জীবনকে উপলদ্ধির প্রয়াস: ‘বিভাব’ নাটকে নাট্যদলের সম্পাদকের নির্দেশে হাসির নাটকের উপকরণ খুঁজতে শম্ভু মিত্র সহ-অভিনেতা অমর গাঙ্গুলির বাড়িতে যান। সেখানে তৃপ্তি মিত্রের নির্দেশনায় ‘লভ সিন’ এবং ‘প্রগ্রেসিভ লভ সিন’-এর দৃশ্যের অবতারণা করেও যখন হাসি পায় না তখন তারা সিদ্ধান্ত নেন যে, ঘরের মধ্যে জীবনকে উপলব্ধি করা যাবে না। ‘হাসির খােরাক, পপুলার জিনিসের খােরাক’-এর জন্য চার দেয়ালের বাইরে বেরােতে হবে। রাস্তায়, মাঠে, ঘাটে গিয়ে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু কাল্পনিকভাবে রাস্তায় গিয়েও সেখানকার মােটরগাড়ি, বাস, হাত-রিকশা কিংবা চলন্ত ট্রামের মধ্যে হাসির উপকরণের খোঁজ মেলে না।

বক্তার অভিজ্ঞতা : হাসির উপাদান নিয়ে শম্ভু মিত্র এবং অমর গাঙ্গুলি যখন হতাশ সেই সময়েই রাস্তায় একটা মিছিল থেকে খাদ্য বস্ত্রের দাবিতে স্লোগান শােনা যায়। মিছিলের সামনে পুলিশ চলে আসে। তারা আন্দোলনকারীদের ফিরে যেতে বললেও তারা ফিরে যায় না। পুলিশের গুলি চলে। একটি ছেলে এবং একটি মেয়ে চিৎকার করে পড়ে যায়। হাহাকার আর গােঙানির শব্দের মধ্যেই পুলিশ চলে যায়। এতক্ষণ আড়াল থেকে এইসব দৃশ্য দেখার পরে শঙ্ভু মিত্র এবং অমর গাঙ্গুলি মঞ্চে প্রবেশ করেন। শম্ভু মিত্র তার হাসির নাটকের সন্ধান শেষ করেন এই বলে—”এবার নিশ্চয়ই লােকের খুব হাসি পাবে?” জীবনের নির্মম অভিজ্ঞতা এবং সস্তা জনপ্রিয়তার খোঁজে নাটকের প্রযােজনাকে এভাবেই তীব্র শ্লেষে বিদ্ধ করেন নাট্যকার।