উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন (Leading question): সাক্ষ্য আইনের ১৪১ ধারা অনুযায়ী প্রশ্নের যে উত্তর প্রশ্নকর্তা প্রত্যাশা করেন, প্রশ্নের মধ্যেই যদি তার ইঙ্গিত দেয়া হয় তবে সেই প্রশ্নকে ইঙ্গিতবাহী বা উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন বলে। শুধু ‘হাঁ’ বা ‘না’ বললেই উত্তর হয়ে যায়। যেমন, করিম বাদীর অধীনে চাকুরী করেন। এমতাবস্থায় তাকে যদি প্রশ্ন করা হয়, আপনি কোথায় চাকুরী করেন? এটা সাধারণ প্রশ্ন। কিন্তু যদি প্রশ্ন করা হয়, “আপনি কি বাদীর অধীনে চাকুরী করেন।” এটা উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন।
উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন কখন করা যায়ঃ সাক্ষ্য আইনের ১৪২ ধারা অনুযায়ী প্রতিপক্ষ যদি আপত্তি করে তাহলে আদালতের অনুমতি ব্যতীত সাক্ষীর জবানবন্দী কিংবা পুনঃজবানবন্দী গ্রহণের সময় উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন করা যাবে না। এই ধারার বিধান মোতাবেক নিম্নোক্ত ক্ষেত্রে উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন করা যায়-
(১) প্রতিপক্ষ আপত্তি না করলে, (২) আদালতের অনুমতি পেলে, (৩) মূল বিবেচ্য বিষয়ে যে প্রশ্ন ভূমিকা রাখবে বলে আদালতের নিকট প্রতীয়মান হলে, (৪) যে বিষয়টি বিতর্কিত নয় এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে, (৫) পূর্বেই যে বিষয় সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে সে বিষয় সম্পর্কে, (৬) কোন প্রশ্নের উত্তর সাক্ষীর স্মৃতিস্মরণে সাহায্য করার জন্যে, (৭) কোন বস্তু বা ব্যক্তিকে সনাক্ত করার জন্য, (৮) ১৪৩ ধারার বিধান মতে, জেরা করার সময়ে, (৯) সাক্ষী বৈরী হলে বা বিরুদ্ধ পক্ষে গেলে।
জেরাতে উত্তর নির্দেশক প্রশ্ন করা গেলেও জড়ানো প্রশ্ন করা নিষেধ।
উদাহরণঃ সাক্ষী করিমকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, “আপনি গত মাসের ১৫ তারিখে ঢাকা স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়ে হাফিজ ও হেলালকে দেখেছিলেন?” এখানে দুটি প্রশ্ন জড়িত রয়েছে। প্রথম প্রশ্ন করিম গত মাসের ১৫ তারিখে ঢাকা স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলা দেখতে গিয়েছিল কি-না। দ্বিতীয় প্রশ্ন সেখানে হাফিজ ও হেলালকে দেখেছিল কি-না, এ দুটি প্রশ্ন একসাথে করা যাবে না।
Leave a comment