উত্তরঃ আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ওসমান রহমতুল্লাহর বাড়ির চিলেকোঠায় ভাড়া থাকত। এই বাড়িকে কেন্দ্র করে উপন্যাসের বেশ কয়েকটি চরিত্র আবর্তিত হয়েছে। নিচে বাড়িটির চালচিত্র তুলে ধরা হলাে-
ওসমান যে বাড়ির চিলেকোঠায় থাকে সে বাড়িটি মূলত হিন্দুদের। ১৯৫০ সালে রহমতউল্লাহ হিন্দুদের কাছ থেকে বাড়িটি কিনে রেখেছে। বাড়িটি হােপলেস। সামনে কোনাে খােলা জায়গা নেই, ড্রেনের পরেই বাড়ি। রাস্তার উপরে চওড়া দরজা। দরজাটা নিচু। এমনকি বেটে লােকটিরও মাথা নিচু করে বাড়িতে ঢুকতে হয়। যারা উপরে যাবার তারা কর্মীগণ সরু গ্যারেজ পার হয়ে স্যাঁতসেঁতে উঠোন ক্রস করে। রাস্তার ওপারে এই একটি দরজা, বন্ধ করে দিলেই এই বিরাট ও বেটপ দালানে ঢােকা অসম্ভব। দোতলা ও তিনতলার সামনে বারান্দায় বাঙালিদের পেট সমান উঁচু লােহার রেলিং।
ঘরগুলাে ছােটো, এর মধ্যে হার্ডবাের্ড, কাঠের পার্টিশন ও বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘরের সংখ্যা আরাে বাড়ানাে হয়েছে। ঘরের মূল দেওয়াল খুব পুরু, থামগুলাে মােটা। ওসমান থাকে চিলেকোঠায়। ছাদের ওপর একমাত্র ঘর, রান্নাঘর নেই, বাথরুম নেই, পায়খানা কি গােসলের জন্য দাঁড়াতে হয় একতলার কিউতে। ওসমানের ঘরে আলাে বাতাস খুব। দরজা দুটি সিঁড়ির মুখে একটা, আরেকটা ছাদের দিকে। ছাদটা বেশ বড়াে, চারদিকে রেলিং, সামনের রেলিং একটু উঁচু।
মূলত চিলেকোঠায় ওসমানের বসবাসের মধ্য দিয়ে ঔপন্যাসিক তার বন্দিত্বকে প্রকাশ করে উপন্যাসের কাহিনিকে ব্যঞ্জনাময় করে তুলেছে।
Leave a comment