প্রবন্ধ, হাস্যরসাশ্রিত বিদ্রুপাত্মক রচনা, উপন্যাস ইত্যাদি গদ্যসাহিত্যের বিভিন্ন শাখায়ই বঙ্কিমচন্দ্রের স্বচ্ছন্দ বিচরণ ছিল, তিনি বাংলা ভাষায় শুধু উপন্যাসই নয়, প্রবন্ধ সাহিত্যেও প্রথম শিল্পী। বিজ্ঞান, ধর্মতত্ত্ব, ইতিহাস, সাহিত্য – বহু বিষয় নিয়েই তিনি প্রবন্ধ রচনা করেছেন। এই প্রবন্ধগুলি বিষয়বস্তুপ্রধান, যুক্তিতথ্য সমাবেশের সুশৃঙ্খল পারস্পর্যে, বুদ্ধিপ্রধান বিশ্লেষণে নিজের বক্তব্য বিষয়কে সুষ্ঠুভাবে প্রকাশ করার লক্ষ্যই বিবিধ প্রবন্ধের অন্তর্ভুক্ত প্রবন্ধগুলিতে প্রাধান্য পেয়েছে। ‘মুচিরাম-গুড়ের জীবনচরিত’-এর মতো হাস্যরসাশ্রিত বিদ্রুপাত্মক রচনায় সমালোচনাই বঙ্কিমচন্দ্রের মূল লক্ষ্য ছিল। স্বভাবতই এই সমস্ত গদ্য রচনায় বঙ্কিমচন্দ্রকে তাঁর বক্তব্য বিষয় বা সমাজ-সমালোচনাকে প্রাধান্য দিয়ে যুক্তিশৃঙ্খলার শাসন মেনে নিজের আবেগ-অনুভূতি কল্পনাকে সংযত রাখতে হয়েছে। উপন্যাসেও পাত্রপাত্রীর ও ঘটনাবলির পশ্চাতে অনিবার্যভাবেই তাকে আত্মগোপন করতে হয়েছে, প্রবন্ধে তবু লেখকের যতটুকু স্বাধীনতা থাকে, উপন্যাসে তার কোনও অবকাশই নেই।
স্বভাবতই বঙ্কিমচন্দ্রের শিল্পীমানস গদ্যের এইসব মাধ্যমে পরিপূর্ণ তৃপ্তি লাভ করতে পারেনি। তিনি এমন একটি মাধ্যম সন্ধান করেছিলেন যাতে তাঁর ব্যক্তিমানস তার পরিপূর্ণ প্রকাশের বাধাবন্ধনবিহীন উন্মুক্ত ক্ষেত্রটি খুঁজে পায়। কমলাকান্তের দপ্তরের অন্তর্ভুক্ত রচনাগুলিতে বঙ্কিমচন্দ্রের আকাশে মুক্তপক্ষ বিহঙ্গের স্বাধীন বিচরণের মতোই অবাধ আত্মপ্রকাশের তৃষ্ণা তৃপ্ত হয়েছিল। এই রচনাগুলিতে তাকে প্রবন্ধের প্রকৃষ্ট বন্ধন, যুক্তিতথ্য সমাবেশের শৃঙ্খলা তথা বস্তুনিষ্ঠার দাবির কাছে আত্মসমর্পণ করতে হয়নি, তিনি তাঁর চিন্তা, আবেগ অনুভূতি কল্পনাকে প্রকাশ করার সুযোগ পেয়েছেন মুক্ত প্রাণের, নর্মলীলায়। ‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর ‘একা’ প্রবন্ধটি পরীক্ষা করে দেখলে এই বিষয়টি আমাদের কাছে পরিষ্কার হয়ে উঠবে।
‘কমলাকান্তের দপ্তর’-এর অন্যান্য রচনার মতো ‘একা’র জীবনভাবনাও প্রকাশিত হয়েছে আফিমের নেশাখোর কমলাকান্তের স্বগত-উক্তিতে, আবেগ-কল্পনা-মননের বিচিত্র সঞ্চরণে। এই কমলাকান্ত যে প্রবন্ধ, হাস্যরসাত্মক ও বিদ্রূপধর্মী রচনা, উপন্যাস প্রভৃতি প্রচলিত গদ্যসাহিত্যের সুনির্দিষ্ট রূপ বা কাঠামোর শৃঙ্খলা অনুসরণের প্রয়োজনীয়তার বন্ধন সম্পর্কে অসহিষ্ণু স্বচ্ছন্দ আত্মপ্রকাশের মুক্ত আকাশসন্ধানী বঙ্কিমচন্দ্রের নিজস্ব মানস প্রকাশের মাধ্যম, কিংবা আরো স্পষ্ট ও প্রত্যক্ষভাবে বলতে গেলে, এই চরিত্রটি তাঁরই আত্মরূপ- সে বিষয়ে আমাদের মনে সন্দেহের কোনো অবকাশ থাকে না। মানুষের অন্যান্য সুখের মতো যৌবনের অপরিমিত আশাসঞ্জাত সুখও ক্ষণস্থায়ী। যে সুখ স্থায়ী, তার জীবনের অমৃত সঞ্জীবনীসুধা, তা হল মানবপ্রীতি; তার জীবনের একমাত্র আশ্রয়, আশ্বাস, সান্ত্বনা। বঙ্কিমচন্দ্র তাঁর বিভিন্ন প্রবন্ধে ও উপন্যাসে তাঁর এই জীবনভাবনা বা প্রত্যয়কে রূপ দিয়েছেন, কিন্তু কোথাও তার প্রকাশ লেখকের ব্যক্তিহৃদয়ের স্পন্দনে গীতি-কবিতার মতো এত সজীব ও চিত্তস্পর্শী হয়ে ওঠেনি, যেমন হয়েছে ‘একা’য়। রচনাটির সূত্রপাত একটি বর্ণনায় ও প্রশ্নে, জ্যোৎস্নালোকিত রাত্রিতে একজন পথচারীর বহুকালবিস্মৃত সুখ স্বপ্নের স্মৃতির মতো মধুর সংগীত শুনে কমলাকান্তের হৃদয় আলোড়িত হয়ে ওঠে : “এত মধুর লাগিল কেন? এই সংগীত যে অতি সুন্দর, এমত নহে। পথিক পথ দিয়া, আপন মনে গায়িতে গায়িতে যাইতেছে।” জ্যোৎস্নাময়ী রাত্রি দেখিয়া, তাহার মনের আনন্দ উছলিয়া উঠিয়াছে। স্বভাবতঃ তাহার কণ্ঠ মধুর; – মধুর কণ্ঠে, এই মধুমাসে, আপনার মনের সুখের মাধুর্য বিকীর্ণ করিতে করিতে যাইতেছে।” এই রচনার পরই অনেকটা যেন আপন মনে। কমলাকান্ত এই প্রশ্ন উচ্চারণ করে : “তবে বহুতন্ত্রীবিশিষ্ট বাদ্যের তন্ত্রীতে অঙ্গুলিস্পর্শের ন্যায়, ঐ গীতিধ্বনি আমার হৃদয়কে আলোকিত করিল কেন?”
এই পর্যায়ে কমলাকান্ত তার মনে শুধু প্রশ্নের আলোড়নই অনুভব করেছে, তার উত্তর খুঁজে পায়নি, সে শুধু মুগ্ধদৃষ্টিতে জ্যোৎস্নার আলোকে প্রকৃতির অনুপম সৌন্দর্য এবং রাজপথে জনতার আনন্দ-উৎসবের দৃশ্যটি অবলোকন করতে থাকে : “কেন, কে বলিবে? রাত্রি জ্যোৎস্নাময়ী নদী-সৈকতে কৌমুদী হাসিতেছে। অর্ধাবৃতা সুন্দরীর নীলবসনের শীর্ণ শরীরা নীল-সলিলা তরঙ্গিনী, সৈকত বেষ্টিত করিয়া চলিয়াছেন: রাজপথে, কেবল আনন্দ– বালক, বালিকা, যুবক, যুবতী, প্রৌঢ়া, বৃদ্ধা বিমল চন্দ্র কিরণে স্নাত হইয়া আনন্দ করিতেছে। আমিই কেবল নিরানন্দ—তাই ঐ সংগীত শ্রবণে আমার হৃদয়যন্ত্র বাজিয়া উঠিল।” এই বর্ণনার পরই কমলাকান্ত পথচারীর সংগীত শ্রবণে তার হৃদয় আলোড়িত হয়ে ওঠার কারণ নির্দেশ করে: “আমিই কেবল নিরানন্দ তাই ঐ সংগীতে আমার হৃদয়যন্ত্র বাজিয়া উঠিল।” পরের অনুচ্ছেদে পাই আরো একটু বিস্তৃত ও পরোক্ষভাবে এই চিন্তারই বেদনাময় অনুরণন: “আমি একা—তাই এই সংগীতে আমার শরীর কণ্টকিত হইল। এই বহুজনাকীর্ণ নগরীমধ্যে আমি একা। আমিও কেন ঐ অনন্ত জনস্রোতোমধ্যে মিশিয়া, এই বিশাল আনন্দতরঙ্গতাড়িত জলবুদ্বুদসমূহের মধ্যে আর একটি বুদ্বুদ না হই? বিন্দু বিন্দু বারি লইয়া সমুদ্র; আমি বারিবিন্দু এ সমুদ্রে মিশাই না কেন?”
আমরা এখানে জ্ঞানের কোনও গুরুগম্ভীর তথ্য বা তত্ত্ব পাই না, বঙ্কিমচন্দ্রের অন্যান্য প্রবন্ধের মননশীলতা ও পাণ্ডিত্যের ক্ষুরধার পরিচয়ও এখানে মেলে না। আমরা এখানে পাই কমলাকান্ত ও তার ব্যক্তির অন্তরালবর্তী এই বিচিত্র নেশাখোর, অর্ধোন্মাদ অথচ জগৎ ও জীবনের সত্যদ্রষ্টার অন্তরালবর্তী লেখকের ব্যক্তিসত্তার স্পন্দন, তাঁর মনোবীণার তারগুলিতে বাইরের জগতের অভিঘাতে একাকীত্বের উপলব্ধি যে বিষাদের সুর ঝংকৃত করে তুলেছিল, তারই ধ্বনি ও চিত্রময় প্রকাশ। এখানে আমরা প্রবেশের ভাষণ কিংবা উপন্যাসের রঙ্গমঞ্চের মতো পাত্রপাত্রীদের জীবননাট্যের প্রদর্শন পাই না, লেখক তাঁর সঙ্গে পাঠকদের সমস্ত ব্যবধান-দুরত্ব ঘুচিয়ে ফেলে তাদের নিভৃতে সহৃদয় সুহৃদ বলে গ্রহণ করে নিজের হৃদয়মনকে উন্মুক্ত করার এবং তাদের হৃদয়ের সঙ্গে প্রত্যক্ষ সংযোগ স্থাপনে ব্যাকুল, আমরা বার বার অনুভব করি।
একবার মাত্র শোনার পরই ঐ সংগীত তার কেন এত ভালো লাগিল, সেই প্রশ্নে কমলাকান্ত আবার ফিরে আসে। অনেকদিন সে আনন্দ থেকে উৎসারিত সংগীত শোনেনি, আনন্দ অনুভব করেনি: “যৌবনে যখন পৃথিবী সুন্দরী ছিল যখন প্রতি পুষ্পে সুগন্ধ পাইতাম প্রতি পত্রমর্মরে মধুর শব্দ শুনিতাম, প্রতি নক্ষত্রে চিত্রা রোহিণীর শোভা দেখিতাম, প্রতি মনুষ্যমুখে সরলতা দেখিতাম, তখন আনন্দ ছিল।” পৃথিবী, সংসার, মানবচরিত্র এখনও তাই আছে, কিন্তু কমলাকান্ত তার এই প্রৌঢ়বয়সে যৌবনের জীবনের চারদিক থেকে আনন্দের মধু আহরণে সক্ষম সজীব, উষ্ণ হৃদয় হারিয়ে ফেলেছে। আজ সেই সংগীত শুনে সে মুহূর্তের জন্য আবার যৌবন ফিরে পায়, আবার তেমনিভাবে মনে মনে সমবেত বন্ধুদের মাঝখানে বসে, সেই অকারণ উচ্চ হাসি হাসে, যে কথা প্রৌঢ় বয়সের পরিণত জ্ঞানে নিষ্প্রয়োজনীয় বলে এখন বলে না, কিন্তু তখন নিষ্প্রয়োজনেও যৌবনসুলভ চিত্তচাঞ্চল্যের জন্য বলত, আবার সেই সব কথা বলতে আরম্ভ করে, আবার অকৃত্রিম হৃদয়ে পরের প্রণয় অকৃত্রিমরূপে মনে মনে গ্রহণ করে। যৌবনে চিত্তের যে প্রফুল্লতার জন্য তার সংগীত ভালো লাগত, এই প্রৌঢ় বয়সে তা নেই বলেই সংগীত তার এখন ভালো লাগে না। কমলাকান্ত তার মনের ভেতর মন লুকিয়ে সেই বিগত যৌবনসুখ চিন্তা করছিল, সেই সময় এই পূর্বস্মৃতিসূচক সংগীত সে শুনতে পায়, সেইজন্যই সেটি তার এত মধুর লাগে।
যৌবনের স্মৃতিমন্থনের এই বিষাদ সংগীত, গীতিকবিতার করুণ সুরমূর্ছনা রচনার পরই যৌবনের সে প্রফুল্লতা, সে সুখ আর কেন নাই, সুখের সামগ্রী কি কমেছে, সেই প্রশ্ন তুলে কমলাকান্ত চিন্তা, মনন, বিচারবিশ্লেষণের জগতে চলে আসে, পাঠকদের মনকে সজাগ করে তুলতে চায়। “অর্জন এবং ক্ষতি, উভয়েই সংসারের নিয়ম। কিন্তু ক্ষতি অপেক্ষা অর্জন অধিক, ইহাও নিয়ম। তুমি জীবনের পথ যতই অতিবাহিত করিবে, ততই সুখদ সামগ্রী সঞ্চয় করিবে।”। তার বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আনন্দ হ্রাস পায় কেন, এই প্রশ্ন উচ্চারণের পর তার উত্তর দানের পরিবর্তে কমলাকান্ত পর পর কয়েকটি প্রশ্নের আকারেই প্রৌঢ় বয়সের আনন্দ ও সৌন্দর্যবোধহীনতাকে তীক্ষ্ণভাবেই নির্দেশ করেছে : “পৃথিবী আর তেমন সুন্দরী দেখা যায় না কেন? আকাশের তারা আর তেমন জ্বলে না কেন? আকাশের নীলিমায় আর সে উজ্জ্বলতা থাকে না কেন? যাহা তৃণপল্লবময়, কুসুমসুবাসিত স্বচ্ছ কল্লোলিনী শীকর-সিক্ত বসন্তপবনবিধৃত বলিয়া বোধ হইত, এখন তাহা বালুকাময়ী মরুভূমি বলিয়া বোধ হয় কেন?” পাঠকের মনকে বেদনায় উচ্চকিত করার পর কমলাকান্ত তার উত্তর হিসেবে এই কারণ উল্লেখ করে, প্রৌঢ় বয়সে মানুষ যৌবনের আশার রঙিন কাঁচ হারিয়ে ফেলে বলেই তার সৌন্দর্য ও আনন্দ অনুভবের শক্তি লোপ পায়। প্রৌঢ় বয়সে মানুষ জগৎ ও জীবন সম্পর্কে নৈরাশ্য, নিষ্ফলতা ও তিক্ততার যে অভিজ্ঞতা লাভ করে কমলাকান্ত তাকে রূপায়িত করেছে কয়েকটি তীক্ষ্ণ, কঠিন উপমায় : “এখন জানিয়াছি যে, এ অরণ্যে পথ নাই; এ প্রান্তরে জলাশয় নাই, এ নদীর পার নাই, এ সাগরে দ্বীপ নাই, এ অন্ধকারে নক্ষত্র নাই। এখন জানিয়াছি যে, কুসুমে কীট আছে, কোমল পল্লবে কণ্টক আছে, আকাশে মেঘ আছে, নির্মলা নদীতে আবর্ত আছে, ফলে বিষ আছে, উদ্যানে পর্ব আছে; মনুষ্য হৃদয়ে কেবল আত্মাদর আছে। এখন জানিয়াছি যে, বৃক্ষে বৃক্ষে ফল ধরে না, ফুলে ফুলে গন্ধ নাই, মেঘে মেঘে বৃষ্টি নাই, বনে বনে চন্দন নাই, গঞ্জে গজে মৌক্তিক নাই।” কমলাকান্তের অন্তরালবর্তী তার স্রষ্টার হৃদয়াবেগ ও মনন এই রচনায় তার অবাধ মুক্ত প্রকাশের ক্ষেত্রটি লাভ করেছে বলেই আমরা এখানে প্রৌঢ় জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে শুধু চিন্তাকে পাই না, এই অংশে আমরা আশাস্বপ্নভঙ্গের ভগ্নস্তূপে পরিণত একজন প্রৌঢ়ের হৃদয়ের হাহাকারকেই যেন নিশীথে নীড়ের আশ্রয়ভ্রষ্ট সঙ্গীহীন কোনো পাখির তীব্র আর্তনাদের মতো আকাশের এক দিগন্ত থেকে অন্য দিগন্ত পর্যন্ত ধ্বনিত হতে শুনি।
কমলাকান্ত নানা বাদ্যধ্বনি সহযোগে পদার্থের সেই পূর্বশ্রুত সংসার সংগীত আর শুনবে না, সেই সংলাপ আর নেই, সে বয়েস আর নেই সে আশা নেই। কিন্তু তার পরিবর্তে সে যা শুনছে তা অধিকতর প্রীতিকর। বঙ্কিমচন্দ্রের ব্যক্তিসত্তার আধারটি পরিপূর্ণভাবে লাভ করেছে বলেই মানবপ্রীতিই যে মনুষ্যজীবনের একমাত্র আশ্রয়, তার চিরস্থায়ী সুখের অমৃতময় উৎস, কমলাকান্তের এই উপলব্ধি নিছক জ্ঞানের বিষয়রূপে আমাদের কাছে ধরা দেয় না, একটি আবেগঘন অভিজ্ঞতারূপে আমাদের সমস্ত হৃদয়মনকে আলোড়িত করে তোলে। “অনন্যসহায় একমাত্র গীতধ্বনিতে কর্ণবিবর পরিপুরিত হইতেছে। প্রীতি সংসারে সর্বব্যাপিনী—ঈশ্বরই প্রীতি। প্রীতিই আমার কর্ণে এক্ষণকার সংসার সংগীত। অনন্তকাল সেই মহাসংগীত সহিত মনুষ্যহৃদয়তন্ত্রী বাজিতে থাকুক। মনুষ্যজাতির উপর যদি আমার প্রীতি থাকে তবে আমি অন্য সুখ চাই না”। কমলাকান্তের দপ্তরের ভেতর দিয়ে বঙ্কিমচন্দ্রের সমগ্র ব্যক্তিপুরুষটি যেমনভাবে আমাদের কাছে প্রত্যক্ষ হয়ে ওঠে তেমন আর কোথাও নয়–দপ্তরের প্রথম রচনা ‘একা’ বিশ্লেষণ করলেই এই উক্তির যৌক্তিকতা আমাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
Leave a comment