এদের পরিচয়: কবি সুভাষ মুখােপাধ্যায়ের ‘মেঘের গায়ে জেলখানা’ রচনায় ‘এরা’ বলতে বক্সার জেলের নাবালক অপরাধীদের বােঝানাে হয়েছে। এরা কেউ ছিচকে চোর, কেউবা পকেটমার। ঠিকমতাে যত্ন বা পরিচর্যা পেলে এদের মধ্যে থেকেই কেউ হয়তাে ইঞ্জিনিয়ার, কেউ মাস্টার, কেউবা লেখক হতে পারত। এইসব বালকরা হয় অনাথ, না হয় কলকাতা শহরের ফুটপাথে বড়াে হয়েছে।
মুস্তাফার পরিচয় : মুস্তাফা ছিল বছর দশেকের ফুটফুটে একটি ছেলে। সে জেলখানায় এমন ভাবভঙ্গি করে ঘুরে বেড়াচ্ছিল, যেন পৃথিবীর কাউকে সে তােয়াক্কা করে না। এন্টালির কোনাে এক স্কুলে-পড়া মুস্তাফার বাবা ছিলেন রাজমিস্ত্রি। হঠাৎ একদিন তিনতলা সমান উঁচু বাঁশের ভারা থেকে পড়ে তিনি মারা গেলে বিধবা মা এবং বেশ কয়েকটি ভাইবােন নিয়ে অথই জলে পড়ে মুস্তাফা। মাইনে দিতে না পারায় স্কুল থেকে তার নাম কেটে দেওয়া হয়। তাদের বস্তির এক পকেটমার-সর্দার মুস্তাফাকে টাকার লােভ দেখিয়ে তার দলে নিয়ে নেয়। এভাবেই শুরু হয় তার পকেট কাটার পেশা। পকেটমার হিসেবে ধরা পড়ে ইতিপূর্বে সে বারচারেক জেলেও গেছে। ইস্কুলে যেতে ইচ্ছে করে কি না লেখকের এই প্রশ্নের উত্তরে বিজ্ঞের মতা সে জানায় যে, ‘ইচ্ছে করলেই কি যাওয়া যায়?’
Leave a comment