আয়রন ধাতু নিষ্কাশনের জন্য প্রথমে আয়রনের আকরিক সংগ্রহ করে ধুলাবালি, কাদামাটি পরিষ্কার করা হয়। এরপর আয়রনের আকরিককে অক্সিজেনে দহন করে আয়রনের অক্সাইডে পরিনত করা হয়। এরপর আয়রনের আকরিকের সাথে চুনাপাথর ( CaCO₃), কোক কার্বন মিশ্রিত করে বাত্যাচুল্লিতে হপারের মাধ্যমে প্রবেশ করানো হয়। বাত্যাচুল্লির নিচের অংশ দিয়ে গরম বাতাস প্রবেশ করানোর ব্যবস্থা থাকে। বার্তা চুল্লির তিনটি অংশ থাকে একটি উপরের অংশ বা স্টক কলাম। এর তাপমাত্রা 450 থেকে 500 ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত হয়। 

দ্বিতীয় অংশ চুল্লি মধ্যভাগ। এখানে তাপমাত্রা থাকে 900 ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে 1000 ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। 

তৃতীয় অংশ নিচের অংশ। এখানে তাপমাত্রা থাকে প্রায় 1300 ডিগ্রী সেলসিয়াস।

১. বার্তা চুল্লির উপরের অংশ বা স্টক কলামে 450 থেকে 500 ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংঘটিত বিক্রিয়া সমূহঃ

 এখানে প্রথমে চুল্লির মুখ দিয়ে যে কোক কার্বন প্রবেশ করানো হয় তা চুল্লির নিচের দিকে পড়তে থাকে এবং চুল্লির নিচের অংশ দিয়ে যে গরম বাতাস প্রবেশ করানো হয় তা উপরের দিকে উঠতে থাকে। এই গরম বাতাসের অক্সিজেনের সাথে ঐ কোক কার্বন বিক্রিয়া করে কার্বন-মনোক্সাইড (CO) উৎপন্ন করে। পরে আয়রনের অক্সাইড এর সঙ্গে এই কার্বন-মনোক্সাইড বিক্রিয়া করে গলিত আয়রন উৎপন্ন করে। চুল্লির স্টক কলামে আয়রন তৈরি হয়।

C + O₂ ——>CO₂ + C ——-> 2CO
Fe₂O₃+ 3CO ——>2Fe (l) +3CO₂
Fe₃O₄+4CO ——> 3Fe (l)+ 4CO₂
২. বাত্যাচুল্লির মধ্যভাগ 900 থেকে 1000 ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংঘটিত বিক্রিয়া সমুহঃ

এ তাপমাত্রায় চুনাপাথর ভেঙ্গে ক্যালসিয়াম অক্সাইড ও কার্বন-ডাই-অক্সাইড পরিণত হয়। এই ক্যালসিয়াম অক্সাইড আয়রন এর মধ্যে থাকা সিলিকা এর সাথে ক্যালসিয়াম সিলিকেট ধাতুমল গঠন করে।
 

CaCO₃ ———> CaO + CO₂
CaO + SiO₂ ——–> CaSiO₃

 

৩. বাত্যাচুল্লির নিচের অংশ 1300 ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় সংঘটিত বিক্রিয়াসমূহঃ

এ তাপমাত্রায় আয়রনের আকরিকের মধ্যে আরও যেসব অপদ্রব্য থাকে সেগুলো ধাতুমল আকারে অপসারিত হয়।

Ca₃(PO₄)₂ ——-> 3CaO + P₂O₅
 

P₂O₅ + 5C ——–> 2P + 5CO
Mn₂O₃ + 3C ——-> 2Mn + 3CO
MnO₂ + 2C ——-> Mn + 2CO
SiO₂ + 2C ——-> Si + 2CO

CaO + SiO₂ ——–> CaSiO₃ .