সত্যেন্দ্রনাথ বসুর গালিলিও প্রবন্ধে আমরা দেখি যে, গালিলিও অধ্যাপনার চাকরি নিয়ে ভেনিসের পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে যােগ দেওয়ার পর সেখানকার প্রতিরক্ষা বিষয়ের পরামর্শদাতা হিসাবে এবং দূরবিনের আবিষ্কারক হিসাবেও তাঁর খ্যাতি চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এই সময় নানাপ্রকার ব্যস্ততার জন্য বৈজ্ঞানিক পরীক্ষানিরীক্ষার ক্ষেত্রে তার উপযুক্ত অবসর মিলছিল না। আবার নিজের এবং বিরাট সংসারের ভরণ-পােষণের জন্য প্রচুর অর্থেরও দরকার ছিল তাঁর। একারণেই ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে তাস্কানীর বৃদ্ধ ডিউকের মৃত্যুর পর গালিলিওর প্রিয় ছাত্র কসমাে গ্র্যান্ড ডিউক হলে স্বদেশে ফিরে আসতে সচেষ্ট হন গালিলিও। তিনি ভাবেন যে, নিজ দেশে এবং তাঁর প্রিয় শহর ফ্লোরেন্সে যদি তিনি ছাত্র ডিউকের ছত্রছায়ায় থাকতে পারেন, তবেই তিনি তার কাঙ্ক্ষিত অবসর পাবেন এবং অর্থচিন্তাও তাঁর আর থাকবে না। এইসময় ভেনিস নগররাষ্ট্র থেকে ফ্লোরেন্সে এক বন্ধুকে গালিলিও লিখেছিলেন যে, প্রতিদিন নানাপ্রকার আবিষ্কার তিনি করছেন—অবকাশ ও সহায়তা পেলে অনেক বেশি পরীক্ষানিরীক্ষা ও আবিষ্কার তিনি করতে পারবেন।

১৬১০ খ্রিস্টাব্দের শরৎকালে তাস্কানীর গ্র্যান্ড ডিউক তাঁর ভূতপূর্ব গুরুকে বার্ষিক ১০০০ scudi বেতন দিয়ে আশ্রয়দান করেন। তাস্কানী রাজসভার পণ্ডিত এবং দার্শনিক হিসেবে সোনার পদকে সম্মানিতও করা হয় গালিলিও-কে। দীর্ঘ ১৮ বছর পরে সম্মানের সঙ্গে এভাবেই স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করেন গালিলিও।

সত্যেন্দ্রনাথ বসুর গালিলিও প্রবন্ধে দেখা যায়, ১৬১১ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশে ফিরে আসার পর গালিলিও জ্যোতির্বিজ্ঞান নিয়ে এমন অনেক নতুন কথা প্রকাশ করলেন, যা পণ্ডিতমহলে সাড়া ফেলে দিল। এসময় টলেমির ভূকেন্দ্রিক বিশ্ব মতবাদের বিরুদ্ধে এবং কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ব মতবাদের সপক্ষে তিনি একটি বই রচনা ও প্রকাশ করেন। বই প্রকাশের পর সনাতনীরা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বহু ছাত্র ও অধ্যাপক তাঁর বিরুদ্ধতা করতে শুরু করেন। ফ্লোরেন্স ও পিসার ডােমিনিকান সম্প্রদায়ের ধর্মযাজকরা প্রচার করতে শুরু করেন যে, গালিলিওর অধ্যাপনা ধর্মানুরাগের বিপক্ষে, এমনকি তা বাইবেলের অনেক কথারও বিরােধী। তাদের অভিযােগের ভিত্তিতেই ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে রােম নগরীর ধর্মসভায় তাঁর ডাক পড়ে। সেই ধর্মসভার অধ্যক্ষরা তাঁকে এই প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ করে যে, তিনি ভবিষ্যতে কখনও ধর্মবিরােধী মত মুখে আনবেন না। দীর্ঘদিন বিতর্কিত মতামত থেকে দূরে থাকার পর অবশেষে তিনি তিনটি চরিত্রের কথােপকথনের আদলে টলেমি ও কোপারনিকাসের বিশ্ব মতবাদের আলােচনা করে একটি গ্রন্থ রচনা করেন। সেই গ্রন্থের জন্যই পরবর্তীকালে ক্যাথলিক ধর্মসম্প্রদায়ের অধ্যক্ষদের নির্দেশে, তাঁর জীবনের শেষ ন-টা বছর (১৬৩৩-১৬৪২ খ্রিস্টাব্দ) চরম দুঃখ কষ্টের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত হয়।

১৬১১ খ্রিস্টাব্দে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর গালিলিও র নিত্যনতুন আবিষ্কার ও মতবাদ একটা বিশেষ কারণে কেবল পণ্ডিত-মহলের মধ্যেই আবদ্ধ থাকল না। কারণটা ছিল, দেশের আপামর জনসাধারণের কাছে নিজের পরীক্ষালব্ধ বক্তব্য বা দর্শনকে তুলে ধরার জন্য লাতিনের পরিবর্তে মাতৃভাষা ইটালিয়ান-কেই তিনি সেইসময় গ্রহণ করেছিলেন।

তাসকানী সহ সমগ্র ইতালির সব সাক্ষর মানুষ যাতে তাঁর চিন্তাভাবনা, মতামত ও আবিষ্কারগুলি পড়তে বা শুনতে পারে, তার উদ্দেশ্যেই গালিলিও এই বৈপ্লবিক সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। ১৬১২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসে কটা চিঠিতে তিনি জানিয়েছিলেন যে, তার দেশের যুবকরা যে-কোনাে একটা খেতাব পাওয়ার জন্যই ডাক্তার বা দার্শনিক বা অন্য কিছু হতে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ করে। তারপর এমন পেশা তারা গ্রহণ করে, যে পেশায় তারা একেবারেই অদক্ষ। অন্যদিকে, অন্য পেশায় নিযুক্ত মানুষেরা লাতিন ভাষা না। বােঝার জন্যও জ্ঞানচর্চা থেকে সরে থাকতে বাধ্য হন। এইসব হতভাগ্য, উপযুক্ত মানুষরা সারাজীবন ধরে এই ধারণা নিয়ে চলেন। যে, বিশাল আকারের মহামূল্যবান বইগুলি, যেগুলি প্রকৃতপক্ষে জ্ঞানের ভাণ্ডার, তা তাদের কাছে সম্পূর্ণভাবেই অজানা হয়ে থাকবে। গালিলিও তাদের মধ্যে এই যথার্থ জ্ঞানের উন্মেষ ঘটাতে চেয়েছিলেন।

বিশ্বের জ্ঞানবিজ্ঞানকে কয়েকজন পণ্ডিতের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, দেশের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্যই সেই যুগে দাঁড়িয়েও গালিলিও সাধুভাষা ল্যাটিনের পরিবর্তে সর্বজনবােধ্য ইটালিয়ান ভাষাকেই তাঁর গ্রন্থ রচনার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

প্রখ্যাত বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসুর ‘গালিলিও’ প্রবন্ধে আমরা দেখি যে, ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দের ১২ এপ্রিল পােপের নির্দেশে গালিলিও রােমে উপস্থিত হলে, সেই তারিখেই তিনি কারারুদ্ধ হন এবং বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করাও নিষিদ্ধ হয়ে যায় তার। ৩০ এপ্রিল গালিলিওকে দিয়ে স্বীকার করিয়ে নেওয়া হয় যে, তাঁর লেখা বইতে কথােপকথনের ছলে তিনি যা-কিছু লিখেছেন, তা সমস্তই তাঁর অসতর্কতা, বৃথা অহংকার এবং অজ্ঞতার দৃষ্টান্ত। রােম শহরের ধর্মাধ্যক্ষরা গালিলিওকে বলতে বাধ্য করেন যে, তিনি কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক বিশ্ববিন্যাস মতবাদে আর বিশ্বাসী নন। বিচারকরা তাঁকে জানায় যে, তার ভুল দেশের ভয়ংকর ক্ষতি করায় একদিকে যেমন তার বই নিষিদ্ধ বলে ঘােষিত হবে, অন্যদিকে বিচারপতিরা যতদিন চাইবেন তাকে কারারুদ্ধ থাকতে হবে। কারাবাসের প্রথম তিন বছর ধরে প্রতি সপ্তাহেই তাকে অনুশােচনা-প্রকাশক প্রার্থনা করতে হবে। এই ঘটনার দুদিন পরেই অবশ্য রােমের বিচারপতিরা গালিলিওকে ফ্লোরেন্সের দূতাবাসে পাঠান। সেখান থেকে প্রথমে সিয়েনা (Siana) র আর্চবিশপ (প্রধান যাজক)-এর গৃহে, পরে ফ্লোরেন্স শহরের উপকণ্ঠে গালিলিওর নিজের বাড়িতেই তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়।

এইসময়ও জীবন গালিলিওর কাছে একেবারে তিক্ত হয়ে উঠেছিল। যে মেয়ে তার সেবাযত্ন করত, সেই মেয়েটিও ইতিমধ্যে মারা যায়। শেষ পাঁচ বছর পােপের করুণায় বিধিনিষেধের হাত থেকে প্রায়ান্ধ গালিলিও কিছুটা মুক্তি পান। অবশেষে ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দের ৮ জানুয়ারি আটাত্তর বছর বয়সে এই মহান বিজ্ঞানীর জীবনাবসান ঘটে।

“কী ধপাৎ করেই জাহাজের উপর পড়ল।” -এরপর কী হল?

সুয়েজখালে : হাঙ্গর শিকার রচনাটিতে হাঙরটিকে জাহাজের উপরে তােলার দৃশ্যটি বর্ণনা করাে।

“আগে যান ভগীরথ শঙ্খ বাজাইয়ে, পাছু পাছু যান গঙ্গা…” -মন্তব্যটির পৌরাণিক প্রসঙ্গ উল্লেখ করে কাহিনিতে এর উল্লেখের প্রাসঙ্গিকতা বিচার করাে।

“জাহাজে খালাসী বেচারাদের আপদ আর কি!” প্রসঙ্গ উল্লেখ করে জাহাজের খালাসীদের বেচারা বলার কারণ লেখাে।

“স্বর্গে ইঁদুর বাহন প্লেগ পাছে ওঠে, তাই এত আয়ােজন।” -উদ্ধৃত অংশটির মধ্য দিয়ে লেখক কী বলতে চেয়েছেন?

“গতস্য শােচনা নাস্তি” -কথাটির আক্ষরিক অর্থ উল্লেখ করে সপ্রসঙ্গ মন্তব্যটির যথার্থতা বিচার করাে।

“যাক, ওটা কেটে দাও, জলে পড়ুক, বােঝা কমুক;…।” ঘটনাটি সংক্ষেপে লিখে হাঙর শিকারের ক্ষেত্রে নৃশংসতার প্রসঙ্গটি বিবৃত করাে।

স্বামী বিবেকানন্দের সুয়েজখালে :হাঙ্গর শিকার রচনা অবলম্বনে জাহাজযাত্রীদের হাঙর শিকারের প্রস্তুতির বিবরণ দাও।

“আড়কাটী মাছকে উপযুক্ত শিক্ষা দিলে কিনা তা খবর পাইনি…।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে ঘটনাটির বর্ণনা দাও। আড়কাটী মাছ’-এর সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দাও।

“কাজেই রাতেও যাওয়া হবে না, চব্বিশ ঘণ্টা এইখানে পড়ে থাকো…।” -রাতে না গিয়ে চব্বিশ ঘণ্টা পড়ে থাকার কারণ বিশ্লেষণ করাে।

সুয়েজখালে :হাঙ্গর শিকার রচনায় জাহাজের যাত্রীদের সঙ্গে মিশরীয় অধিবাসীদের যাতে কোনাে ছোঁয়াছুঁয়ি না হয়, তার জন্য কী কী সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল?

হাকাহাকির চোটে আরব মিঞা চোখ মুছতে মুছতে উঠে দাঁড়ালেন। আরব মিঞার কর্মতৎপরতার পরিচয় দাও।

ভারতের বাণিজ্যকে লেখক মানব-জাতির উন্নতির সম্ভবত সর্বপ্রধান কারণ বলেছেন কেন?

“এ কথা ইউরােপীয়েরা স্বীকার করতে চায় না;” -কোন কথা ইউরােপীয়রা স্বীকার করতে চায় না এবং কেন?

“জাহাজের পেছনে বড়াে বড়াে হাঙ্গর ভেসে ভেসে বেড়াচ্ছে।” -লেখকের অনুসরণে হাঙরের সেই ভেসে ভেসে বেড়ানাের দৃশ্য নিজের ভাষায় বর্ণনা করাে।

সুয়েজখালে জাহাজ পারাপারের ব্যবস্থা বর্ণনা করাে।

ভারতের শ্রমজীবী সম্পর্কে লেখকের মনােভাব ব্যাখ্যা করাে।

“যাঃ, টোপ খুলে গেল! হাঙ্গর পালালাে।” -টোপ খুলে হাঙর কীভাবে পালিয়েছিল তা রচনা অবলম্বনে লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিও-র চরিত্রের প্রতিবাদী সত্তার পরিচয় দাও।

গ্যালিলিও প্রবন্ধে বিজ্ঞানী সত্যেন্দ্রনাথ বসু গালিলিওর আপসকামী মনােভাবের যে পরিচয় দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বন করে গালিলিওর জন্মস্থান পিসায় অতিবাহিত হওয়া তার ছেলেবেলার পরিচয় দাও।

“গণিতের অধ্যয়নবাসনাই প্রবল হয়ে উঠল।” -প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলাে কীভাবে গালিলিওর গণিতের অধ্যয়ন- বাসনা প্রবল হয়ে উঠেছিল?

প্রথম যৌবনে স্বদেশে থাকাকালীন সংসার চালানাের জন্য কীভাবে লড়াই করতে হয়েছিল গালিলিও-কে, তা গালিলিও প্রবন্ধ অবলম্বনে লেখাে।

‘গালিলিও’ প্রবন্ধ অবলম্বনে ভেনিস রাষ্ট্র এবং পাড়ুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গালিলিও-র আঠারাে বছরের কর্মজীবনের বিবরণ দাও।

দূরবিনের আবিষ্কার ভেনিসনিবাসী গালিলিওর জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

“এখানেই শুরু হল তাঁর প্রকৃত বিজ্ঞানীর জীবন।” -প্রকৃত বিজ্ঞানীর’ সেই জীবন বর্ণনা করাে।