আলােচ্য মন্তব্যে খ্যাতনামা রুশদেশীয় চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইনের নাটকের রীতি সম্পর্কিত একটি লেখা পড়ার কথা বলা হয়েছে।
প্রাচীন নাটকের ধারা: শম্ভু মিত্র তাঁর ‘বিভাব’ নাটকের সূচনায় প্রাচীন বাংলা নাটক, উড়ে যাত্রা, মারাঠি তামাশা ইত্যাদি থেকে ভঙ্গিনির্ভর অভিনয় এবং দর্শকের কল্পনার উপর নির্ভরশীল নিজস্ব ধরন আবিষ্কারের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তার মনে এই সংশয়ও ছিল যে, শহরের ইংরেজি শিক্ষিত ও সাহেবি কেতায় অভ্যস্ত মানুষদের এই অভিনয়রীতি আদৌ ভালাে লাগবে কি না।
আইজেনস্টাইন প্রদত্ত বর্ণনা : এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ান চিত্রপরিচালক আইজেনস্টাইনের লেখায় উৎসাহিত হন তিনি। মস্কোতে অনুষ্ঠিত ভঙ্গিসর্বস্ব জাপানের কাবুকি থিয়েটারের অভিনয় দেখে আইজেনস্টাইন উচ্ছ্বসিত হয়ে ওঠেন। সেখানে এক ‘নাইট’ ক্ষুপ্ধ হয়ে দুর্গ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন এবং কতদূর চলে এলেন তা বােঝাতে তিনি স্টেজের পিছন দিক থেকে গম্ভীরভাবে এগােতে থাকেন আর শিফটাররা তাঁর ঠিক পিছনে মস্ত দুর্গদ্বার ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। নাইট এগােনাের সঙ্গেই এই দরজার মাপ ক্রমশ ছােটো হতে থাকে আর একই সাথে নাইটের দূরে চলে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিত রচিত হয়ে যায়। এই ভঙ্গিকে অবলম্বন করে কোনাে মৃত্যুদৃশ্য রচনাকেও আর্টিস্টিক করে তােলা হয়।
বক্তার ভরসার কারণ : এই লেখা শম্ভু মিত্রকে ভরসা দেয়, কারণ সাহেবরা এই ভঙ্গিনির্ভর নাট্যরীতিকে সমর্থন করায় ঔপনিবেশিকতায় বিশ্বাসী শহরে দর্শকরাও এই রীতিকে মেনে নেবেন বলে তিনি মনে করেন।
Leave a comment