অথবা, একজন সফল বা আদর্শ নেতার গুণাবলি বর্ণনা কর।
ভূমিকাঃ সামাজিক জীবনে নেতৃত্ব একটি পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত শব্দ। বিভিন্ন সামাজিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব সৃষ্টিকারী আচরণ পরিলক্ষিত হয়। যেমনঃ মা-বাবা ও শিশুর মধ্যে, শিক্ষক ও ছাত্রের মধ্যে, রাজনীতিবিদ ও তার অনুগামীদের মধ্যে, উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারীর মধ্যে। এককথায় দুই বা ততােধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত দলে একজন নেতার ভূমিকায় থাকেন যার আচরণ ও ক্রিয়াকলাপ অন্যের ওপর প্রভাব বিস্তার করে।
ফলপ্রসূ নেতার গুণাবলি বা বৈশিষ্ট্যসমূহঃ ফলপ্রসূ নেতৃত্বের জন্য যে সকল বৈশিষ্ট্য থাকা প্রয়ােজন তা নিচে বর্ণনা করা হলাে-
(১) সদস্য পদঃ ফলপ্রসূ নেতা হতে হলে নেতাকে সর্বপ্রথম সদস্য পদকে মুখ্য হিসেবে গণ্য করতে হবে। এ কারণে প্রবীণ সদস্য নেতৃত্বের ক্ষেত্রে ফলপ্রসূ হয়ে থাকে। প্রবীণ ব্যক্তি দলের সকল সদস্য সম্পর্কে মােটামুটি ধারণা রাখেন এবং অভিজ্ঞতার আলােকে নেতৃত্বদানে সফল হন।
(২) অনুগামীদের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে ধারণাঃ ফলপ্রসূ নেতৃত্বদানের জন্য নেতাকে তার অনুগামীদের আশা-আকাঙ্ক্ষা, মনােভাব, মূল্যবােধ, লক্ষ্য, আদর্শ, ব্যর্থতা, ইত্যাদি বিষয় সম্পর্কে গভীরভাবে জানতে হবে। অর্থাৎ নেতাকে দলের সাথে একাত্ম থাকা বাঞ্ছনীয়।
(৩) বাস্তবমুখী পরিকল্পনা প্রণয়নঃ ফলপ্রসূ নেতৃত্বদানের জন্য নেতাকে তার দলের লক্ষ্য ও চাহিদা অনুযায়ী বাস্তবমুখী পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। নেতাকে তার কর্মসূচি প্রণয়নে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
(8) দলীয় মনােবল সৃষ্টিঃ একজন, নেতার ফলপ্রসূতা তার দলীয় মনােবল সৃষ্টির মধ্যে নিহিত থাকে। দলীয় সদস্যদের কাজ এবং দলীয় লক্ষ্য ও স্বার্থ যাতে সর্বদা সঙ্গতিপূর্ণ থাকে সেদিকে সদা সতর্ক থাকতে হবে।
(৫) পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য বিধানঃ ফলপ্রসূ নেতাকে তার পরিস্থিতির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য ও তা পরিবর্তনের সাথে সামঞ্জম্য বিধানে দক্ষ হতে হবে। কোনাে কাজেই নেতা কঠোর হবেন না। প্রয়ােজন অনুযায়ী সাময়িকভাবে তিনি নীতির ব্যাপারে আপােস করবেন।
পরিশেষঃ ফলপ্রসূ নেতার বৈশিষ্ট্যাবলি অনেকটা আপেক্ষিক ব্যাপার। কারণ সকল নেতার ভেতর উপযুক্ত গুণাবলীসমূহ একত্রে উপস্থিত থাকা প্রায় ক্ষেত্রেই অসম্ভব। তবে সফলভাবে নেতৃত্ব দিতে হলে উক্ত গুণাবলীর কিছু অংশ উপস্থিত থাকা একান্ত আবশ্যক। সফলভাবে নেতৃত্ব দিতে হলে নেতাকে অবশ্যই বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হতে হবে।
Leave a comment