বাংলাদেশের মতো দরিদ্র অথচ উন্নয়নশীল দেশে কর্মমুখী শিক্ষা একান্ত প্রয়োজন আমাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় কর্মমুখী শিক্ষা – অনুচ্ছেদ লিখতে আসে। তাই আমি কর্মমুখী শিক্ষা – অনুচ্ছেদ যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আমার এই কর্মমুখী শিক্ষা – অনুচ্ছেদ তোমাদের অনেক উপকারে আসবে।

প্রিয় শিক্ষার্থী তোমরা মনে রেখো যেকোনো বিষয় শুধু লিখলেই হবে না সেই বিষয়ের মধ্যে জ্ঞান, অনুধাবন, প্রয়োগ, বিশ্লেষণ থাকতে হবে তবেই তোমরা যথাযথ নাম্বার পাবে। তাই তোমরা যে বিষয়ে উত্তর লিখো না কেন সঠিকভাবে যাচাই করে তারপরে তোমরা পড়ার চেষ্টা করবে এবং সেই অনুযায়ী লিখবে। আমি আশা করি এতে তোমরা ভালো কিছু জানতে পারবে, শিখতে পারবে এবং ভালো ফলাফলও করতে পারবে।

কর্মমুখী শিক্ষা – অনুচ্ছেদ

শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষা ছাড়া কোন জাতি উন্নতি করতে পারে না কিন্তু যে শিক্ষাকে বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করা যায় না সে শিক্ষা আমাদের জীবনে অর্থহীন। আর এ ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত হলে কেবল পরিবারের নয়, সে দেশ ও জাতির বোঝা হয়ে যায়। তাই যে শিক্ষা কর্মমুখী অর্থাৎ জীবনভিত্তিক সেই শিক্ষাই হলো প্রকৃত শিক্ষা। একজন ব্যক্তিকে তার আত্ম প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করার লক্ষ্যে বিশেষ কোন কর্মে প্রশিক্ষিত করে তোলার জন্য যে শিক্ষা তাকে বলা হয় কর্মমুখী শিক্ষা।

অর্থাৎ যে শিক্ষা ব্যবস্থায় একজন শিক্ষার্থীকে কোন একটি বিষয়ে হাতে-কলমে শিক্ষা দেওয়া হয় এবং সেই শিক্ষা শেষে সে তার জীবিকা অর্জনের যোগ্যতা অর্জন করতে পারে এক কথায় তাকে বলা হয় কর্মমুখী শিক্ষা। বর্তমান সময়ে এই শিক্ষাকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা ও বলা হয়ে থাকে। আমরা সেই শিক্ষাকেই কর্মমুখী শিক্ষা বলি যে শিক্ষা কর্মকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আর বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মমুখী শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম।

কারণ আমাদের দেশসহ পুরো পৃথিবী আজ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত আর এর সবচেয়ে বড় কারণ হলো দারিদ্রতা এবং কর্মহীনতা। তাই সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি কর্মমুখী শিক্ষা চালু রাখা একান্ত প্রয়োজন। তবে বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার বিভিন্ন পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এদেশে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করেছেন এবং তিন পর্যায়ে কর্মভূমিকে শিক্ষা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। যথা-

  • সার্টিফিকেট পর্যায়ে
  • ডিপ্লোমা পর্যায় ও
  • ডিগ্রী পর্যায়

আর এ শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকার সার্টিফিকেট পর্যায়ে দক্ষ কারিগর ও কর্মী তৈরির পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন এবং দ্বিতীয় শিক্ষা ব্যবস্থা অর্থাৎ ডিপ্লোমা পর্যায়ে টেকনিশিয়ান এবং ডিগ্রী পর্যায়ে অর্থাৎ তৃতীয় পর্যায়ে দক্ষ প্রযুক্তিবিদ ও প্রকৌশলী তৈরি করার প্রয়াস হাতে নিয়েছেন। এছাড়াও বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি,  বাংলাদেশে প্রকৌশল এবং কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, পলিটেকনিক ও ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, লেদার টেক্সটাইল টেকনোলজি কলেজ, গ্রাফিক্স, আর্ট কলেজ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

আর এগুলো বর্তমানে কর্মমুখী শিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আর আর বাংলাদেশে কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলো পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অধিদপ্তর।কিন্তু কর্মমুখী শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে সকলের সমন্বিত প্রয়াস একান্ত প্রয়োজন। এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের কারিগরি প্রশিক্ষণ দিয়ে যাচ্ছে ভোকেশনাল প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট আর এ ধরনের কার্যক্রম সমন্বিত করে দেশের জন দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হবে।

ডাক্তার, প্রকৌশলী এবং যারা কৃষিজীবি তারা বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং উচ্চ ডিগ্রি লাভ করে তারা নিজেরা ইচ্ছামতো স্বাধীন পেশায় নিয়োজিত হতে পারেন কিন্তু যাদের স্বল্প মেধা রয়েছে বা যেসব মেধা ঝরে গিয়েছে তাদের যদি একত্রিত করে তাদের মেধা অনুযায়ী কর্মমুখী শিক্ষা প্রদান করা যায় তাহলে তারা দেশ ও জাতির কল্যাণ বয়ে আনবে কারণ জাতীয় জীবনে উন্নতি করতে হলে শুধু ডিগ্রী অর্জন করলেই হবে না, তাকে কর্মমুখী শিক্ষায় শিক্ষিত হতে হবে। তবেই হবে দেশ ও জাতির উন্নতি।

শেষ কথা

আমাদের এই দেশ তথা বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ আর কর্মমুখী শিক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশের এই জনসংখ্যা কে জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে কারণ দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি এবং তারাই দেশের একমাত্র সম্পদ তাই বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব কর্মমুখী শিখার প্রসার ঘটানো একান্ত প্রয়োজন