জলসেচের সাহায্য ছাড়া নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণ বৃষ্টিপাতের (150 সেমির বেশি) ওপর নির্ভর করে যে কৃষিকাজ করা হয়, তাকে আর্দ্র কৃষি বলে।

আর্দ্র কৃষির অবস্থান

উভয় গােলার্ধে 10° অক্ষাংশ থেকে প্রায় 25° অক্ষাংশের মধ্যে মৌসুমি জলবায়ুর প্রভাবান্বিত দেশগুলিতে আর্দ্র কৃষি পরিলক্ষিত হয়। তবে ভারত, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এই পদ্ধতিতে কৃষিকাজ প্রায় 30° উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত।

আর্দ্র কৃষির সর্বাধিক প্রভাব লক্ষ করা যায় এশিয়া মহাদেশের পূর্বপ্রান্তে অবস্থিত ক্রান্তীয় অঞ্চলের দেশগুলিতে যেমন一

  • [1] ভারত, 

  • [2] বাংলাদেশ, 

  • [3] মায়ানমার, 

  • [4] থাইল্যান্ড, 

  • [5] ভিয়েতনাম প্রভৃতি দেশে। 

এ ছাড়া আফ্রিকা মহাদেশের পূর্ব উপকূলে, উত্তর আমেরিকা মহাদেশের আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা উপকূলে এবং দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিলের পূর্ব উপকূলে এই পদ্ধতিতে কৃষিকাজ দেখা যায়।

কৃষিকাজের ভৌগােলিক পরিবেশ : পাহাড়ি এলাকার প্রতিবাত ঢালে, মালভূমি অঞ্চলে মালভূমির ঢাল এবং সমতল শীর্ষদেশ বরাবর, সমতলভূমিতে নদী বা খাল থেকে দূরে যেখানে জলসেচের সুযােগ নেই এমন জমিতে আর্দ্র কৃষি দেখা যায়। নিরক্ষীয় ও মৌসুমি জলবায়ু অঞ্চলে এই পদ্ধতিতে অধিক কৃষিকাজ হয়।

কৃষিজমির আয়তন : উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আর্দ্র কৃষির অন্তর্গত জোতগুলি ছােটো।

উৎপন্ন ফসল : ধান, পাট, আখ প্রভৃতি আর্দ্র কৃষির ফসল।

মূলধন : জলসেচের জন্য খরচের সুযােগ নেই। তাই কৃষিপণ্যের উৎপাদন ব্যয় কম। ফলে মূলধন বিনিয়ােগের পরিমাণ সীমিত।

শ্রমিকের জোগান : কৃষক নিজের প্রয়ােজন মেটানাের জন্য এই ধরনের কৃষিতে যােগ দেয়। কৃষকের দক্ষতা পরিবেশ নিয়ন্ত্রিত।

উৎপাদন : কৃষকরা অনেকক্ষেত্রে অসংগঠিত হওয়ায় ফলনের হার খুবই কম। কৃষিপণ্যের মােট উৎপাদনও বেশ কম।