লালন ফকির তার বাড়ির কাছে আরশীনগর’ কবিতায় পড়শী অর্থাৎ মনের মানুষ’-এর কথা বলেছেন।

কবির যে ‘মনের মানুষ”- ‘কেউ দেখেনি তার কায়া’, সে নিরাকার। কিন্তু কখনাে কখনাে বস্তুজগতকে আশ্রয় করেই তার প্রকাশ ঘটে। ‘ক্ষণেক ভাসে নীরে’ কথাটির দ্বারা নিরাকার পরমের কখনাে কখনাে এই সাকাররূপে প্রকাশের কথাই বােঝানাে হয়েছে। অন্যদিকে ঈশ্বরের যে সহজ নিরাকার সাধারণ অবস্থা তাকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে ‘ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর’ কথাটির দ্বারা। লালন বাউলসাধক হিসেবে সারাজীবন সন্ধান করেছেন তার মনের মানুষ’-এর জন্য। তার জন্যই তিনি আত্মানুসন্ধান করেছেন। কিন্তু এই পথে ঈশ্বরের সন্ধান পাওয়া খুব সহজসাধ্য নয়-

এই মানুষে সেই মানুষ আছে।

কত যােগী ঋষি চারযুগ ধরে রে

তারে বেড়াচ্ছে খুঁজে। 

পথের সন্ধান পাওয়া কঠিন হলেও বাউলসাধকের ‘মনের মানুষ’-এর খোঁজ চলতেই থাকে। জাগতিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তির জন্য, আত্মার শুদ্ধতার জন্য এই সন্ধান। আর এভাবে খুঁজতে খুঁজতেই ঈশ্বর নানাভাবে উপলব্ধ হন কবির কাছে। ‘মনের মানুষ’কে তিনি কোনােদিনও দেখতে পান না, কিন্তু প্রতি মুহূর্তে তার সন্ধানের চেষ্টা থেকেই কবির উপলদ্ধি হয় যে তার ঈশ্বর নিরাকার হলেও কখনও সাকার রূপেও অর্থাৎ বস্তুজগতকে আশ্রয় করেও তাঁর প্রকাশ ঘটে।

লালন ফকিরের বাড়ির কাছে আরশীনগর’ কবিতায় পড়শী বলতে ঈশ্বর, বাউলসাধনায় যাকে ‘মনের মানুষ বলা হয় তাঁর কথা বােঝানাে হয়েছে।

মানুষের মনের ভিতরেই বাউলসাধনা মতে ঈশ্বর অবস্থান করেন। তাঁকেই মনের মানুষ বলা হয়। কিন্তু আত্মতত্ত্ব অর্থাৎ নিজেকে সঠিকভাবে না জানলে এই পড়শী’র খোঁজ পাওয়া সম্ভব না। আর আত্মতত্ত্বকে জানার জন্য প্রয়ােজন পরিপূর্ণ আত্মনিবেদন। নিরাকার ঈশ্বরকে উপলদ্ধি করতে হয়। কিন্তু বিষয়বাসনায় মত্ত মানুষ স্বার্থহীন আত্মনিবেদন বুঝতে পারে না। তার মনকে বেষ্টন করে থাকে বস্তু-জগতের প্রতি আকর্ষণ। অহংকারকে বিসর্জন দিয়ে অহংকে বােঝার যে সাধনা তা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব হয় না। বদলে লােভ-লালসা, কামনা বাসনায় নিমজ্জিত হয়ে যায় সে। বাউলসাধনার আত্মতত্ত্ব আসলে আত্মলােপের সাধনা। তার বদলে মানুষ বিষয়ভােগের পথে পরিচালিত হয়। আর এজন্যই অগাধ পানি অতিক্রম করা তার পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে একই দেহে অবস্থান করেও মনের মানুষ বা পড়শীর সন্ধান পাওয়া কবির পক্ষে সম্ভব হয় না।

লালন ফকিরের বাড়ির কাছে আরশীনগর’ কবিতায় কবি তাঁর নিজের বাড়ির কথা বলেছেন, যদিও বাড়ি কথাটি এখানে দেহভাণ্ড অর্থে প্রয়ােগ করা হয়েছে।

কবির কথামতাে তার বাড়ির কাছে আরশীনগর’-এর অবস্থান। সেই আরশিনগরে এক পড়শী বাস করে। গ্রামকে ঘিরে যে অগাধ জলরাশি আছে তা অতিক্রম করে আরশিনগরে যাওয়া এবং পড়শীর সঙ্গে মিলিত হওয়া তার পক্ষে সম্ভব হয় না। এই আপাত বর্ণনার আড়ালে ‘আরশীনগর’কে আশ্রয় করে কবি বাউলসাধনার এক গভীর জীবনদর্শনকে স্পষ্ট করতে চেয়েছেন। আরশীনগর’-এর আরশি কথাটির অর্থ আয়না বা দর্পণ। কিন্তু কবিচেতনায় আরশিনগর বলতে বােঝায় বাউলসাধনার এক গভীরতর তাৎপর্যকে। আরশিনগর কবির কাছে মন। এই মনের দর্পণে মানুষ নিজেকে দেখে, আর মনের মধ্যেই অবস্থান করে মনের মানুষ। সুতরাং নিজেকে বুঝতে গেলে বা আত্মতত্ত্ব জানতে গেলে আরশিনগরে যেতেই হবে। প্রতিটি মানুষই জাগতিক ভগবাসনায় নিমজ্জিত হয়ে থাকে। ফলে আরশিনগরের সন্ধান পাওয়া বা ঈশ্বরকে পাওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হয় না। নিরাকার ঈশ্বর অবস্থান করেন মানুষের মনের মধ্যেই। কিন্তু আরশিনগরের সঙ্গে দূরত্বের কারণেই তাকে পাওয়ার সুযােগ ঘটে না মানুষের। ‘আরশীনগর তাই চূড়ান্ত বিচারে আত্ম-অনুসন্ধান এবং মনের মানুষ এর অধিষ্ঠানের জায়গা।

“ক্ষত্ৰ-কুলবালা আমি; ক্ষত্র কুল-বধু/ কেমনে এ অপমান সব ধৈর্য্য ধরি?”- বক্তার এই মন্তব্যের তাৎপর্য আলােচনা। করাে।

জনা কি প্রকৃতই বীরাঙ্গনা? যুক্তিসহ লেখাে।

“ছদ্মবেশে লক্ষরাজে ছলিলা দুর্মতি স্বয়ম্বরে”—আলােচ্য অংশে কোন্ ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে?

“হা পুত্র সাধিলি কীরে তুই এই রূপে মাতৃধার” -অংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করাে।

জনার পত্রে তাঁর ক্রব্ধ অভিমানী স্বর কীভাবে ধরা পড়েছে?

মাতৃত্বের বিচারে জনা চরিত্র কতটা সার্থক?

“এ জনাকীর্ণ ভবস্থল আজি বিজন জনার পক্ষে” -জানা কে? তার কাছে ভবস্থল বিজন কেন?

“লােকমাতা রমা কি হে এ ভ্রষ্টা রমণী?” -‘অষ্টা রমণী’ বলতে কার কথা বােঝানাে হয়েছে? বক্তার এই প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিত আলােচনা কর।

‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’—লালনের এই গানটির মূল বক্তব্য ও তার রূপক অর্থ সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’ গানে বাউলতত্ত্ব কীভাবে প্রতিফলিত হয়েছে তা আলােচনা করাে।

‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’-এই রচনাটিতে লালনের কবিপ্রতিভার যে পরিচয় পাওয়া যায় তার মূল্যায়ন করাে।

“আমার বাড়ির কাছে আরশিনগর/ও এক পড়শী বসত করে” -মন্তব্যটির তাৎপর্য বিশ্লেষণ করে, কবির সঙ্গে তাঁর পড়শির কাছাকাছি থাকা সত্ত্বেও ‘লক্ষ যােজন ফাক’-এর কারণ বিশ্লেষণ করাে।

“গ্রাম বেড়িয়ে অগাধ পানি / ও তার নাই কিনারা নাই তরণী পারে” -মন্তব্যটির তাৎপর্যের আলােকে এই অগাধ পানি’কে কীভাবে অতিক্রম করা সম্ভব তা আলােচনা করাে।

“বাড়ির কাছে আরশিনগর/ও এক পড়শী বসত করে” -আরশিনগরে থাকা পড়শির পরিচয় দাও। কবির সঙ্গে এই পড়শির সম্পর্ক আলােচনা করাে।

“..ক্ষণেক থাকে শূন্যের উপর/ ক্ষণেক ভাসে নীরে।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করাে। এই মন্তব্যের আলােকে কবির মানসিকতা বিশ্লেষণ করাে।

“পড়শী যদি আমায় ছুঁত / আমার যম-যাতনা সকল যেত দূরে।” -মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে।

“নাই কিনারা নাই তরণী পারে”- মন্তব্যটির প্রকৃত অর্থ বিশ্লেষণ করাে। সেখানে যাওয়ার অন্য কোন্ পথের কথা কবি উল্লেখ করেছেন?

“হস্ত-পদ-স্কন্ধ-মাথা নাই রে”—মন্তব্যটির তাৎপর্য আলােচনা করাে। এরকম পড়শী কবিকে স্পর্শ করলে কী হত?

“সে আর লালন একখানে রয় / তবু লক্ষ যােজন ফাঁক রে।”— একখানে থাকার তাৎপর্য কী?

“তবু লক্ষ যােজন ফাক রে” -লক্ষ যােজন ফাক বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?

বাউল তত্ত্ব ভাবনার উৎপত্তি কীভাবে হয়েছে লেখাে।

বাউল সাধক লালন ফকির কীভাবে চিত্ত পরিশুদ্ধির কথা বলেছেন?

‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’ ‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’ বলতে কী বােঝানাে হয়েছে?

লালনের মতে যম-যাতনা কীভাবে দূর করা যেতে পারে?

‘বাড়ির কাছে আরশীনগর’ কবিতায় বর্ণিত ‘পড়শী’-র স্বরূপ বর্ণনা করাে।

পাঠ্য লালন-গীতিতে বাউল সাধনার যে গুহ্যতত্ত্ব প্রকাশিত হয়েছে তা সংক্ষেপে লেখাে।

“আমি বাঞ্ছা করি দেখব তারি” -কবি কী বা করছেন এবং কেন?

“আমি বাঞ্ছা করি দেখব তারি” -বক্তা কাকে দেখতে চান? কিভাবে তার দর্শন পাওয়া যাবে?

বাংলা সব প্রশ্ন উত্তর (একাদশ শ্রেণি)