প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও কলাকৌশলের দ্বারা লােহা ও ইস্পাত, তামা, অ্যালুমিনিয়াম প্রভৃতি ধাতব উপকরণ এবং রবার, প্লাস্টিক প্রভৃতি অধাতব উপকরণ দিয়ে ভারী অথবা হালকা, জটিল এবং সূক্ষ্ম কলকবজা, যন্ত্রপাতি, যন্ত্রাংশ তৈরি করা হয়। অধিকাংশ যন্ত্রপাতিকে বিদ্যুৎ, ব্যাটারি বা অন্য কোনােভাবে একবার চালু করলে সেগুলি স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলতে থাকে বা কাজ করতে থাকে। এ ধরনের কলকবজা, যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ তৈরি করাকে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প বলে। রেলইঞ্জিন, মােটরগাড়ি নির্মাণ প্রভৃতি ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ঘড়ি, সাইকেল, বৈদ্যুতিক পাখা ইত্যাদি হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের উদাহরণ।

ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প : যে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে বৃহদায়তন ও ভারী অথচ জটিল যন্ত্রপাতি তৈরি হয় তাকে ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প বলে। রেলইঞ্জিন, মােটরগাড়ি, এ্যারােপ্লেন, জাহাজ, কৃষি, খনি, লৌহ ও ইস্পাত, কার্পাস বয়ন, চিনি, সিমেন্ট, কাগজ, পেট্রো রাসায়নিক প্রভৃতি শিল্পের যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ভারী ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের অন্তর্গত।

হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প : যে প্রযুক্তিগত কৌশলের সাহায্যে ছােটো ছােটো অথচ জটিল, সূক্ষ্ম যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ তৈরি হয়, তাকে হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্প বলে। ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রপাতি (TV, কম্পিউটার, মােবাইল ফোন ইত্যাদি), ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি (পাখা, জেনারেটর, বাতানুকূল যন্ত্র, রেফ্রিজারেটর, বাল্ব ইত্যাদি), সেলাই মেশিন, সাইকেল, বল-বিয়ারিং, জরিপ করার যন্ত্রপাতি, ঘড়ি, টাইপরাইটার, টেলিস্কোপ ইত্যাদি হালকা ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের অন্তর্গত।

আধুনিক শিল্পসভ্যতার যুগে ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পের গুরুত্ব অপরিসীম। যেমন—

  • আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ফলে কৃষি ও শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন বহুগুণ বেড়েছে।

  • মানুষের ব্যবহার উপযােগী অসংখ্য উন্নতমানের ভােগ্যপণ্য উৎপাদিত হচ্ছে।

  • নতুন নতুন প্রাকৃতিক সম্পদের সন্ধান এবং সম্পদ আহরণে এবং সম্পদ বণ্টনের প্রতিবন্ধকতা দূর করা সম্ভব হয়েছে।

  • ইঞ্জিনিয়ারিং শিল্পে উন্নতির ফলে মানুষের জীবনে আরাম এসেছে, জীবনযাত্রার মান উন্নততর হয়েছে।

  • এই শিল্পের বিকাশ কর্মসংস্থানের সুযোেগ বৃদ্ধি করেছে।