ব্রিটিশ সরকার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে কোন্ আইন পাস করে?
ব্রিটিশ সরকার ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান কাউন্সিলস অ্যাক্ট বা ভারতীয় উপদেষ্টা পরিষদ আইন পাস করে।
কোন আইনটি ১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ‘কাউন্সিল আইন নামে পরিচিত?
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন সাধারণভাবে কাউন্সিল আইন বা মলে-মিন্টো, শাসন সংস্কার নামে পরিচিত। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে পাস হওয়া এই আইনের মাধ্যমে ভারতের ব্রিটিশ শাসনব্যবস্থায় ভারতীয়দের আরও অংশগ্রহণের সুযােগ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইন প্রণয়নের দুটি কারণ উল্লেখ করাে।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইন প্রণয়নের দুটি কারণ ছিল—[i] মুসলিম লিগের নেতৃবৃন্দ সরকারের কাছে তাদের সদস্যদের পৃথক নির্বাচনের দাবি জানায়। [ii] আইন পরিষদে বেশি সংখ্যায় নির্বাচিত ভারতীয় সদস্য গ্রহণের দাবিতে ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস সােচ্চার হয়।
মর্লে-মিন্টো আইনে কী বিষয়ে সংরক্ষণ করা হয়?
মুসলিমদের পৃথক নির্বাচনের উদ্দেশ্যে তাদের জন্য আসন সংরক্ষণ করা হয়।
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের দুটি উল্লেখযােগ্য শর্ত ছিল- [i] কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১৬ থেকে বাড়িয়ে ৬০ জন করা হয়। [ii] মুসলিম সম্প্রদায়কে পৃথকভাবে সদস্য নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়।
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইন কবে পাস হয়?
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইন পাস হয়।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত-সচিব কে ছিলেন?
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত-সচিব ছিলেন লর্ড মর্লে।
অতীত স্মরণ (Short-Q&A)
উনবিংশ ও বিংশ শতকে উপনিবেশবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের প্রসার (Short-Q&A)
ঔপনিবেশিক আধিপত্যের প্রকৃতি: নিয়মিত ও অনিয়মিত সাম্রাজ্য (Short-Q&A)
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া (Short-Q&A)
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং উপনিবেশসমূহ (Short-Q&A)
ঠান্ডা লড়াইয়ের যুগ (Short-Q&A)
অব-উপনিবেশীকরণ (Short-Q&A)
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের কটি অংশ ছিল ও কী কী?
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের দুটি অংশ ছিল। যথা—[i] কার্যনির্বাহক পরিষদ, [ii] আইন পরিষদ
মর্লে-মিন্টো শাসন সংস্কারের দুটি উদ্দেশ্য লেখাে।
মর্লে-মিন্টো শাসন সংস্কারের দুটি উদ্দেশ্য ছিল—[i] কংগ্রেসের নরমপন্থীদের সরকারের স্বপক্ষে রাখা, [ii] সাম্প্রদায়িক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে মুসলিম সম্প্রদায়কে জাতীয় আন্দোলন থেকে বিচ্ছিন্ন রেখে জাতীয় আন্দোলনকে দুর্বল করা।
মর্লে-মিন্টো কে ছিলেন?
ভারত-সচিব ছিলেন জন মর্লে এবং ভারতের বড়ােলাট ছিলেন মিন্টো।
মর্লে-মিন্টো সংস্কারকে ভারতবাসীর পক্ষে মৃত্যু সমান কে বলেছেন?
মর্লে-মিন্টো সংস্কারকে ভারতবাসীর পক্ষে মৃত্যু সমান বলেছেন গান্ধিজি।
মর্লে-মিন্টো আইনকে ‘উদার ও ন্যায্য আইন’ কে বলেছেন?
মর্লে-মিন্টো আইনকে ‘উদার ও ন্যায্য আইন বলেছেন গােপালকৃয় গােখলে।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো আইনের দ্বারা কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্যসংখ্যা কত থেকে বাড়িয়ে কত করা হয়?
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো আইনের দ্বারা কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্যসংখ্যা ১৬ থেকে বাড়িয়ে ৬০ করা হয়।
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো আইনে প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্যসংখ্যা কত করা হয়?
১৯০৯ খ্রিস্টাব্দের মর্লে-মিন্টো আইনে বলা হয় যে, প্রাদেশিক আইন পরিষদের সদস্যসংখ্যা ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৫০ করা হয়।
মর্লে-মিন্টো আইনের দুটি ত্রুটি উল্লেখ করাে।
মর্লে-মিন্টো আইনের দুটি ত্রুটি ছিল—[i] এই আইনে জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কোনাে ক্ষমতা বা তাদের মতামতের কোনাে গুরুত্ব ছিল না। [ii] এই আইনের দ্বারা মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করে সরকার সাম্প্রদায়িকতাকে ইন্ধন দেয়।
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করাে।
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনের দুটি প্রধান গুরুত্ব ছিল—[i] এই আইনের দ্বারা বড়ােলাটের শাসন পরিষদে একজন ভারতীয় সদস্য গ্রহণ করে সরকারি প্রশাসনে ভারতীয়দের যুক্ত করার ব্যবস্থা করা হয়। [ii] শাসনব্যবস্থায় ব্রিটিশ-রাজের সাংবিধানিক রীতিনীতি ও আইনের শাসন যুক্ত হয়।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা কেন্দ্রীয় আইনসভা কয়টি ভাগে বিভক্ত হয় ও কী কী?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা কেন্দ্রীয় আইনসভা উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ—এই দুটি ভাগে বিভক্ত হয়। উচ্চকক্ষের নাম হয় ‘রাষ্ট্র পরিষদ এবং নিম্নকক্ষের নাম হয় আইন পরিষদ।
কবে, কার আমলে মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন পাস হয়?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ভারত-সচিব মন্টেগু এবং বড়ােলাট চেমসফোর্ডের আমলে মন্টেগু- চেমসফোর্ড আইন পাস হয়।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের সময় ভারত সচিব বড়লাট কে ছিলেন?
মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের সময় ভারত-সচিব ছিলেন মন্টেগু এবং বড়ােলাট ছিলেন চেমসফোর্ড।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন প্রণয়নের দুটি কারণ উল্লেখ করাে।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন প্রণয়নের দুটি কারণ ছিল—[i] কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মধ্যে লক্ষ্ণৌ চুক্তি (১৯১৬ খ্রি.) স্বাক্ষরিত হলে ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলন তীব্র হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়। [ii] প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ভারতের জনবল ও অর্থবল ব্যবহারের উদ্দেশ্যে ভারত-সচিব মন্টেগু যুদ্ধের পর ভারতীয়দের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেওয়ার কথা ঘােষণা করেন। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে প্রবর্তিত ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইন।
কবে, কাদের মধ্যে লক্ষ্ণৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মধ্যে লক্ষৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা—[i] কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারের মধ্যে সুনির্দিষ্টভাবে ক্ষমতা ও আয় বণ্টন করা হয়। [ii] আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, পুলিশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সেচ, ভূমিরাজস্ব, যােগাযােগব্যবস্থা প্রভৃতি তুলনামূলকভাবে কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলির দায়িত্ব প্রাদেশিক সরকারগুলির হাতে প্রদান করা হয়।
কোন্ আইনের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় আইনসভা গঠিত হয়?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড সংস্কার আইনের ওপর ভিত্তি করে কেন্দ্রীয় আইনসভা গঠিত হয়।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা কেন্দ্রে কীরূপ আইনসভা গঠন করা হয়?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দ্বারা কেন্দ্রে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠন করা হয়। এর নিম্নকক্ষের নাম হয় ‘কেন্দ্রীয় আইনসভা’ এবং উচ্চকক্ষের নাম হয় ‘রাষ্ট্রীয় পরিষদ।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনে কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য সংখ্যা কত রাখা হয়?
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনে কেন্দ্রীয় আইনসভার সদস্য-সংখ্যা উচ্চকক্ষে ৬০ ও নিম্নকক্ষে ১৪০ রাখা হয়।
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের মন্টে-ফোর্ড সংস্কারে প্রাদেশিক সরকারের সংরক্ষিত ক্ষমতা কোনগুলো ছিল?
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনে সংরক্ষিত বিষয়গুলি ছিল আইন-শৃঙ্খলা, অর্থ, পুলিশ, প্রশাসন, বিচার, শ্রম প্রভৃতি। প্রাদেশিক গভর্নর ও তার কার্যনির্বাহক সভার ওপর এই বিষয়গুলি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনে হস্তান্তরিত বিষয়গুলি কী ছিল?
মন্টেগু চেমসফোর্ড আইনে হস্তান্তরিত বিষয়গুলি ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, স্বায়ত্তশাসন প্রভৃতি। এই বিষয়গুলি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয় প্রাদেশিক মন্ত্রীদের হাতে।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দুটি ত্রুটি উল্লেখ করাে।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দুটি ত্রুটি ছিল- [i] এই আইনের দ্বারা ভারতে প্রতিনিধিত্বমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার কোনাে চেষ্টা করা হয়নি। [i] প্রদেশে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠার কথা বলা হলেও বাস্তবে তা প্রতিষ্ঠিত হয়নি। কেন্দ্রে ভাইসরয় এবং প্রদেশে গভর্নর ছিলেন সর্বেসর্বা।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দুটি গুরুত্ব উল্লেখ করাে।
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের দুটি গুরুত্ব ছিল- [i] এই আইনের দ্বারা ভারতে প্রত্যক্ষ নির্বাচনের সূচনা হয় এবং ভােটাধিকারের সম্প্রসারণ ঘটে। [ii] ভারতীয় প্রতিনিধিরা আইনসভায় প্রবেশের সুযােগ পেলে তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও শিক্ষালাভের সুযােগ ঘটে।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত শাসন আইন প্রণয়নের দুটি কারণ উল্লেখ করাে।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত শাসন আইন প্রণয়নের দুটি কারণ ছিল—[i] ভারতে ক্রমবর্ধমান জাতীয়তাবাদের অগ্রগতির ফলে ব্রিটিশ সরকার ভারতীয় জাতীয়তাবাদকে দুর্বল করার কথা চিন্তা করতে শুরু করে। [ii] এই সময় ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে বিপ্লবী কার্যকলাপ যথেষ্ট বৃদ্ধি পায় এবং বিপ্লবীদের অতি সক্রিয়তায় সরকার আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
১৯৩৫-এর ভারত শাসন আইনে কার হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়?
১৯৩৫-এর ভারত শাসন আইনে গভর্নর-জেনারেলের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেওয়া হয়।
গােলটেবিল বৈঠকের পর সরকার কবে, কী নামে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে?
গােলটেবিল বৈঠকের পর সরকার ১৯৩৩ খ্রিস্টাব্দে ভারতের সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য প্রস্তাবসমূহ শিরােনামে শ্বেতপত্র প্রকাশ করে।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দ্বারা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে—[i] ব্রিটিশ ভারত ও দেশীয় রাজ্যগুলিকে নিয়ে কেন্দ্রে একটি ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্র গঠন করা হবে। [ii] কেন্দ্রে পাঁচ বছর মেয়াদের দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠন করা হবে।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে কী ধরনের আইনসভা গঠনের কথা বলা হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠনের কথা বলা হয়। এর উচ্চকক্ষের নাম কাউন্সিল অব স্টেটস এবং নিম্নকক্ষের নাম ফেডারেল অ্যাসেম্বলি।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে গভর্নর- জেনারেলের হাতে কীরূপ ক্ষমতা দেওয়া হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে গভর্নর-জেনারেলের হাতে চূড়ান্ত ক্ষমতা দেওয়া হয়। [i] তিনি আইনসভা ও মন্ত্রীপরিষদের পরামর্শ উপেক্ষা করার এবং তাদের কাজে হস্তক্ষেপ করার অধিকার পান। [ii] তিনি কিছু স্বেচ্ছাধীন ক্ষমতা ও স্ববিবেচনাপ্রসূত ক্ষমতা ভােগ করতেন।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে ক্ষমতা বিভাজনের জন্য কয়টি তালিকা তৈরি করা হয় ও কী কী?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে কেন্দ্র ও প্রদেশের মধ্যে ক্ষমতা বিভাজনের জন্য ৩টি তালিকা তৈরি করা হয়, যথা— [i] কেন্দ্রীয় তালিকা, [ii] প্রাদেশিক তালিকা, [iii] যুগ্ম তালিকা।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দ্বারা। প্রদেশে কী ধরনের আইনসভা গঠন করা হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দ্বারা প্রদেশে একক এবং দ্বিকক্ষ উভয় ধরনের আইনসভা গঠন করা হয়। বাংলা-সহ ছয়টি প্রদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট এবং অবশিষ্ট পাঁচটি প্রদেশে এককক্ষবিশিষ্ট আইনসভা গঠন করা হয়।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত শাসন আইন অনুসারে কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সর্বোচ্চ সদস্যসংখ্যা কত স্থির করা হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন অনুসারে কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা যথাক্রমে ২৬০ জন ও ৩৭৫ জন স্থির করা হয়ে।
নিম্নকক্ষের কার্যকাল কত বছর স্থির করা হয়?
নিম্নকক্ষের কার্যকাল স্থির করা হয় ৫ বছর।
উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষে কতজন নির্বাচিত ও কতজন মনােনীত সদস্য ছিলেন?
উচ্চকক্ষে ১৫৬ জন নির্বাচিত ও ১০৪ জন দেশীয় রাজ্য থেকে মনােনীত সদস্য ছিলেন। নিম্নকক্ষে ২৫০ জন ব্রিটিশ ভারত থেকে নির্বাচিত ও ১২৫ জন দেশীয় রাজ্য থেকে মনােনীত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষের নাম কী?
কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের উচ্চকক্ষের নাম হয় Council of State বা রাষ্ট্রীয় পরিষদ এবং নিম্নকক্ষের নাম হয় House of Assembly বা ব্যবস্থা পরিষদ।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে ভারত শাসন আইন অনুসারে কোন্ দুটি নতুন প্রদেশ গঠন করা হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইন অনুসারে সিন্ধু ও ওড়িশা নামে দুটি নতুন প্রদেশ গঠন করা হয়।
কোন্ আইন অনুসারে ব্রহ্লাদেশকে ভারতবর্ষ থেকে আলাদা করা হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনানুসারে ব্রহ্লাদেশকে ভারতবর্ষ থেকে আলাদা করা হয়।
কোন্ আইনে এবং কোন চুক্তি অনুসারে তপশিলি সম্প্রদায়ের সদস্যদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়?
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনে পুনা চুক্তি (১৯৩২ খ্রি.) অনুসারে তপশিলি সম্প্রদায়ের সদস্যদের নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের দুটি ত্রুটি উল্লেখ করাে।
১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দের ভারত শাসন আইনের উল্লেখযােগ্য দুটি ত্রুটি ছিল—[i] এই আইনে ভােটাধিকারের প্রসার ঘটানাে হয়নি কেবলমাত্র ব্রিটিশ ভারতের মােট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ মানুষ ভােটদানের অধিকার পেয়েছিল। [ii] গভর্নর-জেনারেলের হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা দেওয়ার ফলে আইনসভার নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে।
রাওলাট কমিশন কী?
ভারতীয়দের ব্রিটিশবিরােধী গণ-আন্দোলন ও বৈপ্লবিক কার্যকলাপ সম্পূর্ণ বন্ধ করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ইংল্যান্ডের বিচারপতি স্যার সিডনি রাওলাট- এর সভাপতিত্বে পাঁচজন সদস্যকে নিয়ে একটি কমিটি গঠন করে। এটি ‘রাওলট কমিশন’ বা ‘সিডিশন কমিশন’ নামে পরিচিত।
রাওলাট কমিশনের সভাপতি কে ছিলেন?
রাওলাট কমিশনের সভাপতি ছিলেন ইংল্যান্ডের বিচারপতি সিডনি রাওলাট।
রাওলাট আইন কী?
রাওলাট কমিশন বা সিডিশন কমিশন-এর ভিত্তিতে ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে ভারতের কেন্দ্রীয় আইনসভায় এক দমনমূলক বিল উত্থাপিত হয় এবং ভারতীয় সদস্যদের প্রতিবাদ সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে ১৮ মার্চ বিলটি আইনে পরিণত হয়। এটি রাওলাট আইন’ (Rowlatt Act) নামে পরিচিত।
রাওলাট আইন প্রবর্তনের দুটি কারণ উল্লেখ করাে।
রাওলাট আইন প্রবর্তনের দুটি প্রধান কারণ হল—[i] ব্রিটেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর পরাজিত তুরস্কের খলিফার ক্ষমতা খর্ব করলে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায় সরকার বিরােধী আন্দোলনের প্রস্তুতি নেয়। [ii] প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, খরা, মহামারি, বেকারত্ব প্রভৃতি ঘটনার ফলে ভারতের সর্বত্র গণ-আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে।
রাওলাট আইন কবে পাস হয়?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মার্চ রাওলাট আইন পাস হয়।
রাওলাট আইনের দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।
রাওলাট আইনেবলাহয় যে- [i] ব্রিটিশবিরােধীসব ধরনের প্রচারকার্যকে দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য করা হবে। [ii] সন্দেহভাজন যে-কোনাে ব্যক্তিকে বিনা পরােয়ানায় গ্রেপ্তার করা যাবে এবং বিনা বিচারে অনির্দিষ্টকাল তাদের বন্দি রাখা বা নির্বাসন দেওয়া যাবে।
রাওলাট আইনের প্রতিবাদে কারা আইন পরিষদের সদস্যপদ ত্যাগ করেন?
রাওলাট আইনের প্রতিবাদে মহম্মদ আলি জিন্না, মদনমােহন মালব্য এবং মাজহার-উল-হক আইন পরিষদের সদস্যপদ ত্যাগ করেন।
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড কী?
রাওলাট আইন ও অন্যান্য কয়েকটি ঘটনার প্রতিবাদে পাঞ্জাবের জালিয়ানওয়ালাবাগে মানুষ শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সভায় যােগদান করলে ব্রিটিশ সরকারের পুলিশ সমাবেশের নিরস্ত্র জনতার ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে কমপক্ষে এক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। এই ঘটনা জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত।
রাওলাট আইন কবে পাস হয়?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৮ মার্চ রাওলাট আইন পাস হয়।
কোন আইনকে গান্ধিজি শয়তানি আইন’ বলেন?
রাওলাট আইনকে গান্ধিজি শয়তানি আইন’ বলেন।
রাওলাট সত্যাগ্রহের সূচনা কে করেন?
গান্ধিজি রাওলাট সত্যাগ্রহের সূচনা করেন।
রাওলাট সত্যাগ্রহ কী?
গান্ধিজির নেতৃত্বে কুখ্যাত রাওলাট আইনের বিরুদ্ধে এক দীর্ঘস্থায়ী সত্যাগ্রহ আন্দোলন শুরু হয়। এটি ‘রাওলাট সত্যাগ্রহ নামে পরিচিত।
রাওলাট আইনের প্রতিবাদ করায় সরকার অমৃতসরের কোন্ দুই নেতাকে গ্রেপ্তার করে?
রাওলাট আইনের প্রতিবাদ করায় সরকার অমৃতসরের স্থানীয় নেতা সৈফুদ্দিন কিচলু ও ড. সত্যপালকে গ্রেপ্তার করে।
কবে জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়?
১৯১৯ খ্রিস্টাব্দের ১৩ এপ্রিল জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়।
জালিয়ানওয়ালাবাগের মাঠে কার নির্দেশে গুলি চলে?
পাঞ্জাবের মুখ্য প্রশাসক লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও ডায়ারের নির্দেশে জালিয়ানওয়ালাবাগের মাঠে গুলি চলে।
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডে কত মানুষের মৃত্যু হয়?
জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডে সরকারি হিসেবে মৃতের সংখ্যা ৩৭৯ জন এবং আহতের সংখ্যা ১২০০ জন। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে শিশু, নারীসহ অন্তত ১০০০-এরও বেশি মানুষ ঘটনাস্থলে মারা গিয়েছিল।
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সময়ে প্রধান প্রশাসক কে ছিলেন?
জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের সময়ে পাঞ্জাবের প্রধান বা মুখ্য প্রশাসক ছিলেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও ডায়ার।
কে, কোন্ ঘটনার প্রতিবাদে ইংরেজদের দেওয়া নাইট উপাধি ত্যাগ করেন?
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ইংরেজদের দেওয়া নাইট উপাধি ত্যাগ করেন (১৯১৯ খ্রি.)।
ব্রিটিশ সরকার কাকে কাইজার-ই-হিন্দ উপাধি প্রদান করেছিল?
ব্রিটিশ সরকার গান্ধিজিকে কাইজার ই-হিন্দ উপাধি প্রদান করেছিল।
পাঞ্জাবের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও ডায়ারকে কে হত্যা করেন?
পাঞ্জাবের লেফটেন্যান্ট গভর্নর মাইকেল ও ডায়ারকে হত্যা করেন উধম সিং (১৩ মার্চ, ১৯৪০ খ্রি., লন্ডনে)।
কবে ও কোথায় ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়?
১৯২৫ খ্রিস্টাব্দের ২৫ ডিসেম্বর কানপুরে ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়।
AITUC কবে গঠিত হয়?
১৯২০ খ্রিস্টাব্দে মাদ্রাজে AITUC বা নিখিল ভারত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস গঠিত হয়।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় কতজন শ্রমিক নেতা অভিযুক্ত হন?
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় ৩৩ জন শ্রমিক নেতা অভিযুক্ত হন।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত দুজন ভারতীয় নেতার নাম লেখাে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত দুজন ভারতীয় নেতার নাম মুজাফফর আহমেদ ও এস. এ. ডাঙ্গে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত দুজন বিদেশির নাম লেখাে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্ত দুজন বিদেশির নাম হল বেঞ্জামিন ব্র্যাডলি ও ফিলিপ স্প্যাট।
মিরাট ষড়যন্ত্রের মামলায় অভিযুক্ত দুজন শ্রমিক নেতার নাম লেখাে।
মিরাট ষড়যন্ত্রের মামলায় অভিযুক্ত দুজন শ্রমিক নেতা ছিলেন পি সি জোশি ও এস এ ডাঙ্গে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা কী?
কমিউনিস্ট পার্টির কার্যকলাপ ও তাদের নেতৃত্বাধীন শ্রমিক আন্দোলনকে স্তন্ধ করতে সরকার ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে ৩২ জন কমিউনিস্ট শ্রমিক নেতাকে গ্রেপ্তার করে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে। এটি ‘মিরাট ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কয়েকজন কমিউনিস্ট নেতার নাম লেখাে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কয়েকজন কমিউনিস্ট নেতা ছিলেন মুজাফফর আহমেদ, অমৃত শ্রীপাদ ডাঙ্গে, শিবনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, ধরণী গােস্বামী, পি. সি. যােশি, গঙ্গাধর অধিকারী, ফিলিপ স্যাট প্রমুখ।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্ত কয়েকজন বিদেশি বা ব্রিটিশ নাগরিকের নাম লেখাে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় প্রধান অভিযুক্তদের মধ্যে তিনজন ব্রিটিশ নাগরিক ছিলেন। এঁরা হলেন ফিলিপ স্প্যাট, বেঞ্জামিন ফ্রান্সিস ব্র্যাডলি এবং লেস্টার হাচিনসন।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষে কারা সওয়াল করেন?
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলায় অভিযুক্তদের পক্ষে সওয়াল করেন জওহরলাল নেহরু, এম. সি. চাগলা প্রমুখ।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার দুটি ফলাফল উল্লেখ করাে।
মিরাট ষড়যন্ত্র মামলার উল্লেখযােগ্য দুটি ফল ছিল—[i] এই মামলার রায়ে কমিউনিস্ট পার্টির যাবতীয় প্রচারকার্য নিষিদ্ধ করা হয়। [ii] বিভিন্ন কমিউনিস্ট নেতার দীর্ঘমেয়াদের কারাদণ্ড ঘােষণা করা হয়।
কে, কবে ভারতে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন?
বি.পি. ওয়াদিয়া এবং ভি. কে. মুদালিয়ার ১৯১৮ খ্রিস্টাব্দে ভারতে প্রথম ট্রেড ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করেন।
ব্রিটিশ সরকার কী উদ্দেশ্যে ভারতে ‘বিভাজন ও শাসননীতি’ চালু করে?
ভারতীয়দের ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলন প্রতিহত করে এদেশে নিজেদের শাসনকে নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী করার উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সরকার ভারতে ‘বিভাজন ও শাসননীতি চালু করে।
ভারতে সর্বপ্রথম কে, কোথায় ‘বিভাজন ও শাসননীতি’ কার্যকরী করেন?
ভারতে সর্বপ্রথম জন লরেন্স (১৮৬৪-৬৯ খ্রি.) পাঞ্জাবের সেনাবাহিনীতে ‘বিভাজন ও শাসননীতি কার্যকরী করেন।
বিভাজন ও শাসননীতি কার্যকর করার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক গৃহীত দুটি পদক্ষেপ উল্লেখ করাে।
বিভাজন ও শাসননীতি কার্যকর করতে গিয়ে সরকার যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেগুলির মধ্যে প্রধান ছিল— [i] সরকার সাম্প্রদায়িক ভিত্তিতে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণ ব্যবস্থা চালু করে। [ii] মুসলিমদের জন্য সরকার পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করে।
‘সিমলা ডেপুটেশন’ কী?
মুসলিম নেতা আগা খাঁ-র নেতৃত্বে ৩৫ জন ধনী অভিজাত মুসলিমের একটি প্রতিনিধি দল ১৯০৬ খ্রিস্টাব্দের ১ অক্টোবর সিমলায় বড়লাট লর্ড মিন্টোর সঙ্গে দেখা করেন এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষার দাবি জানিয়ে একটি স্মারকলিপি জমা দেন। এটি সিমলা ডেপুটেশন বা ‘সিমলা দৌত্য’ নামে পরিচিত।
সিমলা সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন কে?
সিমলা সাক্ষাৎকারে প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন আগা খাঁ।
সিমলা ডেপুটেশনের দুটি দাবি উল্লেখ করাে।
সিমলা ডেপুটেশনের দুটি উল্লেখযােগ্য দাবি ছিল—[i] চাকরিতে বেশি সংখ্যায় মুসলিমদের নিয়ােগ করতে হবে [ii] আইনসভায় মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ব্রিটিশ শাসনকালে হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের নাম লেখাে।
ব্রিটিশ শাসনকালে হিন্দুত্ববাদী কয়েকটি সংগঠনের নাম হল—“ভারত ধর্মমণ্ডল, ‘পাঞ্জাব হিন্দুসভা’, ‘হিন্দু মহাসভা’ প্রভৃতি।
কবে, কোথায় মুসলিম লিগের প্রতিষ্ঠা হয় এবং এর প্রথম সভাপতি কে ছিলেন?
১৯০৬ খ্রিস্টাব্দে ৩০ নভেম্বর ঢাকায় মুসলিম লিগের প্রতিষ্ঠা হয় এবং এর প্রথম সভাপতি ছিলেন আগা খাঁ।
মুসলিম লিগের সম্পাদক কারা ছিলেন?
মুসলিম লিগের যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন মহসিন-উল-মূলক ও ভিকার-উল-মূলক।
‘Now or Never’ গ্রন্থটির রচয়িতা কে?
‘Now or Never’ গ্রন্থটির রচয়িতা চৌধুরি রহমত আলি।
কংগ্রেসকে হিন্দু সংগঠন বলেছিলেন কে?
কংগ্রেসকে ‘হিন্দু সংগঠন’ বলেছিলেন সৈয়দ আহমেদ খান।
মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠার দুটি উদ্দেশ্য উল্লেখ করাে।
মুসলিম লিগ প্রতিষ্ঠার দুটি উল্লেখযােগ্য উদ্দেশ্য ছিল—[i] মুসলিমদের অধিকার ও স্বার্থরক্ষার জন্য কাজ করা। [ii] জাতীয় কংগ্রেস ও হিন্দুদের প্রভাব-প্রতিপত্তি খর্ব করা।
কবে এবং কাদের মধ্যে লক্ষ্ণৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়?
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের মধ্যে লক্ষৌ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯১৬ সালের লক্ষ্ণৌ কংগ্রেসের গুরুত্ব কী ছিল?
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে জাতীয় কংগ্রেসের লক্ষৌ অধিবেশনে চরমপন্থীরা আবার কংগ্রেসে ফিরে এলে নরমপন্থী ও চরমপন্থীদের মধ্যে ঐক্য গড়ে ওঠে। ফলে কংগ্রেসের শক্তি বৃদ্ধি পায়।
লক্ষ্ণৌ চুক্তি (১৯১৬ খ্রি.)র দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।
লক্ষে চুক্তির দ্বারা- [i] কংগ্রেস ও মুসলিম লিগ যৌথভাবে সরকারের কাছে শাসনতান্ত্রিক সংস্কারের দাবি পেশ করতে রাজি হয়। [ii] মুসলিম লিগের পৃথক নির্বাচনের দাবি কংগ্রেস মেনে নেয়।
গান্ধী কেন অসহযােগ আন্দোলন প্রত্যাহার করেন?
অসহযােগ আন্দোলনের কিছু আন্দোলনকারী উত্তরপ্রদেশের চৌরিচৌরায় বেশ কিছু পুলিশকে পুড়িয়ে মারে (৫ ফ্রেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রি.)। এই সহিংসার ফলে গান্ধিজি আন্দোলন প্রত্যাহারের কথা ঘােষণা করেন (২৫ ফেব্রুয়ারি, ১৯২২ খ্রি.)।
সাইমন কমিশন কী উদ্দেশ্যে কবে গঠিত হয় এবং কারা এই কমিশন বর্জন করেন?
ভারতের নতুন সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে সাইমন কমিশন গঠিত হয়। সমগ্র কংগ্রেস এবং জিন্নার নেতৃত্বে মুসলিম লিগের একাংশ সাইমন কমিশন বর্জন করেন।
ভারতীয়রা সাইমন কমিশন বর্জন করেছিল কেন?
ভারতবাসীর শাসনতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সংস্কারের জন্য গঠিত সাইমন কমিশনে কোনাে ভারতীয় সদস্য না থাকায় এবং ভারতবাসী নিজেদের জন্য কতটা শাসন সংস্কারের প্রয়ােজন, তা নির্ধারণের সুযােগ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় সাইমন কমিশন বর্জন করেছিলেন।
কে, কবে ‘চোদ্দো দফা দাবি ঘােষণা করেন এবং এর মূল উদ্দেশ্য কী ছিল?
মুসলিম লিগ নেতা মহম্মদ আলি জিন্না ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দের মার্চ মাসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত মুসলিম লিগের অধিবেশনে তার চোদ্দো দফা দাবি ঘােষণা করেন। চোদ্দো দফা দাবির মূল উদ্দেশ্য ছিল ভারতের মুসলিমদের স্বার্থরক্ষা করা।
জিন্নার চোদ্দো দফা দাবির প্রধান চারটি দাবি উল্লেখ করাে।
জিন্নার চোদ্দো দফা দাবির প্রধান চারটি দাবি ছিল—[i] ভারতে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রবর্তন, [ii] প্রদেশগুলিতে স্বায়ত্তশাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন, [iii] কেন্দ্রীয় আইনসভায় মুসলিমদের জন্য ১/৩ অংশ আসন সংরক্ষণ, [iv] মুসলিমদের জন্য পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা।
রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ কে, কত সালে প্রতিষ্ঠা করেন?
কে. বি. হেডগেওয়ার নাগপুরে, ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন।
কে, কবে সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘােষণা করেন এবং এর উদ্দেশ্য কী ছিল?
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যাকডােনাল্ড ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে ‘সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি ঘােষণা করেন। এই নীতির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলির মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করে ব্রিটিশবিরােধী ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনকে দুর্বল করা এবং এদেশে ব্রিটিশ শাসনকে নিরাপদ ও দীর্ঘস্থায়ী করা।
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি কী?
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যাকডােনাল্ড ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে যে সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতি ঘােষণা করেন তার নাম সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি। এই নীতির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ভারতের বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলির মধ্যে সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করা।
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি র ঘােষিত দুটি উল্লেখযােগ্য নীতি উল্লেখ করাে।
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা নীতি র দুটি নীতি হল- [i] মুসলিম, শিখ, ভারতীয় খ্রিস্টান, ইউরােপীয় প্রভৃতি সকল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়। [ii] হিন্দু সম্প্রদায়কে বর্ণহিন্দু ও অনগ্রসর হিন্দু—এই দুই ভাগে বিভক্ত করে তাদের পৃথক নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হয়।
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার প্রতিবাদে গান্ধিজি কোথায় অনশন শুরু করেন?
সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারার প্রতিবাদে গান্ধিজি জারবেদা জেলে অনশন শুরু করেন।
পুনা চুক্তি কবে, কাদের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়?
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা গান্ধি এবং ড. বি. আর. আম্বেদকরের মধ্যে পুনা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের পুনা চুক্তি কেন হয়েছিল?
ব্রিটিশ সরকার ভারতের হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টির উদ্দেশ্যে ‘সাম্প্রদায়িক বাটোয়ারা’ নীতির (১৯৩২ খ্রি.) দ্বারা হিন্দু দলিতদের পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেয়। এর প্রতিবাদে গান্ধিজি অনশন শুরু করলে দলিত নেতা ড. আম্বেদকর দলিতদের পূথক নির্বাচনের অধিকারের দাবি থেকে সরে এসে গান্ধিজির সঙ্গে পুনা চুক্তি (১৯৩২ খ্রি.) স্বাক্ষর করেন।
গান্ধিজি কাদের হরিজন নামে ডাকতেন?
গান্ধিজি দলিত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদের হরিজন নামে ডাকতেন।
মাহার কারা ছিল?
মধ্যভারতের এক অস্পৃশ্য অনগ্রসর দলিত হিন্দু সম্প্রদায়ের নাম ছিল মাহার। এরা পানীয় জলের ব্যবহার বা মন্দিরে প্রবেশ করার অধিকার থেকে বঞ্চিত ছিল।
বি. আর. আম্বেদকর কোন সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন?
মাহার সম্প্রদায়ের নেতা ছিলেন বি. আর. আম্বেদকর।
মাহাদ মার্চ কী?
অস্পৃশ্যরা যাতে জনসাধারণের জলাশয় থেকে জল নিতে পারে, সেই দাবিতে আম্বেদকরের নেতৃত্বে ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দের ২০ মার্চ বােম্বাইয়ের কোলাবায় চৌদার জলাশয়ে যে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়, তা মাহাদ মার্চ (Mahad March)নামে পরিচিত।
কার নেতৃত্বে মনুস্মৃতি গ্রন্থ আগুন পােড়ানাে হয়?
আম্বেদকরের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের বর্ণবৈষম্যের ভিত্তি মনুস্মৃতি নামে প্রাচীন গ্রন্থটির কয়েকটি কপি আগুনে পােড়ানাে হয়।
কার নেতৃত্বে কবে কলারাম মন্দির আন্দোলন শুরু হয়?
আম্বেদকর নাসিকে কলারাম মন্দিরে নিম্নবর্গের হিন্দুদের প্রবেশাধিকারের দাবিতে ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে আন্দোলন শুরু করেন। তার ডাকে অন্তত ১৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক এই মন্দিরে শ্রীরামচন্দ্রের বিগ্রহে পুজো দেওয়ার দাবি জানায়।
ইঝাবা ও পুলায়া নামে কারা পরিচিত ছিল?
দক্ষিণ ভারতে কেরালায় দলিত হিন্দুরা ইঝাবা ও পুলায়া নামে পরিচিত ছিল।
কবে কাদের উদ্যোগে ভাইকম সত্যাগ্রহ শুরু হয়?
১৯২৪ খ্রিস্টাব্দের ২ মার্চ, কেরালা প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির উদ্যোগে ভাইকম সত্যাগ্রহ শুরু হয়।
ভাইকম সত্যাগ্রহ কী?
দক্ষিণ ভারতে কেরালায় নিম্নবর্গের হিন্দুদের প্রতি অস্পৃশ্যতার মনােভাব দেখানাে এবং তাদের মন্দিরে প্রবেশ করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে যে আন্দোলন শুরু হয় তার নাম ভাইকম সত্যাগ্রহ।
ভাইকম সত্যাগ্রহে কে নেতৃত্ব দেন?
ভাইকম সত্যাগ্রহে নেতৃত্ব দেন কেশব মেনন।
মুসলিম লিগের লাহাের অধিবেশনের গুরুত্ব কী?
মুসলিম লিগের লাহাের অধিবেশনের পর থেকে কংগ্রেস ও মুসলিম লিগের ঐক্য বিনষ্ট হয়। এই অধিবেশনেই প্রথম পৃথক পাকিস্তানের দাবি ওঠে এবং লিগ ব্রিটিশবিরােধী আন্দোলন থেকে সরে এসে সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে রাজনৈতিক দাবিদাওয়া আদায়ের চেষ্টা করে।
নিখিল ভারত অস্পৃশ্যতা বিরােধী লিগ কে, কবে গঠন করেন?
গান্ধিজি ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বরে নিখিল ভারত অস্পৃশ্যতা বিরােধী লিগ গঠন করেন।
কে মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনকে পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের প্রথম সরকারি উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছেন?
মর্লে-মিন্টো সংস্কার আইনকে ‘পাকিস্তান রাষ্ট্র গঠনের প্রথম সরকারি উদ্যোগ বলে অভিহিত করেছেন ঐতিহাসিক পার্সিভ্যাল স্পিয়ার।
কোন পত্রিকা রাওলাট আইনকে উৎপীড়নের দানবীয় যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে?
কেশরী পত্রিকা রাওলাট আইনকে উৎপীড়নের দানবীয় যন্ত্র’ বলে অভিহিত করে।
খিলাফৎ আন্দোলনের দুজন প্রধান নেতার নাম লেখাে।
খিলাফৎ আন্দোলনের দুজন প্রধান নেতার নাম হল—মৌলানা মহম্মদ আলি এবং মৌলানা সৌকত আলি।
কোন্ আইনে মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রথম পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়?
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী র্যামসে ম্যাকডােনাল্ড কর্তৃক ১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের ১৬ আগস্ট সাম্প্রদায়িক বাঁটোয়ারা (Communal Award) নীতি ঘােষণার দ্বারা মুসলিম সম্প্রদায়কে প্রথম পৃথক নির্বাচনের অধিকার দেওয়া হয়।
আলি ভ্রাতৃদ্বয় নামে কারা পরিচিত ছিলেন?
মৌলানা মহম্মদ আলি ও মৌলানা সৌকত আলি, আলি ভ্রাতৃদ্বয় নামে পরিচিত ছিলেন।
ঔপনিবেশিক ভারতে দেশীয় রাজ্য বলতে কী বােঝানাে হত?
ভারতে ১৮৫৮ খ্রিস্টাব্দে কোম্পানির শাসনের অবসানের পর প্রত্যক্ষ ব্রিটিশ শাসনের বাইরে বেশ কিছু স্বায়ত্তশাসিত রাজ্যের অস্তিত্ব ছিল। এগুলি দেশীয় রাজ্য’ নামে পরিচিত ছিল।
ব্রিটিশ আমলে বড়াে কয়েকটি দেশীয় রাজ্যের নাম লেখাে।
ব্রিটিশ আমলে বড়াে দেশীয় রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কাশ্মীর, হায়দ্রাবাদ, বরােদা, মহীশূর প্রভৃতি।
কোন্ কোন্ দেশীয় রাজ্যের শাসকদের জন্য ২১ বার তােপধ্বনি করা হত?
হায়দ্রাবাদ, গােয়ালিয়র, কাশ্মীর, মহীশূর, বরােদা প্রভৃতি দেশীয় রাজ্যের শাসকদের জন্য ২১ বার তােপধ্বনি করা হত।
কোন্ দুটি নীতি প্রয়ােগ করে বহু দেশীয় রাজ্যে ব্রিটিশ সরকার নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে?
অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি ও স্বত্ববিলােপ নীতি প্রয়ােগ করে বহু দেশীয় রাজ্যে ব্রিটিশ সরকার নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে।
কে, কবে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রবর্তন করেন?
বড়ােলাট লর্ড ওয়েলেসলি ১৭৯৮ খ্রিস্টাব্দে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি প্রবর্তন করেন।
অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির দুটি শর্ত উল্লেখ করাে।
অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির দুটি প্রধান শর্ত ছিল—[i] অধীনতামূলক মিত্রতা চুক্তিতে আবদ্ধ দেশীয় রাজ্যে একদল ব্রিটিশ সৈন্য থাকবে। [ii] মিত্রতা চুক্তিতে আবদ্ধ দেশীয় রাজার দরবারে একজন ইংরেজ প্রতিনিধি বা রেসিডেন্ট থাকবে।
কোন্ কোন্ রাজ্যে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির প্রয়ােগ ঘটে?
হায়দ্রাবাদ (১৭৯৮ খ্রি.), সুরাট (১৭৯৯ খ্রি.), তাঞ্জোর (১৭৯৯ খ্রি.), কর্ণাটক (১৮০১ খ্রি.), অযােধ্যা (১৮০১ খ্রি.) প্রভৃতি দেশীয় রাজ্যগুলিতে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতির প্রয়ােগ ঘটে।
ব্রিটিশরা কোন কোন দেশীয় রাজ্যকে যুদ্ধে পরাজিত করে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণে বাধ্য করেন?
ব্রিটিশরা মহীশূর (১৭৯৯ খ্রি.), মারাঠা সামন্ত সিন্ধিয়া (১৮০৩ খ্রি.), ভোঁসলে (১৮০৩ খ্রি.), হােলকার (১৮১৮ খ্রি.) প্রভৃতি দেশীয় রাজ্যকে যুদ্ধে পরাজিত করে অধীনতামূলক মিত্রতা নীতি গ্রহণে বাধ্য করেন।
লর্ড ডালহৌসি কোন্ কোন্ উপায়ে সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটান?
লর্ড ডালহৌসি প্রধানত তিনটি উপায়ে সাম্রাজ্যের প্রসার ঘটান, যথা- [i] যুদ্ধের দ্বারা রাজ্যজয়, [ii] কুশাসনের অজুহাতে রাজ্য গ্রাস এবং [iii] স্বত্ববিলােপ নীতির প্রয়ােগ।
স্বত্ববিলােপ নীতি কী?
ভারতের ব্রিটিশ শাসক লর্ড ডালহৌসি ঘােষণা করেন যে, এদেশে কোম্পানির দ্বারা সৃষ্ট দেশীয় রাজ্যের রাজার কোনাে পুত্রসন্তান না থাকলে সেই রাজা কোনাে উত্তরাধিকারী গ্রহণ করতে পারবেন না। রাজার মৃত্যুর পর উত্তরাধিকারীর অভাবে সেই রাজ্য ব্রিটিশ সাম্রাজ্যভুক্ত হবে। এটি ‘স্বত্ববিলােপ নীতি নামে পরিচিত।
স্বত্ববিলােপ নীতির মূলকথা কী ছিল?
স্বত্ববিলােপ নীতির মূলকথা হল—কোম্পানির দ্বারা সৃষ্ট দেশীয় রাজ্য বা করদ রাজ্যগুলি উত্তরাধিকারের অজুহাত এনে গ্রাস করা।
স্বত্ববিলােপ নীতি প্রয়ােগ করে ডালহৌসি কোন কোন্ রাজ্য দখল করেন?
স্বত্ববিলােপ নীতি প্রয়ােগ করে ডালহৌসি সাতারা (১৮৪৮ খ্রি.), জয়েৎপুর, সম্বলপুর, বাঘাট ও ভগৎ (১৮৫০ খ্রি.), উদয়পুর (১৮৫২ খ্রি.), করৌলি, ঝাসি ও নাগপুর (১৮৫৪ খ্রি.), তান্দোর এবং আরকোট (১৮৫৫ খ্রি.) প্রভৃতি রাজ্য দখল করেন।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের দিল্লি চুক্তিতে চেম্বার অব প্রিন্সেসের দুটি দাবি উল্লেখ করাে।
১৯৩২ খ্রিস্টাব্দের দিল্লি চুক্তিতে চেম্বার অব প্রিন্সেস দাবি জানায় যে- [i] ভারতে যুক্তরাষ্ট্র কাঠামাের প্রতিষ্ঠা করতে হবে। [ii] চেম্বার অব প্রিন্সেসের সকল সদস্যের জন্য আইনসভার উচ্চকক্ষে আসন দিতে হবে।
চেম্বার অব প্রিন্সেস কী?
মন্টেগু-চেমসফোর্ড আইনের (১৯১৯ খ্রি.) মাধ্যমে ১২০ জন সদস্যবিশিষ্ট চেম্বার অব প্রিন্সেস গঠন করা হয়। দেশীয় রাজ্যগুলির পক্ষ থেকে ব্রিটিশ সরকারকে পরামর্শ দেওয়া এবং উভয়ের সম্পর্ক নির্ধারণ করা এই চেম্বারের উদ্দেশ্য ছিল।
কোন্ কোন্ দেশীয় রাজ্যের শাসকরা জাতীয়তাবাদে সমর্থন জানান?
বিশ শতকের শুরুতে ভরতপুর ও আলওয়ারের শাসকরা ব্রিটিশ শাসিত ভারতে হিন্দু জাতীয়তাবাদকে, আর্যসমাজের কাজকর্মকে এবং উর্দুর পরিবর্তে হিন্দির প্রসারকে তীব্র সমর্থন করেছিলেন। আলওয়ারের শাসক জাতীয়তাবাদী চেতনার দ্বারা এতটাই প্রভাবিত হয়েছিলেন যে, তিনি দস্তানা না পরে খালি হাতে কখনও ইউরােপীয়দের সঙ্গে হাত মেলাতেন না।
ইন্সট্রুমেন্ট অব অ্যাক্সেশন কী?
ইন্সট্রুমেন্ট অব অ্যাক্সেশন হল ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক তৈরি করা একটি নথি যেখানে সরকার দেশীয় রাজ্যগুলিকে প্রস্তাবিত ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আবেদন জানিয়েছিল।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় কোন কোন্ দেশীয় রাজা ব্রিটিশকে কীভাবে সাহায্য করেন?
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় হায়দ্রাবাদের নিজাম ব্রিটিশ যুদ্ধ তহবিলে ২৫ লক্ষ পাউন্ড দান করেন। গােয়ালিয়রের রাজাও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বেশকিছু পাদাতিক সৈন্য ও একটি হাসপাতাল-জাহাজ দিয়ে ব্রিটিশদের সহায়তা করেন।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কোন দেশীয় রাজা কীভাবে ব্রিটিশকে সাহায্য করেন?
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জয়পুরের মহারাজা ইংরেজদের পক্ষে জয়পুর ইনফ্যান্টির নেতৃত্ব দেন। বার্মার যুদ্ধে বীরত্ব দেখিয়ে বুন্দির মহারাজা ইংরেজদের কাছ থেকে মিলিটারি ব্রুস পদক লাভ করেন।
কংগ্রেস মন্ত্রীসভা কখন গঠন করা হয়?
১৯৩৭ খ্রিস্টাব্দে কংগ্রেস মন্ত্রীসভা গঠন করা হয়।
কংগ্রেস মন্ত্রীসভা থেকে কেন পদত্যাগ করে?
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ভারতের ব্রিটিশ সরকার মন্ত্রীসভাগুলির সঙ্গে আলােচনা না করেই জার্মানির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘােষণা করলে কংগ্রেস মন্ত্রীসভা পদত্যাগ করে।
কংগ্রেস কখন মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করে?
১৯৩৯ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবরে কংগ্রেস মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করে।
কত সালে ও কার নেতৃত্বে ন্যাশনাল প্ল্যানিং কমিটি গঠিত হয়?
১৯৩৮ খ্রিস্টাব্দের জুলাই-এ জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বে ন্যাশনাল প্ল্যানিং কমিটি গঠিত হয়।
হল্যান্ড কমিশন কখন গঠিত হয়?
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে হল্যান্ড কমিশন গঠিত হয়।
হল্যান্ড কমিশনের সভাপতি কে ছিলেন?
হল্যান্ড কমিশনের সভাপতি ছিলেন টি. এইচ. হল্যান্ড।
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের শিল্প কমিশনের দুটি সুপারিশ উল্লেখ করাে।
১৯১৬ খ্রিস্টাব্দের শিল্প কমিশন সুপারিশ করে যে, ভারতে শিল্পের অগ্রগতির প্রয়ােজনে- [i] যানবাহন ও যােগাযােগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাতে হবে। [ii] দেশে কারিগরি শিক্ষার প্রসার ঘটাতে হবে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী শিল্পায়নের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করাে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী শিল্পায়নের দুটি প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল—[i] ভারতে শিল্পে পুজি বিনিয়ােগের ক্ষেত্রে বােম্বাই-এর পার্সি, গুজরাটি, মাড়ােয়ারি প্রভৃতি বণিকরা যতটা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল, ততটা পূর্ব ভারতের ধনী বণিক সম্প্রদায় পারেনি। [ii] এই পর্বে ভারতীয় পুঁজিপতিদের পুঁজি বিনিয়ােগের কেন্দ্রস্থল হয়ে উঠেছিল বােম্বাই।
ব্রিটিশ আমলে ভারতের কোন কোন্ অঞ্চলে চা শিল্পের বিকাশ ঘটে?
ব্রিটিশ আমলে ভারতের আসাম, বাংলা, কাছাড়, তরাই অঞ্চল, ডুয়ার্স, হিমাচল প্রদেশ, পাঞ্জাবের কাংড়া, দাক্ষিণাত্যের নীলগিরি প্রভৃতি অঞ্চলে চা শিল্পের বিকাশ ঘটে।
ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের কয়েকটি ব্রিটিশ শিল্পসংস্থার নাম লেখাে।
ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের উল্লেখযােগ্য কয়েকটি ব্রিটিশ শিল্পসংস্থার নাম হল- অ্যান্ড্রু ইউল, বার্ড, মার্টিন বার্নস, ডানলপ, শ ওয়ালেস, ডানকান ব্রাদার্স প্রভৃতি।
ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের কয়েকজন উল্লেখযােগ্য ভারতীয় শিল্পপতির নাম লেখাে।
ব্রিটিশ শাসনকালে ভারতের কয়েকজন উল্লেখযােগ্য ভারতীয় শিল্পপতি ছিলেন জামশেদজি টাটা, ওয়ালাদ হীরার্টাদ, পুরুষােত্তম দাস ঠাকুরদাস, আম্বালাল সারাভাই, স্বরূপটাদ হুকুমচাদ, বিড়লা, ডালমিয়া, সিংহানিয়া প্রমুখ।
TISCO-এর পুরাে নাম কী?
TISCO-এর পুরাে নাম Tata Iron and Steel Company.
কত খ্রিস্টাব্দে TISCO প্রতিষ্ঠিত হয়?
১৯০৭ খ্রিস্টাব্দে TISCO প্রতিষ্ঠিত হয়।
কবে, কোথায় ভারতের প্রথম কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়?
১৮২০ খ্রিস্টাব্দে রানিগঞ্জে ভারতের প্রথম কয়লাখনি আবিষ্কৃত হয়।
কুনবি বা পতিদার নামে কারা পরিচিত?
ব্রিটিশ শাসনকালে গুজরাটের খেদা জেলায় একশ্রেণির কৃষক পতিদার নামে পরিচিত ছিল। পূর্বে এরাই কুনবি নামে পরিচিত ছিল। ১৯৩১ খ্রিস্টাব্দের আদমশুমারি রিপাের্টে এদের পতিদার হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এদের প্রধান কাজ ছিল রাজস্ব আদায় করা।
কোন্ অল বাংলার ডান্ডি নামে পরিচিত?
কলকাতা থেকে চুঁচুড়ার দুই তীর ‘বাংলার ডান্ডি নামে পরিচিত।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে মুদ্রা সংকট দূরীকরণে সরকার কর্তৃক গৃহীত দুটি পদক্ষেপ উল্লেখ করাে।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে মুদ্রা সংকট দূরীকরণে সরকার কর্তৃক গৃহীত দুটি প্রধান পদক্ষেপ ছিল- [i] ভারত থেকে রুপাের মুদ্রা ও রুপাের রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়। [ii] রুপাের মুদ্রা গলিয়ে বিক্রি করা বেআইনি বলে ঘােষণা করা হয়।
ব্যাবিংটন স্মিথ কমিটির দুটি সুপারিশ উল্লেখ করাে।
ব্যাবিংটন স্মিথ কমিটি সুপারিশ করে যে-[i] ১ টাকাকে স্টার্লিং-এর সঙ্গে যুক্ত না করে সরাসরি সােনার সঙ্গে যুক্ত করা হােক। [i] সােনা আমদানি ও রপ্তানির ওপর সরকারি নিয়ন্ত্রণ প্রত্যাহার করা হােক।
কবে, কাদের নেতৃত্বে বারদৌলির সত্যাগ্রহ আন্দোলন চলে?
১৯২৮ খ্রিস্টাব্দে মহাত্মা গান্ধি, সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল প্রমুখের নেতৃত্বে বারদৌলি সত্যাগ্রহ আন্দোলন চলে।
বারদৌলি সত্যাগ্রহে যােগদানকারী কয়েকজন মহিলার নাম লেখাে।
বারদৌলি সত্যাগ্রহে যােগদানকারী কয়েকজন মহিলা ছিলেন—মিঠুবেন প্যাটেল, ভক্তি বাঈ, মণিবেন প্যাটেল, সারদা মেহতা প্রমুখ।
বারদৌলি আন্দোলনের দুটি ফল উল্লেখ করাে।
বারদৌলি আন্দোলনের দুটি প্রধান ফল ছিল—[i] রাজস্ব বৃদ্ধিজনিত আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার একটি তদন্ত কমিশন গঠন করে। [ii] তদন্ত কমিশন বারদৌলিতে ৩০ শতাংশের পরিবর্তে ৬.০৩ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি অনুমােদন করে।
‘Gold Exchange Standard’ নীতি কী?
টাকার সঙ্গে সােনার একটি সামঞ্জস্য বজায় রাখার নীতিকে ‘Gold Exchange Standard’ নীতি বলা হয়।
‘Royal Commission on Indian Currency’ কবে গঠিত হয়?
১৯১৩ খ্রিস্টাব্দের এপ্রিলে ‘Royal Commission on Indian Currency’ গঠিত হয়।
পঞ্চাশের মন্বন্তর (১৩৫০ বঙ্গাব্দ) কী?
১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলায় যে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ ঘটে তা পঞ্চাশের মন্বন্তর’ নামে খ্যাত।
পঞ্চাশের মন্বন্তরের দুটি কারণ উল্লেখ করাে।
পঞ্চাশের মন্বন্তরের দুটি কারণ ছিল—[i] প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে ১৯৪২ খ্রিস্টাব্দে মাঠের ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়া। [ii] খাদ্য সংকটের সময় বার্মা-সহ বাইরের বিভিন্ন স্থান থেকে বাংলায় খাদ্য আমদানিতে বাধা।
পঞ্চাশের মন্বন্তরের পর সরকার কী কমিশন গঠন করে এবং কবে এর রিপাের্ট জমা পড়ে?
পঞ্চাশের মন্বন্তরের পর সরকার দুর্ভিক্ষ অনুসন্ধান কমিশন গঠন করে। ১৯৪৫ খ্রিস্টাব্দে এই কমিশনের রিপাের্ট জমা পড়ে।
বিংশ শতকে বাংলায় কবে মন্বন্তর হয়েছিল?
বিংশ শতকে বাংলায় মন্বন্তর হয়েছিল ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দে বা ১৩৫০ বঙ্গাব্দে।
Leave a comment