“এ সখি হামারি দুখের নাহি ওর।

এ ভরা বাদর মাহ ভাদর শূন্য মন্দির মোর।”

উত্তর : বিদ্যাপতি ছিলেন প্রকৃত সচেতন কবি। বর্ষা ও বসন্তকে নানাভাবে মিলন-বিরহের পটভূমি রূপে তিনি চিত্রিত করেছেন। বর্ষা-বিরহ চিত্রণে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব অসাধারণ। আলোচ্য অংশে আমরা দেখি যে, রাধা যেন বলছে তার দুঃখের শেষ নেই। এ ভরা বাদল, ভাদ্র মাস, কিন্তু রাধার গৃহ শূন্য। কারণ কৃষ্ণ মথুরায় চলে গেছে, সুতরাং রাধা অতিশয় বিরহ কাতরা। এরই মধ্যে এল দুরন্ত বর্ষা, ভরা ভাদরের বাদল, স্বভাবতই এ সময় প্রিয় মিলনের জন্য দেহমন আকুল হয়ে ওঠে। রাধার দেহমনও তাই আকুল। কৃষ্ণের অনুপস্থিতিতে তার বিরহ জ্বালা নিবারণের কোন উপায় নেই বলেই রাধা এখানে বলেছে যে তাঁর দুঃখের কোন সীমা নেই। চারদিকে কেঁপে মেঘ গর্জন করছে, ভুবন ভরে বর্ষণ চলছে। আর এমন আচ্ছন্ন নিবিড় পরিবেশে রাধা শূন্য শয়ন মন্দিরে পড়ে আছে, তার বিরহের সীমা পরিমাপের মধ্যে আসে না।

বর্ষা-বিরহের এমন চমৎকার বৈষ্ণব পদ দ্বিতীয়টি আর নেই।