালফেট ও কার্বনেট, গন্ধক, ফটকিরি, বিভিন্ন রং ইত্যাদি।
রবার শিল্পের প্রধান কাঁচামাল প্রাকৃতিক রবার, যা রবার গাছ (হিভিয়া ব্রাসিলিয়েনসিস) থেকে পাওয়া যায়। কাঁচামালের প্রকৃতি তথা সম্পদের দৃষ্টিকোণ থেকে এই প্রাকৃতিক রবারকে বিশুদ্ধ ও পুনর্ভব কাঁচামাল বলা চলে। নিরক্ষীয় অঞ্চলের অরণ্যে এই গাছ জন্মায়। এই গাছের গা কেটে যে রস (Latex) সংগ্রহ করা হয়, তাকেই রবার বলে। [1] পরিবহণের কাজে রবারের ব্যবহার সর্বাধিক। বিভিন্ন ধরনের যানবাহন, যেমন—মােটর, বাস, ট্রাক, সাইকেল, রিক্সা প্রভৃতিতে যে টায়ার ও টিউব ব্যবহার করা হয়, তা তৈরি হয় রবার থেকে। বিমান ওঠানামা করার জন্য বিমানে যে চাকা লাগানাে হয়, তাতেও ব্যবহৃত হয় রবার। গতি বাড়ানাের জন্য বর্তমানে গােরুর গাড়ির চাকাতেও রবারের টায়ার ব্যবহার করা হচ্ছে। অর্থাৎ দ্রুতগতি সম্পন্ন জেট বিমান থেকে শুরু করে ধীরগতি-বিশিষ্ট গােরুর গাড়ি সব ধরনের পরিবহণ ব্যবস্থাই রবারের ওপর নির্ভরশীল। এগুলি ছাড়াও [2] বৈদ্যুতিক তারের আবরণ, [3] ওয়াটার প্রুফ বিভিন্ন জিনিস, [4] খেলাধুলার উপকরণ, [5] জুতাে, [6] চিকিৎসার সরঞ্জাম, [7] ব্যাগ, [8] গদি, [9] পাইপ বা নল প্রভৃতি তৈরিতে রবার ব্যবহার করা হয়। (অবশ্য বর্তমানে এইসব জিনিস তৈরিতে প্রাকৃতিক রবারের বদলে কৃত্রিম রবার, নাইলন, পলিথিন, প্লাস্টিক প্রভৃতি বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে)।
বর্তমানে রবার শিল্পে অগ্রণী দেশ হল মালয়েশিয়া। আমাজন উপত্যকা থেকে রবার গাছের বীজ নিয়ে এসে ব্রিটিশদের উদ্যোগে এখানে প্রথম রবার বাগিচা গড়ে তােলা হয়। এই রবারের ওপর ভিত্তি করেই রবার শিল্পের বিকাশ ঘটেছে।
মালয়েশিয়ায় সর্বমােট রবার উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় 9.70 লক্ষ টন (2012) রবার উৎপাদনের ভিত্তিতে এই দেশের স্থান বিশ্বে তৃতীয়।
মালয়েশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে রবার শিল্পের আধিক্য দেখা যায়। উত্তরে কেড়া থেকে দক্ষিণে জোহাের পর্যন্ত উপকূলীয় সমভূমি ও পার্বত্য পাদদেশ অঞ্চলে অধিকাংশ রবার শিল্পকেন্দ্র গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া দেশের পূর্বাংশে সাবা, পেরাক, সেলাঙ্গর, নেগেরি-সেমবিলান ও সারওয়াক প্রদেশেও এই শিল্পের ব্যাপক বিকাশ ঘটেছে। মালয়েশিয়ার কেলান্তন জেলা রবার শিল্পের জন্য বিখ্যাত।
Leave a comment