কবির বিশেষ মনােভাব: মৃদুল দাশগুপ্তের কবিতার মূল্যায়নে অভীক মজুমদার লিখেছেন—”কোনাে বিশেষ দল, দলীয়তা নয়, একধরনের মানুষের আন্দোলন বারংবার মৃদুলকে আলােড়িত করে, তাকে নাড়িয়ে দেয়” (বােধশব্দ, জানুয়ারি ২০১৩)। তাই সামাজিক অথবা রাজনৈতিক শােষণ- বঞ্চনার বিরুদ্ধে তীব্র হয়ে ওঠে কবির প্রতিক্রিয়া। ক্রন্দনরতা জননীর পাশে গিয়ে দাঁড়ান কবি, তার কান্নার অংশীদার হতে নয়, বরং কান্নার কারণগুলিকে খুঁজে নিয়ে তার বিরুদ্ধে নিজের ক্ষোভ আর প্রতিবাদ উগরে দিতে। সহনাগরিক ভাইয়ের মৃতদেহ দেখে তার মনে ক্রোধের জন্ম হয়। জঙ্গলে পাওয়া নিখোঁজ মেয়ের ছিন্নভিন্ন শরীর দেখে কবির মনে হয়, আকাশের দিকে তাকিয়ে বিধির বিচারের অপেক্ষায় থাকা একেবারেই অর্থহীন। আর তাই নিজের মানবিকতা, সামাজিক দায়বদ্ধতা আর মূল্যবােধকে জাগিয়ে রাখতে কবিতাকে হাতিয়ার করেন কবি। কবিতার মাধ্যমে নিজের বিবেককে জাগিয়ে রাখেন তিনি। এই জাগরণে মানবতা থাকে, আবেগ থাকে আর তার কাঠামােয় রাজনীতিও থাকে। কবি তাই কবিতায় নিজের বিবেক, যা আসলে বারুদের মতােই, তাকে মজুত করে রাখেন বিস্ফোরণের প্রস্তুতি হিসেবে। কারণ এই কবিই তাে অন্য কবিতায় প্রশ্ন করেছেন—“বিস্ফোরণ ছাড়া কোনও ঘটনা সম্ভব?” আর বিস্ফোরণ মানেই তাে অবস্থার পরিবর্তন—কবি যার স্বপ্ন দেখেন নিরন্তর।
Leave a comment