আউটপুট ডিভাইস কি?
যে সকল ডিভাইসে ইনপুট ডেটা প্রসেসিং হওয়ার পর, আউটপুট প্রদান করে সেই সকল ডিভাইসকে আউটপুট ডিভাইস বলে। কম্পিউটারকে বিভিন্ন ইনপুট ডিভাইসের সাহায্যে যে সমস্ত ইনপুট গুলি দেওয়া হয় সেগুলি কম্পিউটার প্রসেসিং করে, আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ইউজারকে দেখায়।
কম্পিউটার থেকে যে কোন তথ্য, গ্রাফিক্স, অডিও বা ডেটা নির্গত করতে আউটপুট ডিভাইস ব্যাবহৃত হয়।
আউটপুট ডিভাইসের উদাহরণ
নিচে ১০ টি আউটপুট ডিভাইসে নাম ও কাজ দেওয়া হলঃ
১। Monitor (মনিটর)
২। Printer (প্রিন্টার)
৩। Plotter (প্লোটার)
৪। Projector (প্রজেক্টর)
৫। Earphone (ইয়ারফোন)
৬। Speaker (স্পিকার)
৭। GPS (জিপিএস)
৮। Sound Card (সাউন্ড কার্ড)
৯। Video Card (ভিডিও কার্ড)
১০। Braille Reader (ব্রেইল রিডার)
১। Monitor (মনিটর)
মনিটর হল কম্পিউটারের প্রধান আউটপুট ডিভাইস। কম্পিউটারের যেকোন কাজ করবার জন্য মনিটরের প্রয়োজন পড়ে। মনিটর আউটপুট প্রদর্শিত করার সাথে সাথে, ইনপুট দেওয়ার সময়ও বিশেষ কাজে লাগে। মনিটর হচ্ছে কম্পিউটারের ডিসপ্লে ইউনিট বা স্কিন। মনিটর কম্পিউটার থেকে আসা ডাটাকে টেক্সট, ইমেজ, ভিডিও রূপে প্রকাশ করে। মনিটর আউটপুট প্রদর্শিত করার জন্য এটিকে ভিজুয়াল ডিসপ্লে ইউনিট (visual display unit) ও বলা হয়ে থাকে।
২। Printer (প্রিন্টার)
প্রিন্টার হলো এমন একটি আউটপুট ডিভাইস যেটি Soft copy কে Hard copy তে পরিবর্তন করে। কম্পিউটারের কোন ইনফরমেশন যখন প্রিন্ট করা হয় তখন এটি কাগজ এর মাধ্যমে ছাপিয়ে বের হয়ে আসে। ইনফর্মেশন কম্পিউটারে থাকাকালীন এটিকে সফট কপি এবং প্রিন্ট হয়ে বেরিয়ে আসার পর এটিকে হার্ডকপি বলা হয়ে থাকে। হার্ডকপি কে আমরা স্পর্শ করতে পারি কিন্তু সফট কপি স্পর্শ করা যায় না। প্রিন্টারের সাহায্যে কোন ইনফরমেশন, কম্পিউটার থেকে আমরা কাগজের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। তাই প্রিন্টার ও আউটপুট ডিভাইসের একটি বিশেষ উদাহরণ।
৩। Plotter (প্লোটার)
বিভিন্ন ধরনের Drawing, Graph এবং Chart; Plotter এর মাধ্যমে প্রিন্ট করা হয়। তাই এটিও একটি আউটপুট ডিভাইস। বিভিন্ন ধরনের ব্যানার প্রিন্ট করা থেকে 3D Printing এর সকল কাজ Plotter এর সাহায্য করা হয়ে থাকে। এই জন্য কম্পিউটারে প্রথমে নির্দিষ্ট চিত্রটি বানিয়ে নিয়ে, Plotter কে কম্পিউটারের সাথে কানেক্ট করে, print নেওয়া হয়।
৪। Projector (প্রজেক্টর)
প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিশেষ ধরনের সাউন্ড এবং চিত্র প্রদর্শন করা হয়। এই জন্য প্রজেক্টর কেও আউটপুট ডিভাইস হিসেবে ধরা হয়। কম্পিউটারের সাহায্যে কোন প্রজেক্ট তৈরি করে, সেই প্রজেক্টটি, প্রজেক্টরের মাধ্যমে পরিদর্শিত করা হয়। এটিও একটি আউটপুট ডিভাইসের নাম।
৫। Earphone (ইয়ারফোন)
কোন সিনেমা, গান বা গেম খেলার জন্য যে সাউন্ড এর প্রয়োজন হয়, সেই আউটপুট টি, Earphone এবং হেডফোনের মত আউটপুট ডিভাইসের সাহায্যে নির্গত হয়। ইয়ারফোন এবং হেডফোন ছাড়াও, যেকোনো ধরনের সাউন্ড সিস্টেম যদি কম্পিউটারে লাগিয়ে আউটপুট নেওয়া হয় সেটিও এক ধরনের আউটপুট ডিভাইস এর প্রকৃত উদাহরণ।
৬। Speaker (স্পিকার)
স্পিকার কম্পিউটারের একটি আউটপুট যন্ত্র। কম্পিউটারে শব্দ শােনার জন্য স্পিকার ব্যবহৃত হয়। বর্তমানে মাল্টিমিডিয়া পিসির অন্যতম অংশ হলাে স্পিকার। অনেক পিসিতে বিল্ট ইন সাউন্ড প্রসেসর ও স্পিকার থাকে।
৭। GPS (জিপিএস)
গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা GPS হল একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম যা একটি নির্দিষ্ট অবস্থান সনাক্ত করতে রেডিও সংকেত ব্যবহার করে। প্রেরক উপগ্রহ এই রেডিও সংকেত এর মাধ্যমে সময়, অবস্থান, গতি ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য রিসিভার কম্পিউটারে পাঠায়। কম্পিউটারে এই প্রক্রিয়াকৃত ডেটা বস্তুটির অবস্থান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করতে পারে বলে জি পি এস কে আউটপুট ডিভাইস বলে।
৮। Sound Card (সাউন্ড কার্ড)
আপনি যখন আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে গান চালান তখন আপনি যে শব্দ শুনতে পান তার জন্য সাউন্ড কার্ড দায়ী। এটি একটি সম্প্রসারণ কার্ড হিসাবেও পরিচিত, যার অর্থ কেউ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সাউন্ড কার্ড কনফিগার করতে পারে। সাউন্ড কার্ড কম্পিউটার এবং স্পিকারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। সাউন্ড কার্ডের অনুপস্থিতিতে, স্পিকার কম্পিউটার ডেটাকে শব্দ শক্তিতে অনুবাদ করতে সক্ষম হবে না। যেহেতু একটি সাউন্ড কার্ড কম্পিউটার প্রসেসর থেকে বাইনারি ডেটা ইনপুট নেয় এবং শব্দ উৎপন্ন করে, তাই এটি সাউন্ড একটি আউটপুট ডিভাইস।
৯। Video Card (ভিডিও কার্ড)
ভিজ্যুয়াল আউটপুট ডিভাইসের আরেকটি উদাহরণ হল একটি ভিডিও কার্ড। বেশিরভাগ কম্পিউটারে অন্তর্নির্মিত ভিডিও প্রদর্শন ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু, গ্রাফিক্সের গুণমান বাড়ানোর জন্য, এই বাহ্যিক পেরিফেরাল ডিভাইসটি ব্যবহার করা যেতে পারে। ভিডিও কার্ড কম্পিউটারকে উন্নত স্বচ্ছতার সাথে ব্যবহারকারীর কাছে ভিডিও বা গ্রাফিকাল বার্তা পাঠাতে দেয়। আপনি যদি গেমারদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা অবশ্যই একটি ভিডিও কার্ডের গুরুত্ব জানবে।
১০। Braille Reader (ব্রেইল রিডার)
ব্রেইল রিডার হল একটি প্রিন্ট আউটপুট ডিভাইস, যা বাইরে থেকে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত থাকে। এটি একটি বোর্ড নিয়ে গঠিত যার উপর ব্রেইল বর্ণমালা খাঁজ করা থাকে। এতে গ্রুভিং করা হয় যাতে যখনই প্রয়োজন হয় তখনই বর্ণমালা পপ আপ করতে পারে। মনিটরে একটি পাঠ্য প্রদর্শিত হলে, এটি ব্রেইল রিডারে প্রেরণ করা হয়। কম্পিউটার থেকে বৈদ্যুতিক সংকেত অক্ষরগুলিকে বাম্প আউট করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তাই, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের পড়ার একটি আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা লাভ করতে সক্ষম করে।
Leave a comment