প্রশ্নঃ এজাহার ও নালিশের মধ্যে পার্থক্য লিখ।এজাহার ও নালিশের মধ্যে পার্থক্যঃ ফৌজদারী কার্যবিধির ১৫৪ ধারায় এজাহারের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, আদালত গ্ৰাহ্য অপরাধ সংঘটন ব্যাপারে প্রতিটি তথ্য, যদি থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসারের নিকট মৌখিকভাবে প্রদান করা হয়, তবে সে অফিসার কর্তৃক বা তঁর নির্দেশ মতে লিপিবদ্ধ করা হবে, তথ্য প্রদানকারীকে পড়ে শুনানো হবে এবং এরূপ তথ্য তা লিখিতভাবে প্রদত্ত হোক বা লিপিবদ্ধ করা হোক, তথ্য প্রদানকারী কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে এবং এর সার সংক্ষেপ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আকারে লিপিবদ্ধ করা হবে ।
এই কার্যবিধির ২ (এইচ) ধারায় নালিশের সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে। এখানে বলা হয়েছে যে, একজন লোক, পরিচিত হোক বা অপরিচিত হোক একটি অপরাধ সংঘটিত করেছে এই মর্মে ফৌজদারী কার্যবিধির আওতায় ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্দেশ্যে একজন ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট লিখিত বা মৌখিকভাবে অবহিত করলে তাকে নালিশ বলে। তবে, পুলিশ কর্মকর্তার রিপোর্ট এর অন্তর্ভূক্ত হবে না ।
উপরিউক্ত সংজ্ঞাগত পার্থক্য ছাড়াও নিম্নোক্ত পার্থক্যগুলি পরিলক্ষিত হয়;
১. এজাহার পেশ করতে হয় থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নিকট কিন্তু নালিশ পেশ করতে হয় ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ।
২. এজাহারকারী এজাহার দিবার সময় কোন শপথ বাক্য পাঠ করেন না। কিন্তু ম্যাজিষ্ট্রেটের নিকট নালিশ প্রদানকালে সত্য বলবে, মিথ্যা বলবে না এই মর্মে শপথ বাক্য পাঠ করবে।
৩. থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নির্ধারিত ফরমে এজাহার লিপিবদ্ধ করেন কিন্তু নালিশের মূল বক্তব্য ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্টের নোটশীটে লিপিবদ্ধ করেন।
৪. এজাহার পাবার পর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বর্ণিত অপরাধ সম্পর্কে তদন্ত করেন এবং তদন্তের রিপোর্ট পেশ করার পর চার্জ শীট প্রস্তুত করে আসামীসহ আদালতে দাখিল করেন।
নালিশের ক্ষেত্রে অপরাধের কগনিজেন্স নিয়ে আসামীর বিরুদ্ধে ‘সমন’ বা ওয়ারেন্ট জারী করতে পারেন।
৫. এজাহারের ভিত্তিতে তদন্ত করার পর যদি দেখা যায় যে, অপরাধীর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ নেই তবে অপরাধীর বিরুদ্ধে চার্জ শীট প্রদান না করে তদন্ত পুলিশ অফিসার চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করবেন।
পক্ষান্তরে, নালিশের ক্ষেত্রে আসামীর বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত সাক্ষ্য প্রমাণ না পাওয়া গেলে আসামীকে অব্যাহতি বা খালাস দেয়া হয়।
Leave a comment