✱ ঐতিহাসিক স্থান ভ্রমণের অভিজ্ঞতা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি

৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

সােবহানবাগ, ঢাকা 

প্রিয় মতি 

আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা গ্রহণ করিস। অনেকদিন হলাে তাের কোনাে চিঠি পাচ্ছি না। ক্যাডেট কলেজের বন্ধুদের পেয়ে আমার কথা কি ভুলে গেছিস? আজ তােকে লিখতে বসেছি এক ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শনের অভিজ্ঞতা জানাতে। গত মাঘী পূর্ণিমার ছুটিতে আমি আর সীমান্ত গিয়েছিলাম ঐতিহাসিক স্থাপত্য নিদর্শন লালবাগ কেল্লা দেখতে। ইতিহাসের বইয়ে শায়েস্তা খাঁর কথা পড়েছি। সেই শায়েস্তা খাঁর আমলে নির্মিত ঢাকার প্রায় চারশাে বছরের পুরানাে স্থাপনা এই লালবাগ কেল্লা। এর প্রাকৃতিক শােভা, প্রাচীন স্থাপত্য-সৌন্দর্যের কথা চিঠিতে লিখে পুরােপুরি তােকে বােঝাতে পারব না।

আমরা সেদিন সকালেই লালবাগের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলাম। পুরান ঢাকার লালবাগে এর অবস্থান। দর্শনার্থীদের জন্য ঢােকার প্রবেশ পথে টিকিট কাউন্টার। সেখানে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটলাম। ভিতরে প্রবেশ করার পর কয়েকজন বিদেশি দর্শনার্থীকে দেখলাম। ফটকের ভিতরে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছিল এক নয়নাভিরাম সৌন্দর্য। মুঘল স্থাপত্য, মসজিদ, উন্মুক্ত মাঠ, সুসজ্জিত ফুলের বাগান দেখে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিল। লালবাগ কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু ১৬৭৮ সালে। তকালীন মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের পুত্র সুবেদার আজম শাহ এই কেল্লার নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সুবেদার শায়েস্তা খাঁর আমলে এর মূল নির্মাণ সম্পন্ন হয়। লালবাগ কেল্লা মােঘল আমলের ঐতিহাসিক নিদর্শন। এটি তৈরিতে একই সাথে ব্যবহার করা হয়েছে কষ্টি পাথর, মার্বেল পাথর এবং রং-বেরঙের টালি। লালবাগ কেল্লার তিনটি বিশাল দরজার মধ্যে যে দরজাটি বর্তমানে জনসাধারণের জন্যে উন্মুক্ত করে দেওয়া আছে, সেই দরজা দিয়ে ঢুকলে বরাবর সােজা চোখে পড়ে পরি বিবির সমাধি। পরি বিবি ছিলেন শায়েস্তা খার অকালপ্রয়াত কন্যা। কেল্লার চত্বরে আরাে রয়েছে। কেন্দ্রস্থলের দরবার হল ও হাম্মামখানা, উত্তর-পশ্চিমাংশের তিন গম্বুজ বিশিষ্ট শাহি মসজিদ ও একটি জাদুঘর। দর্শনার্থীদের জন্য বসার জায়গা আছে। স্থাপনাগুলাে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী হয়ে এখনাে দাঁড়িয়ে আছে। 

আমাদের খুব ভালাে লেগেছে। সময় পেলে তুইও একবার দেখে আসিস বাংলার ইতিহাস-প্রসিদ্ধ লালবাগ কেল্লা। ভালাে থাকিস। 

ইতি

তাের বন্ধু

দীপ্র

ডাকে পাঠানাের জন্য খাম:

ডাকে পাঠানাের জন্য খাম